সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

অতিথির জন্য স্থায়ী বসতির ভ্রান্তিবিলাস

রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান যখন ক্রমশই অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে, তখন সাম্প্রতিক কয়েকটি খবর উদ্বেগ বাড়িয়ে দিচ্ছে। কক্সবাজারের আশ্রয়শিবিরে সাম্প্রতিক সহিংসতা তার অন্যতম, যাতে অন্তত পাঁচজন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে সেখানে নিরাপত্তাব্যবস্থায় কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। আর্ন্তজাতিক সংবাদ মাধ্যমে এই সহিংসতার কারণ হিসাবে প্রধানত মাদকের কারবারে জড়িতদের দায়ী করা হয়েছে। বাংলাদেশে মাদকদ্রব্যের অন্যতম প্রধান উৎস হচ্ছে মিয়ানমার এবং কক্সবাজারের সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহে এর ভূমিকা ব্যপকভাবে আলোচিত। মাদকের কারবারে যে শুধুমাত্র রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুরাই জড়িত নয়; বরং, স্থানীয়দের একটি বড় অংশের দাপটই এক্ষেত্রে মূখ্য।  প্রভাবশালী ক্ষমতাধরদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে স্থানীয় ও উদ্বাস্তু অপরাধীরা মিলেমিশে এই কারবার চালিয়ে যাচ্ছে। তবে আশার কথা, উগ্রবাদী সন্ত্রাসে এঁদের জড়িয়ে পড়ার যে আশংকা ছিল, গত তিন বছরে সেরকম কিছু ঘটেনি।  

দশ লাখেরও বেশি উদ্বাস্তুর জীবনের অনিশ্চয়তা যতই দীর্ঘতর হবে সেখানকার আঞ্চলিক পরিবেশ-পরিস্থিতিতে অস্থিরতাও ততই বাড়বে। ইঙ্গিত মিলছে উদ্বাস্তুদের এক দশমাংশকে কক্সবাজার থেকে সরিয়ে ভাসানচরে স্থানান্তরকেই সমস্যাটির আপাত-সমাধান হিসেবে ভাবা হচ্ছে। সরকারসমর্থক বিশ্লেষক বুদ্ধিজীবিরা এই স্থানান্তরের কাজ দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করার জন্য গত কয়েকদিন ধরে সরব হয়েছেন। সরকারি ব্যবস্থাপনায় সাংবাদিকদের ভাসানচর ঘুরিয়েও আনা হয়েছে, যাতে তাঁরা দ্বীপটির বাসযোগ্যতা যাচাই করে আসতে পারেন। তবে, তাঁরা কেউ যদি স্বাধীনভাবে দ্বীপটিতে গিয়ে মাসখানেক কাটিয়ে এসে নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা জানাতেন, তাহলে দ্বীপটির বাসযোগ্যতার বিষয়ে একটা স্পষ্ট ধারণা মিলত।

১৩ হাজার বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই দ্বীপটিতে উদ্বাস্তুদের জন্য কীধরণের অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে, তার বিবরণ তাঁরা বেশ নিখুঁতভাবেই তুলে এনেছেন। সমুদ্রের মাঝখানে জেগে ওঠা পলিমাটির এ চরে হাসপাতাল, বাজার, খেলার মাঠ, চলাচলের রাস্তাঘাট, পানি ও পয়:নিষ্কাশনের ব্যবস্থাগুলো কী, তাও তাঁরা জানিয়েছেন। এঁদের প্রতিবেদন থেকে ধারণা হয় ভাসানচরকে মোটামুটি স্বনির্ভর দ্বীপ হিসাবে গড়ে তোলা হচ্ছে। জীবিকানির্বাহের জন্য পশুপালন, মাছের চাষ, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প স্থাপন এবং বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকা ও পর্যটনকেন্দ্রের ব্যবস্থা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই সেখানে নাকি ব্যাক্তি-উদ্যোগে ১০ হাজার মহিষের খামার গড়ে উঠেছে; ভেড়ার চাষও হচ্ছে। আর্ন্তজাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের জন্য উন্নতমানের শতিাতপনিয়ন্ত্রিত আবাসনেরও যে ব্যবস্থা হয়েছে, সেকথাও তাঁরা জানাতে ভোলেন নি।

কক্সবাজারের বর্তমান শিবিরের সঙ্গে তুলনা করে দেখানো হয়েছে যে সেখানে জীবনযাপন বর্তমানের চেয়ে কতটা আলাদা এবং উন্নত হবে। পরিবেশ রক্ষা এবং আইন-শৃংখলার ক্ষেত্রেও ভাসানচর কতটা পার্থক্য গড়ে দেবে, সে কথাও এসব প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। ভাসানচরে ইতোমধ্যে যে শতিনেক রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুকে গত কয়েকমাস ধরে রাখা হয়েছে, তাঁদের কারও বক্তব্য অবশ্য কোনো প্রতিবেদনেই নেই। যেখানে এতো সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা হয়েছে, সেখানে তাঁরা কতটা নিশ্চিন্তে জীবন-যাপন করছেন সেই অভিজ্ঞতার কথা কেন আমরা জানতে পারলাম না ? তাঁদের সঙ্গে কি সাংবাদিকদের কথা বলতে দেওয়া হয়নি? বা তাঁরা কি এমন কিছু বলেছেন, যা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়নি?

অতিথির জন্য স্থায়ীভাবে ঘরবাড়ি বানিয়ে চাষবাসের ব্যবস্থা আমরা কখনো করিনা। কোনো রাষ্ট্রও তা করে না।  ভাসানচরে রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের জন্য যেসব স্থায়ী অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে এবং হচ্ছে তার ফলে কারো কারো মধ্যে এমন ধারণা তৈরি হতে পারে, টেকসই আবাসনের ব্যবস্থা করার মাধ্যমে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের স্থায়ীভাবে গ্রহণ করে নিচ্ছে। মিয়ানমারসহ অন্যান্য দেশ ও আর্ন্তজাতিক সংস্থার মধ্যে এমন ধারণা তৈরি হলে ও স্থায়ীত্ব পেলে উদ্বাস্তু সমস্যাটি আর আর্ন্তজাতিক সম্প্রদায়ের মাথা ঘামানোর বিষয় থাকবে না। যদিও এমনিতেই রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের মানবিক সহায়তা দেওয়ার প্রশ্নে আর্ন্তজাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে একধরণের ক্লান্তি বা একঘেয়েমি লক্ষণীয় হয়ে উঠছে। সাহায্য ও কূটনৈতিক অগ্রাধিকার কমছে।

অন্যদিকে, এটি মিয়ানমারের জন্য উৎসাহ-অনুপ্রেরণার কাজ করবে। বাংলাদেশের ভূখন্ডে জীবিকা অর্জনের ব্যবস্থাসহ স্থায়ী আবাস গড়ে দেওয়ার ফলে মিয়ানমার দাবি করতে পারবে এঁরা বাঙ্গালী বলেই বাংলাদেশে এঁদের স্থায়ী ব্যবস্থা করে আত্মীকরণ সম্ভব হয়েছে। দেশটির উগ্র বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠীগুলো ও সেনাবাহিনী তাদের জাতিগত নির্মূল অভিযান সম্পন্ন করতে আরও উৎসাহী হবে এবং অবশিষ্ট যে লাখপাঁচেক রোহিঙ্গা এখনও আরাকানে রয়ে গেছেন, তাদেরকেও বিতাড়ণের প্রক্রিয়া জোরদার হবে। তাঁদের ওপর নিপীড়ণ বাড়বে।  

ভাসানচরের এই আশ্রয়ণ প্রকল্পে যে অর্থ, শ্রম ও মেধা ব্যয় করা হয়েছে, তা কতটা যৌক্তিক ছিল, তা নিয়ে দেশের ভিতরে তেমন একটা আলোচনা-বিতর্ক হয়নি। পুরো প্রকল্পটিই বাস্তবায়িত হয়েছে অনেকটা গোপনীয়তার মাধ্যমে। রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে কূটনীতির ক্ষেত্রে তেমন একটা আশাব্যঞ্জক আভাস-ইঙ্গিত না মেলাই এধরণের প্রকল্প গ্রহণের কারণ কিনা, সেই প্রশ্ন তোলা অযৌক্তিক হবে না। রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে মিয়ানমারকে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করতে পারে যে দেশ, সেই চীনের কাছ থেকে এবিষয়ে যে কার্যকর কোনো সাহায্য-সহানুভূতি আমরা পাইনি তা গত তিনবছরে নানা উপলক্ষ্যে প্রমাণিত হয়েছে। কোনো আর্ন্তজাতিক ফোরামেই চীন আমাদের পাশে দাঁড়ায়নি। একই কথা ভারত এবং রাশিয়ার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। বাংলাদেশের সঙ্গে নাড়ির বন্ধন থাকলেও ভারত অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক কারণে মিয়ানমারের দিকেই বেশি ঝুঁকে আছে।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের দ্বিপক্ষীয় কূটনীতি যেমন কোনো সুফল দেয়নি, আঞ্চলিক পরিসরেও অবস্থা ছিল তেমনই হতাশাজনক। এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও পাকিস্তানের মত মুসলিমপ্রধান দেশ বাদ দিলে আর কেউ মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কোনোধরণের শক্ত ব্যবস্থা নিতে আগ্রহী নয়। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ এবং মানবাধিকার পরিষদের ভোটাভুটিগুলোতে বারবার তার প্রমাণ মিলেছে।

এখন ইউরোপেও আমরা সহানুভূতি হারাতে চলেছি কি না, সেটিও এক নতুন প্রশ্ন । গত ১৪ অক্টোবর মিয়ানমারের সঙ্গে মানবাধিকার বিষয়ক এক দ্বিপক্ষীয় সংলাপের পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন যে যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করেছে, তাতে রোহিঙ্গাদের কথা নেই। আগামী ৮ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় নির্বাচনের মাত্র তিন সপ্তাহ আগে ইউরোপীয় ইউনিয়ন মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক রুপান্তরের প্রতি তাদের দৃঢ় সমর্থন ব্যক্ত করেছে। তবে, বিস্ময়করভাবে বিবৃতিতে রোহিঙ্গা শব্দটি পরিহার করা হয়েছে; বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুর প্রত্যাবাসন ও পুর্নবাসনের বিষয়ে এতে কিছুই বলা হয়নি। চলতিবছরের গোড়ার দিকে আর্ন্তজাতিক আদালত আইসিজের দেওয়া অর্ন্তবর্তী আদেশে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর স্বীকৃতি দিয়ে সম্ভাব্য গণহত্যা থেকে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য মিয়ানমারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাহলে ইইউ যৌথ বিবৃতিতে রোহিঙ্গা কথাটি পরিহার করলো কেন? এটি মিয়ানমারকে তোষণের ইঙ্গিত, নাকি দেশটিতে বেসামরিক নেতৃত্বে অং সান সুচির বিকল্প না পাওয়ায় তাঁর প্রতি কিছুটা সহানুভূতি ?  

মানবাধিকারের আর্ন্তজাতিক মানদন্ডগুলোর ভিত্তিতে আইনের শাসন এবং সুশাসন জোরদারের মাধ্যমেই টেকসই শান্তি অর্জন সম্ভব বলে তাঁরা একমত হয়েছেন জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয় যে রাখাইন রাজ্য বিষয়ক পরামর্শক কমিশন (কফি আনান কমিশন) এর সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন অব্যাহত রাখতে ইইউ মিয়ানমারকে উৎসাহিত করছে। প্রশ্ন হলো, ২০১৭ সালের যে অভিযানের কারণে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসে জীবন বাঁচাল, সেই সেনা অভিযানে যুদ্ধাপরাধের যে তদন্ত আর্ন্তজাতিক অপরাধ আদালত আইসিসি করছে, সেই তদন্তে সহায়তার কোনো উল্লেখ এই বিবৃতিতে কেন নেই? আনান কমিশন হচ্ছে ২০১৭র অভিযানের আগের; ওই অভিযানকে জাতিসংঘ জাতিগত নির্মূল অভিযানের টেক্সটবুকনজির অভিহিত করেছিল।

এর আগে মিয়ানমারের নির্বাচনে প্রার্থীদের পরিচিতি তুলে ধরার জন্য তৈরি একটি অ্যাপে ইইউ অর্থায়ন করে; সেই অ্যাপে জাতিগত ও ধর্মীয় পরিচয়ের ক্ষেত্রে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রতি ঘৃণা ছড়ানো ও বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদ উসকে দেওয়ার অভিযোগ ঊঠেছে। এসটিইপি বা স্টেপ ডেমোক্রেসি প্রজেক্ট নামের এই প্রকল্পে রোহিঙ্গাদের বাঙ্গালি হিসাবে চিহ্নিত করা হয়, যে পরিচিতি দেশটিতে রোহিঙ্গাবিরোধী বিদ্বেষ ছড়ানো ও জাতিগত সংঘাতের কারণ হয়েছে।

লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, একদিকে রয়েছে রোহিঙ্গা সংকটকে শুধু একটি মানবিক সমস্যা বিবেচনা করে তার রাজনৈতিক দিকটিকে উপেক্ষা করার চেষ্টা, অন্যদিকে আঞ্চলিক পরিসরে আছে ভূরাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক স্বার্থের প্রাধান্য। এরকম জটিলতায় উদ্বাস্তুদের আবাসনকে স্থায়ী ও আকর্ষণীয় করে তোলার চেষ্টা কি আদতে বাংলাদেশের স্বার্থের প্রতিকূলে যায় না?

(২২ অক্টোবর, ২০২০-র প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত।)

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে স্বৈরশাসকের ফেরা সহজ

  গণতন্ত্রে উত্তরণে ব্যর্থতা ও স্বৈরতন্ত্রের নিকৃষ্টতম রুপ প্রত্যক্ষ করার পর অর্ন্তবর্তী সরকারের মেয়াদকালে যে সব বিষয়ে সংস্কারের আলোপ চলছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থা। এরশাদের সামরিক স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনকে গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যম হিসাবে যেভাবে প্রতিষ্ঠার কথা ছিল, তা থেকে প্রধান দুই দলই বিচ্যূত হয়েছিল। পরিণতিতে নির্বাচন শুধু ক্ষমতা দখলের হিংসাত্মক খেলায় পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নির্বাচনকে নানা রকম প্রহসনে পরিণত করে।  এই সমস্যার এক অতি সরলীকৃত সমাধান হিসাবে বলা হচ্ছে, দ্বিদলীয় রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে দেশে সত্যিকার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনব্যবস্থায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ধারণাকে একমাত্র বা চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে।  সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনে একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে তারা সংসদের আসন পাবে। এ আনুপাতিক পদ্ধতিতে প্রার্থীদের নাম দল আগাম ঘোষণা করতেও পারে, আবার না–ও পারে। নাম প্রকাশ করা হলে সেটা হব...

Bangladesh is vexed by and wary of Modi’s unstinting support to Sheikh Hasina

In the run-up to Bangladesh’s general election in January 2014, New Delhi took the unusual step of sending a top diplomat from its external affairs ministry to Dhaka to persuade General Hussain Muhammaed Ershad, the country’s former military ruler, to participate in the polls. Big questions had been raised over the fairness of the election. The incumbent government was led by Sheikh Hasina’s Awami League, and the leader of the opposition Bangladesh Nationalist Party (BNP) had been placed under virtual house arrest, with police and roadblocks around her house in Dhaka. The BNP and other opposition parties were threatening to boycott the election. Ershad, the head of the Jatiya Party, was perceived as a potential kingmaker, able to bring to power whichever of Bangladesh’s two main parties he supported, but he was also threatening to withdraw from the election.  After a decade of Modi’s reign in India, people in Bangladesh are angry at their government cosying up to a Hindutva regime ...

অরাজনৈতিক আন্দোলনের করুণ রাজনৈতিক মূল্য

কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ ছাত্র–ছাত্রীদের আন্দোলনে  কদিন ধরে যা ঘটে চলেছে, তা যেমন বেদনাদায়ক, তেমনই নিন্দনীয় ও ক্ষোভের কারণ। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিতে ক্ষমতাসীন সরকারের সমর্থক এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর হাতে একইদিনে দেশের তিন জায়গায় ছয়জনের প্রাণহানির ঘটনা স্বাধীন বাংলাদেশে বিরল।  এবার আরও যেসব ঘটনা আমাদের স্তম্ভিত করেছে, অভিভাবকদের চোখ অশ্রুসিক্ত করেছে, এসব মৃত্যুর পরও সরকারের রাজনৈতিক দম্ভ বজায় রাখার চেষ্টা, যা আরও প্রাণহানির কারণ হয়েছে। ছয়জন তরুণের প্রাণ বিসর্জনের পরও কোটা সংস্কারের দাবিতে সরকার ”নীতিগতভাবে একমত” – একথাটি বলে  আলোচনায় না ডেকে সময়ক্ষেপণ করেছে। আইনমন্ত্রী কথাটি যখন বললেন, তার আগেই আরও জীবন গেল, শত শত মানুষ আহত হলো, দেশের সম্পদ নষ্ট হলো। রাজনৈতিক গরিমা ছাড়া এর আর কোনো কারণ আছে কি? ছাত্রলীগ পরিচয়ে অন্ত্রধারীদের তান্ডব, পুলিশের চরম নিষ্ঠুরতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের গড়পরতা মারধর ও লাঞ্চিত করার যে দৃশ্যগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে, তা কোনো অভিভাবকের পক্ষেই ভোলা সম্ভব নয়। এসব ঘটনার বিবরণ উদ্ধৃত না করে শুধু নিষ্ঠুর ...