সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ফোনে আড়িপাতার অসাংবিধানিক চর্চা এবার থামুক

আমাদের সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের সদ্য প্রকাশিত এক রায়ে বলা হয়েছে যে সংবিধানের ৪৪ অনুচ্ছেদে নাগরিকদের ব্যক্তিগত ও অন্যান্য যোগাযোগ মাধ্যমে গোপনীয়তার অধিকারের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে। এটি কোনো স্বার্থবাদী গোষ্ঠীর জন্য সহজেই লঙ্ঘন করা যাবে না। হাইকোর্টের তিনজন বিচারপতির একটি বৃহত্তর বেঞ্চের দেওয়া ওই রায়ে অভিমত এসেছে যে সরকারি-বেসরকারি মুঠোফোন অপারেটর কোম্পানি থেকে আনুষ্ঠানিক লিখিত চাহিদা ছাড়া এবং গ্রাহককে অবহিত না করে কললিস্ট বা কল রেকর্ড (কথোপকথন) সংগ্রহ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত। হাইকোর্টের এই রায় নি:সন্দেহে ব্যাক্তিগত গোপনীয়তার নাগরিক অধিকার সুরক্ষায় একটি গুরুত্বর্পূণ ও আশা জাগানিয়া পদক্ষেপ।

সংবাদপত্রের খবরে রায়ের এই অংশকে পর্যবেক্ষণ হিসাবে বর্ণনা করা হলেও প্রকাশিত রায়ে তা যেভাবে বলা হয়েছে, তাকে সাধারণভাবে আমরা যেগুলোকে আদালতের পর্যবেক্ষণ বলে জানি, সেরকমটি বলা যাবে না। আদালত আলাদা করে কোনো পর্যবেক্ষণ দেন নি। রায়ের মধ্যেই কথাগুলো বলেছেন। সুতরাং, একে আদালতের আদেশ হিসাবে গণ্য করাই যৌক্তিক বলে মনে করা চলে। বিচারপতিরা লিখেছেন যোগাযোগের গোপনীয়তা রক্ষায় সাংবিধানিক অঙ্গীকার (ম্যান্ডেট) যথাযথ বাস্তবায়নে বিটিআরসি ও ফোন অপারেটর কোম্পানিগুলোর একটি বড় দায়িত্ব রয়েছে।

রায়ে তাঁরা বলেছেন অডিও-ভিডিওসহ নাগরিকদের মধ্যে ব্যক্তিগত যোগাযোগ প্রায়ই ফাঁস হয় এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন উদ্দেশ্যে এসব প্রকাশিত হয়, যা এখনকার সাধারণ অভিজ্ঞতা। রায়ে তাঁরা স্পষ্ট করে বলেছেন বিটিআরসি এবং ফোন কোম্পানিগুলো তাঁদের গ্রাহক এবং দেশের নাগরিকদের মধ্যেকার যোগাযোগের কোনো তথ্যে আইনে অনুমোদিত না হলে কাউকে দিতে পারেন না। তাঁদের কথায় আইনটিও সংবিধানের সঙ্গে সঙ্গতির্পূণ হতে হবে। তাঁরা সাক্ষ্য আইন সংশোধন প্রয়োজন বলেও অভিমত দিয়েছেন। রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে যে শুধুমাত্র সন্ত্রাস দমন আইন ২০০৯ এ সন্ত্রাসী বাক্তি বা কোনো সত্ত্বার ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমের আলোচনা বা সংলাপের রেকর্ড সংগ্রহ করা হলে তাকে স্বাক্ষ্য হিসাবে বৈধতা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, অন্যান্য আইনগুলোতে এবিষয়ে অসর্ম্পূণতা আছে।

কোনো নির্দিষ্ট তদন্ত বা অনুসন্ধানে নিয়োজিত তদন্তকারী কর্মকর্তা কারও যোগাযোগের বিষয়ে বা ফোনকলের তালিকা চাইলে, তাকে তদন্তকাজে তার প্রয়োজনীয়তার কারণ জানিয়ে কোম্পানি বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অনুরোধ জানাতে হবে। শিকারের সন্ধানে লিখিত অনুরোধ ছাড়া তা করা যাবে না। সেটা কেবল তখনই করা যাবে যখন তা গ্রাহককে জানিয়ে করা হবে।  রায়ে বলা হয়েছে, এর অন্যথা হলে সংগৃহীত নথি বা প্রমাণ আইনের চোখে স্বাক্ষ্য হিসাবে তার কোনো মূল্য থাকবে না। যে ব্যাক্তি বা কর্তৃপক্ষ এধরণের তথ্য-যোগাযোগের বিবরণ সরবরাহ করবেন তিনি বা তাঁরা সংবিধান প্রদত্ত মৌলিক অধিকার লংঘনে সহায়তার জন্য দায়ী হবেন।  

তিনজন বিচারপতিই এই রায়ে পুরোপুরি একমত হয়েছেন এবং কোনোধরণের ভিন্নমত দেন নি। মাশরাটির লিখিত রায় প্রকাশিত হয়েছে গত ২৯ সেপ্টেম্বর। মূল রায়টি ঘোষিত হয়েছিল ঠিক ১৩ মাস আগে ২০১৯ সালের ২৮ আগস্ট। এই ১৩ মাসে ঠিক কতজনের টেলিফোনের গোপনীয়তা রংঘন হয়েছে তা হয়তো আমরা কোনোদিনই জানতে পারবো না।  কিন্তু, কিছু যে হয়েছে, সেটা আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারি। যাঁদের টেলিকথন সামাজিক মাধ্যমে ফাঁস করা হয়েছে, তাঁরা যে তা জানতেন না সেটাও মোটামুটি নিশ্চিত করে বলা যায়। পুলিশ হয়তো কললিস্ট ও টেলিকথনের সূত্র ধরে কিছু গুরুতর অপরাধের সন্দেহভাজনকেও আটক করেছে। কিন্তু, এই রায়ের পর সেগুলো যে সাক্ষ্য হিসাবে আদালতের কাছে মূল্যহীন হয়ে গেছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। ফলে, বিচারপতিরা যে শিশু সৈকত হত্যা মামলার রায়ে এই সিদ্ধান্ত দিয়েছেন সেই সৈকতের পিতা সিদ্দিকুর রহমানের মতোই দূর্ভাগ্যজনকভাবে অন্য অনেক অপরাধের ভুক্তভোগীই হয়তো ন্যয়বিচার থেকে বঞ্চিত হবেন। 

গত ১৩ মাসে বেআইনীভাবে যাঁদের টেলিকথনের রেকর্ড ফাঁস হয়েছে তাঁদের মধ্যে রাজনৈতিক হয়রানির শিকার ব্যাক্তিও আছেন। উদাহরণ হিসাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ, ডাকসুর সহসভাপতি নুরুল হকের কথা এখানে উল্লেখ করা যায়। নুরুল ব্যবসা করার সম্ভাবনা নিয়ে তাঁর সুহৃদ কোন একজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে টাকাপয়সার বিষয় নিয়ে যে আলাপ করেছেন, তার একটি অডিও ফাইল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যপকভাবে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এখানে উদ্দেশ্যটা যে রাজনৈতিক, সেকথা বলার অপেক্ষা রাখে না। আর, গত এক দশকে এরকম কত টেলিকথন যে ফাঁস হয়েছে তার তালিকা প্রকাশ করতে গেলে সম্ভবত একটি পূর্ণাঙ্গ বই রচনা করতে হবে।

 

প্রাসঙ্গিক কারণে এখানে আরও দুয়েকটা নজির তুলে না ধরলেই নয়। ভিপি নুরুলের কপাল অপেক্ষাকৃত ভালো যে তাঁর পরিণতি তাঁর র্পুবসুরিদের একজন মাহমুদুর রহমান মান্নার মতো হয়নি। মান্নাকে ওই টেলিকথনের জন্য রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় বছরখানেকের বেশি বিনাবিচারে লাল দালানের ভাত খেতে হয়েছে। আদালত তখন তাঁকে তাঁর সংবিধানপ্রদত্ত ব্যাক্তিগত গোপনীয়তার নাগরিক অধিকারের সুরক্ষা দিতে পারেনি। বিএনপি নেতাদের টেলিসংলাপ কিম্বা সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও নিউ নেশন পত্রিকার সম্পাদক মইনুল হোসেনের ঘটনাও সবার সহজে ভুলে যাওয়ার কথা নয়। তবে, সবচেয়ে আলোড়ন জাগানো টেলিকথন ফাঁসের রহস্য কিন্তু আজও উদঘাটিত হয়নি। যেটি অন্তত রাষ্ট্রীয় গুরুত্বের বিচারে বিশেষভাবে বিবেচ্য। মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইবুনালের সাবেক চেয়ারম্যান অবসরে যাওয়া বিচারপতি নিজামুল হকের টেলিফোনসংলাপ।  

 

বাংলাদেশে টেলিফোনে আড়িপাতার প্রযুক্তি ব্যবহারের সক্ষমতা সরকারের বিভিন্ন নিরাপত্তা সংস্থার বাইরে অন্য কারো কাছে থাকার কথা নয়। আর, সরকারের পক্ষ থেকে যেমন নিরাপত্তার অজুহাতে এবিষয়ে কোনো স্বচ্ছ্তা নেই, ঠিক তেমনই বেসরকারি কোনো সংস্থা বা কোনো নাগরিক সংগঠনও বিষয়টি নিয়ে খুব একটা সক্রিয় নয়। এসব বিষয়ে যা তথ্য মেলে, তার উৎস প্রধানত বিদেশি সংবাদমাধ্যম ও প্রকাশনা। ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা প্রতিষ্ঠান ফ্রিডম হাউস এর প্রকাশনা ফ্রিডম অন দ্য নেটে বাংলাদেশের আইন এবং প্রযুক্তি ও সরঞ্জাম সংগ্রহের কিছু চিত্র তুলে ধরা হয়। ওই প্রকাশনা অনুযায়ী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার ( এনটিএমসি) কে সরকার আদালতের আদেশ ছাড়াই নাগরিকদের টেলিযোগাযোগের বিশদ সংগ্রহের আইনগত অধিকার দিয়েছে। ২০০১ সালে টেলিযোগাযোগ আইনে ২০১০ সালে একটি সংশোধনী আনার মাধ্যমে কোম্পানিগুলোর ওপর সব টেলিফোন কলের ডাটা অনির্দিষ্টকালের জন্য সংরক্ষণের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে। সংস্থাটি ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রযুক্তি ও সরঞ্জাম সংগ্রহে তৎপর ছিল এবং রিপোর্টটিতে সেসময়ে আড়াই কোটি ডলার সম্ভাব্য ব্যয়ের কথা বলা হয়েছিল। সুইজারল্যান্ড, চীন, জার্মানি ও যুক্তরাজ্য থেকে যেসব প্রযুক্তি সংগ্রহের চেষ্টা করা হচ্ছিলো তার বিবরণও এতে তুলে ধরা হয়। তবে, শেষপর্যন্ত কী কী সংগৃহীত হয়েছে তা এখনও অজানা।

 

ব্রিটেনের বেসরকারি সংস্থা, প্রাইভেসি ইন্টারন্যাশনালও নানা দেশে কীভাবে ব্যাক্তির গোপনীয়তার অধিকার ক্ষুণ্ন হচ্ছে তারে ওপর নজর রাখে। তাদের প্রকাশনাতেও বাংলাদেশে যুক্তরাজ্য থেকে প্রযুক্তি সংগ্রহের কথা আছে। আর, ২০১৯ সালে ইজরায়েলী প্রতিষ্ঠান এনএসওর বিরুদ্ধে হোয়াটসঅ্যাপের দায়ের করা মামলাসূত্রে জানা যায় বিশ্বের ৪৫ টি দেশে ৩৩টি গ্রাহকের হয়ে তাদের তৈরি পেগাসাস সফটওয়্যার ১৪০০র বেশি মানুষের গোপনীয়তা লংঘন করেছে। সংযুক্ত আরব আমীরাতে শীর্ষ ভিন্নমতাবলম্বী আহমেদ মনসুরের হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাকিংয়ের কথা তখন বেশ আলোচিত হয়েছিল। ভারতের দ্য ডেকান হেরাল্ড, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসসহ বেশ কয়েকটি পত্রিকায় এবিষয়ে যেসব খবর প্রকাশিত হয় তাতে উল্লেখ করা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের নামও ছিল। 

 

আড়ি পেতে টেলিফোন ও ইন্টারনেটনির্ভর যোগাযোগ মাধ্যমে তথ্য ও সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহের চর্চা সারাবিশ্বেই গোয়েন্দা সংস্থাগুলো করে থাকে। বিশেষত: সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কথিত সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ের কারণ দেখিয়ে এই চর্চাটির প্রসার ঘটেছে। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলোতে এই হাতিয়ারের অপব্যবহার রোধে গণতান্ত্রিক জবাবদিহিতার বিশেষ ব্যবস্থা আছে। আদালতের অনুমোদন সেক্ষেত্রে এর অপব্যবহার রোধের রক্ষাকবচ হিসাবে কাজ করে থাকে।  কিন্তু, যেসব দেশে কর্তৃত্ববাদি শাসন ও স্বৈরতান্ত্রিক শাসন চালু রয়েছে, সেই সব দেশে ভিন্নমত দমনের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই কৌশলের নির্বিচার প্রয়োগ হয়। স্পষ্টতই আমাদের আইনে এর অপব্যবহার বন্ধের কোনো নিরোধক ব্যবস্থা নেই। আদালতের পূর্বানুমতির বিধান সংযোজন ছাড়া সাক্ষ্য আইনের পরিবর্তনে তাই নাগরিকের মৌলিক অধিকারের সুরক্ষা হবে, এমন আশা কম। তবে, উচ্চ আদালত সংবিধান পরিপন্থী আইনগুলোর ক্ষেত্রে আরেকটু সাহসী ভূমিকা রাখতে উদ্যোগী হবে, সেই আশা আমরা এখনও হারাইনি। 

(২ অক্টোবর, ২০২০র প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত।)

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে স্বৈরশাসকের ফেরা সহজ

  গণতন্ত্রে উত্তরণে ব্যর্থতা ও স্বৈরতন্ত্রের নিকৃষ্টতম রুপ প্রত্যক্ষ করার পর অর্ন্তবর্তী সরকারের মেয়াদকালে যে সব বিষয়ে সংস্কারের আলোপ চলছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থা। এরশাদের সামরিক স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনকে গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যম হিসাবে যেভাবে প্রতিষ্ঠার কথা ছিল, তা থেকে প্রধান দুই দলই বিচ্যূত হয়েছিল। পরিণতিতে নির্বাচন শুধু ক্ষমতা দখলের হিংসাত্মক খেলায় পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নির্বাচনকে নানা রকম প্রহসনে পরিণত করে।  এই সমস্যার এক অতি সরলীকৃত সমাধান হিসাবে বলা হচ্ছে, দ্বিদলীয় রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে দেশে সত্যিকার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনব্যবস্থায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ধারণাকে একমাত্র বা চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে।  সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনে একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে তারা সংসদের আসন পাবে। এ আনুপাতিক পদ্ধতিতে প্রার্থীদের নাম দল আগাম ঘোষণা করতেও পারে, আবার না–ও পারে। নাম প্রকাশ করা হলে সেটা হব...

Bangladesh is vexed by and wary of Modi’s unstinting support to Sheikh Hasina

In the run-up to Bangladesh’s general election in January 2014, New Delhi took the unusual step of sending a top diplomat from its external affairs ministry to Dhaka to persuade General Hussain Muhammaed Ershad, the country’s former military ruler, to participate in the polls. Big questions had been raised over the fairness of the election. The incumbent government was led by Sheikh Hasina’s Awami League, and the leader of the opposition Bangladesh Nationalist Party (BNP) had been placed under virtual house arrest, with police and roadblocks around her house in Dhaka. The BNP and other opposition parties were threatening to boycott the election. Ershad, the head of the Jatiya Party, was perceived as a potential kingmaker, able to bring to power whichever of Bangladesh’s two main parties he supported, but he was also threatening to withdraw from the election.  After a decade of Modi’s reign in India, people in Bangladesh are angry at their government cosying up to a Hindutva regime ...

অরাজনৈতিক আন্দোলনের করুণ রাজনৈতিক মূল্য

কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ ছাত্র–ছাত্রীদের আন্দোলনে  কদিন ধরে যা ঘটে চলেছে, তা যেমন বেদনাদায়ক, তেমনই নিন্দনীয় ও ক্ষোভের কারণ। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিতে ক্ষমতাসীন সরকারের সমর্থক এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর হাতে একইদিনে দেশের তিন জায়গায় ছয়জনের প্রাণহানির ঘটনা স্বাধীন বাংলাদেশে বিরল।  এবার আরও যেসব ঘটনা আমাদের স্তম্ভিত করেছে, অভিভাবকদের চোখ অশ্রুসিক্ত করেছে, এসব মৃত্যুর পরও সরকারের রাজনৈতিক দম্ভ বজায় রাখার চেষ্টা, যা আরও প্রাণহানির কারণ হয়েছে। ছয়জন তরুণের প্রাণ বিসর্জনের পরও কোটা সংস্কারের দাবিতে সরকার ”নীতিগতভাবে একমত” – একথাটি বলে  আলোচনায় না ডেকে সময়ক্ষেপণ করেছে। আইনমন্ত্রী কথাটি যখন বললেন, তার আগেই আরও জীবন গেল, শত শত মানুষ আহত হলো, দেশের সম্পদ নষ্ট হলো। রাজনৈতিক গরিমা ছাড়া এর আর কোনো কারণ আছে কি? ছাত্রলীগ পরিচয়ে অন্ত্রধারীদের তান্ডব, পুলিশের চরম নিষ্ঠুরতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের গড়পরতা মারধর ও লাঞ্চিত করার যে দৃশ্যগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে, তা কোনো অভিভাবকের পক্ষেই ভোলা সম্ভব নয়। এসব ঘটনার বিবরণ উদ্ধৃত না করে শুধু নিষ্ঠুর ...