সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

যুক্তরাজ্যের নিয়তি নিজেদের হাতেই, তবে ঝুঁকিমুক্ত নয়

 বড়দিনের প্রাক্কালে, দীর্ঘ দর-কষাকষির ক্লান্তি যখন সবাইকে পেয়ে বসতে যাচ্ছিল, তখনই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ঘোষণা করলেন, ‘আমরা আমাদের আইন এবং আমাদের নিয়তির নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে নিয়েছিঅপর পক্ষে ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি উরসুলা ভন ডার লায়েনের ঘোষণা, ‘এখন ব্রেক্সিটকে পেছনে ফেলে আসার সময় এসেছে

প্রায় এক বছরের দর-কষাকষির পর যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মধ্যে যে বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত হয়েছে, তার খুঁটিনাটি বুঝে ওঠা সময়ের ব্যাপার প্রায় আড়াই হাজার পৃষ্ঠার এই চুক্তি ইউরোপের সঙ্গে বিদ্যমান বাণিজ্যব্যবস্থার ধারাবাহিকতা বজায় রাখার নিশ্চয়তা দিলেও এটি হচ্ছে মূলত মন্দের ভালো অন্য কথায়, যেকোনো চুক্তিই চুক্তিহীন বিচ্ছেদের চেয়ে ভালো
এই চুক্তি যুক্তরাজ্যকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে যেকোনো দেশের মতো তৃতীয় দেশে পরিণত করেছে তবে তা ইউরোপের একক বাজারে শুল্ক এবং কোটামুক্ত প্রবেশাধিকারের কারণে ৬৬ হাজার ৮০০ কোটি ডলারের বার্ষিক বাণিজ্যের সুযোগ নিশ্চিত করেছে সার্বভৌমত্বেরও একটি মূল্য রয়েছে প্রতিযোগিতায় যুক্তরাজ্য যাতে অন্যায্য সুবিধা নিতে না পারে, সে জন্য শ্রমিকের অধিকার পরিবেশগত মানসহ বিভিন্ন বিষয়ে ইইউর আইনগুলোর সঙ্গে তাদের সামঞ্জস্য বজায় রাখতে হবে উভয় পক্ষকে বিভিন্ন খাতে ভর্তুকি দেওয়ার ক্ষেত্রে সামঞ্জস্যপূর্ণ নীতি মানতে হবে এবং এগুলো লঙ্ঘনের জন্য সালিসি এবং সম্ভাব্য শাস্তিমূলক শুল্ক আরোপের মতো ব্যবস্থার প্রশ্নে রাজি হতে হয়েছে এই চুক্তিতে চোরাচালান রোধে এবং জীবজন্তুর বাণিজ্যে পরিদর্শনের ব্যবস্থা থাকছে উত্তর আয়ারল্যান্ড ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাস্টমস এলাকার আওতার মধ্যেই থাকবে ফলে আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে তাদের পণ্য লেনদেন চলাচলে কোনো বাধা থাকছে না, কিন্তু যুক্তরাজ্যের অন্যান্য অংশের সঙ্গে পণ্য চলাচলে সেগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ পরিদর্শনের ব্যবস্থা থাকবে

সেবা খাতের আলোচনা ভবিষ্যতে
এই চুক্তিতে ভিসা, স্বাস্থ্যবিমা এবং বিমান, রেল সড়ক ভ্রমণের মতো অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে যুক্তরাজ্যের সমুদ্রসীমায় ইউরোপীয় দেশগুলোর মাছ শিকারের যে কোটা ছিল, তার মাত্র ২৫ শতাংশ যুক্তরাজ্য ফেরত পাচ্ছে এবং বিষয়টি আবার পাঁচ বছর পরে পর্যালোচনা করা হবে বাণিজ্য বিষয়ে সমঝোতা হলেও সেবা খাত বিশেষ করে আর্থিক সেবাব্যাংক, বিমা, বিনিয়োগের মতো বিষয়গুলো এই চুক্তিতে নেই অথচ যুক্তরাজ্যের অর্থনীতির প্রধান শক্তি হচ্ছে সেবা খাত এবং বিষয়ে সমঝোতা হতে কত বছর সময় লাগবে, সে বিষয়ে কেউই কোনো ধারণা দিতে পারছেন না

বাংলাদেশে তেমন প্রভাব পড়বে না
এই চুক্তির আরেকটি অবশ্যম্ভাবী ফল হচ্ছে যুক্তরাজ্য এখন স্বাধীনভাবে বিশ্বের অন্য যেকোনো দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করতে পারবে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে যুক্তরাজ্য দ্বিপক্ষীয় ভিত্তিতে বাণিজ্য চুক্তি করেও ফেলেছে তবে সেগুলোর বাণিজ্যের আকার ইউরোপের বাজারের তুলনায় ততটা তাৎপর্য বহন করে না
এই চুক্তির প্রভাব বাংলাদেশের ওপর তেমন একটা পড়বে বলে মনে হয় না কেননা, ইউরোপীয় বাজারে এমনিতেই বাংলাদেশের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার রয়েছে এবং যুক্তরাজ্য সেই সুবিধা বহাল রাখার আশ্বাস দিয়েছে তবে সেই আশ্বাসকে আনুষ্ঠানিকতা দেওয়ার প্রশ্ন রয়েছে এবং তা দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করতে পারলে আমরা হয়তো কিছুটা লাভবান হতে পারি

বরিসের কৌশল নাকি করোনার ধাক্কা
মাত্র এক সপ্তাহ আগে, উভয় পক্ষই ইঙ্গিত দিয়েছিল, কোনো চুক্তি হয়তো সম্ভব হবে না তাহলে কীভাবে শেষ মুহূর্তে আপসরফা সম্ভব হলো? সমালোচকদের অনেকে বলছেন, প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের উদ্দেশ্যই ছিল এমন, যাতে বড়দিনের উত্সব নিয়ে ব্যস্ততার কারণে লোকজন চুক্তিটি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পর্যালোচনা করতে না পারে বছর শেষ হওয়ার আগেই এটি অনুমোদনের তাগিদ থেকে ৩০ ডিসেম্বর পার্লামেন্টের বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়েছে, যেখানে দীর্ঘ বিতর্কের সুযোগ নেই বিরোধী দল লেবার পার্টি চুক্তিটিতে সন্তুষ্ট না হলেও তা অনুমোদনে সমর্থন দেওয়ার কথা জানিয়েছে ফলে নিজের দলের কট্টরপন্থীদের সম্ভাব্য বিরোধিতা প্রধানমন্ত্রী জনসনের জন্য তেমন কোনো সমস্যা তৈরি করবে না
দ্বিতীয় আরেকটি তত্ত্ব হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে জো বাইডেনের সাফল্য চুক্তির মাধ্যমে বিচ্ছেদ অনিবার্য করে তুলেছে কারণ, তিনি বারবার বলেছিলেন যে উত্তর আয়ারল্যান্ড এবং আইরিশ প্রজাতন্ত্রের মধ্যে সীমান্ত ফিরিয়ে আনে এবং গুড ফ্রাইডে শান্তি চুক্তি ঝুঁকির মুখে পড়ে এমন কোনো পদক্ষেপ তিনি সমর্থন করবেন না সে রকমটি হলে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি অনিশ্চয়তার মুখে পড়ত
তবে অনেক পর্যবেক্ষক মনে করেন, করোনার অধিক সংক্রামক একটি ধরনের (স্ট্রেন) হঠাৎ আবির্ভাবই এই আলোচনার মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে তাঁরা বলছেন, কোভিডের এই নতুন ধরনের খবর প্রকাশের পর যুক্তরাজ্যের ওপর ইউরোপ যে অপ্রত্যাশিত অভূতপূর্ব ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল, তার ফলে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলায় সবাই উপলব্ধি করতে পেরেছেন যে চুক্তিহীন ব্রেক্সিট কতটা বিপর্যয়কর হবে
পরিস্থিতির রকম দ্রুত অবনতি ব্রিটেন এর আগে খুব কমই দেখেছে এটি ঘটে ঠিক বড়দিনের আগে, যা বাঁচাতে রক্ষণশীল সরকার অনেকটা মরিয়া ছিল তবে ২১ ডিসেম্বর এটি স্পষ্ট হয়ে যায় যে বড়দিনের উৎসবকে অক্ষত রাখা যাচ্ছে না মাত্র তিন দিন আগে পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তরে বরিস জনসনসংক্ষিপ্তএবংছোটআকারে বড়দিন উদ্‌যাপনে পাঁচ দিনের জন্য স্বাস্থ্য বিধিমালায় দেওয়া ছাড় প্রত্যাহারে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন কিন্তু তাঁর সিদ্ধান্ত উল্টে দেওয়াটা এতটাই আকস্মিক ছিল যে সবার মধ্যে একধরনের অজানা আশঙ্কা ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই যুক্তরাজ্য ইউরোপের একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপের বাস্তবতার মুখোমুখি হয় এমন এক দুঃস্বপ্নের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় যে ব্যবসায়ীরা প্রয়োজনীয় সরবরাহ, বিশেষত পচনশীল খাদ্যসামগ্রীর সম্ভাব্য ঘাটতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করতে শুরু করেন জরুরি ভিত্তিতে প্রায় ৮০ টন ফল শাকসবজি বিমানযোগে নিয়ে আসা হয় ইংলিশ চ্যানেলের দুই পাশে কয়েক হাজার ট্রাক মানুষ আটকা পড়েন
৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্রিটিশ নাগরিকদের ইউরোপে স্বাধীনভাবে চলাচলের অধিকার রয়েছে বলে মনে করিয়ে দিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন সদস্যদেশগুলোর প্রতি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার আহ্বান জানালেও তা প্রত্যাহারে ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে যায় পণ্য চলাচল শুরু হলেও ইতিমধ্যে গড়ে ওঠা যানজট এতটাই দীর্ঘ হয়ে যায় যে ম্যানস্টন বিমানবন্দরের রানওয়েকে অস্থায়ী লরিপার্ক বানাতে হয়েছিল এবং হাজার হাজার ট্রাকচালককে সেখানেই বড়দিন পার করতে হয়েছে
বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় সংবাদপত্রগুলো ওই পরিস্থিতিকে চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিটের চেহারা কী হবে, তার একটি মহড়া হিসেবে বর্ণনা করেছে

স্বস্তির সঙ্গে আছে শঙ্কা
রকম বাস্তবতায় বলতেই হবে যে শেষ মুহূর্তের সমঝোতাটি একটি বড় স্বস্তি তবে দীর্ঘ মেয়াদে তা ততটা সুখকর না হওয়ার আশঙ্কা কোনোভাবেই নাকচ করে দেওয়া যায় না যুক্তরাজ্যের সরকার-সমর্থিত স্বাধীন গবেষণা প্রতিষ্ঠান দ্য অফিস ফর বাজেট রেসপনসিবিলিটির (ওবিআর) পূর্বাভাস হচ্ছে, চুক্তির মাধ্যমে ব্রেক্সিট হলেও মাঝারি মেয়াদে দেশটির মোট জাতীয় উৎপাদন (জিডিপি) থেকে শতাংশ পরিমাণে সংকুচিত হবে শীর্ষস্থানীয় একজন ব্যবসায়ী নেতা মার্ক্স অ্যান্ড স্পেনসারের সাবেক প্রধান নির্বাহী স্টুয়ার্ট রোজ বলছেন, এই কোটা শুল্কমুক্ত বাণিজ্য চুক্তি হলেও এখন যুক্ত হবে বাড়তি নথিপত্র তৈরি আমলাতান্ত্রিক আনুষ্ঠানিকতা, যার খরচ সব পণ্যে যোগ হবে ফলে খাদ্যসামগ্রীর দাম বাড়বে
ওয়ারউইক বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিদ্যার অধ্যাপক চার্লস টার্নার গার্ডিয়ান পত্রিকাকে বলেছেন, ‘এই চুক্তি একটি ব্যর্থতা এর ফলে ইউরোপে যে হারে প্রবৃদ্ধি হবে, আমাদের হবে তার চেয়ে কমতাঁর মতে, ‘২০২২ সালের মাঝামাঝি নাগাদ আমরা বুঝতে পারব যে ইউরোপের সঙ্গে আমাদের আরও ঘনিষ্ঠ হওয়া প্রয়োজন' 
প্রধানমন্ত্রী জনসন ব্রেক্সিটপন্থীদের আশাবাদ এবং ইউরোপপন্থীদের শঙ্কার কোনটি কতটুকু ঠিক, সেই বিতর্কে না গিয়েও যেটুকু বলা যায়, তা হলো ইউরোপের সঙ্গে ব্রিটেনের দেনদরবার শিগগির শেষ হবে না
(২৬ ডিসেম্বর, ২০২০‘র প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত।)

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে স্বৈরশাসকের ফেরা সহজ

  গণতন্ত্রে উত্তরণে ব্যর্থতা ও স্বৈরতন্ত্রের নিকৃষ্টতম রুপ প্রত্যক্ষ করার পর অর্ন্তবর্তী সরকারের মেয়াদকালে যে সব বিষয়ে সংস্কারের আলোপ চলছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থা। এরশাদের সামরিক স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনকে গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যম হিসাবে যেভাবে প্রতিষ্ঠার কথা ছিল, তা থেকে প্রধান দুই দলই বিচ্যূত হয়েছিল। পরিণতিতে নির্বাচন শুধু ক্ষমতা দখলের হিংসাত্মক খেলায় পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নির্বাচনকে নানা রকম প্রহসনে পরিণত করে।  এই সমস্যার এক অতি সরলীকৃত সমাধান হিসাবে বলা হচ্ছে, দ্বিদলীয় রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে দেশে সত্যিকার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনব্যবস্থায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ধারণাকে একমাত্র বা চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে।  সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনে একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে তারা সংসদের আসন পাবে। এ আনুপাতিক পদ্ধতিতে প্রার্থীদের নাম দল আগাম ঘোষণা করতেও পারে, আবার না–ও পারে। নাম প্রকাশ করা হলে সেটা হব...

How to Describe the Awami League Accurately?

In an article titled ‘How Not to Describe the Awami League’ , published in this paper, British journalist David Bergman rightly underscores the importance of accuracy in labeling a political party—particularly when such labels carry potential legal consequences. Those familiar with Bergman’s work over the years know that he has consistently taken on politically sensitive and controversial subjects, often at significant personal and professional cost. His courage and commitment to journalistic integrity deserve recognition. Bergman is correct in asserting that “while serious criticisms of the Awami League are both valid and necessary, they must be proportionate and grounded in fact.” His analysis focuses primarily on the legal validity and appropriateness of labeling the Awami League as “fascist” or “Nazi.” He argues that comparing the party to the Nazi regime trivialises the scale of Nazi atrocities and misrepresents the complexities of Bangladeshi politics. Indeed, any historical comp...

সংবিধান সংস্কারে জাতীয় সমঝোতা কি অসম্ভব কিছু

সংবিধান সংস্কার কমিশন সংবিধান নিয়ে যে জনমত সংগ্রহ ও জাতীয়ভিত্তিক সংলাপগুলো করছে, তাতে বেশ ভালোই সাড়া মিলছে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন নাগরিক গোষ্ঠী, রাজনৈতিক দল, বিদ্বজ্জনেরা কেমন সংবিধান দেখতে চান, তা নিয়ে বিতর্ক ও মতবিনিময় করছেন। দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যত নির্ধারণের মৌলিক ভিত্তি তথা রাষ্ট্রকাঠামো ও ক্ষমতার বিন্যাস সম্পর্কে নাগরিকদের এতটা উৎসাহ সম্ভবত: এর আগে আর দেখা যায়নি। সংস্কার কমিশনের সূত্র থেকে জেনেছি, অনলাইনে তাঁরা অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছেন এবং মতামত দেওয়ার জন্য সপ্তাহখানেক সময় বাকি থাকতেই ৩০ হাজারেরও বেশি পরামর্শ তাঁদের কাছে জমা পড়েছে। নাগরিকদের এ আগ্রহ থেকে যে বার্তাটি স্পষ্ট হয়, তা হচ্ছে তাঁরা চান তাঁদের মতামত যেন গুরুত্ব পায়। দীর্ঘ ১৫ বছরের স্বৈরশাসনে ক্ষমতাধরদের কিছু বলার বা তাঁদের প্রশ্ন করার কোনো অধিকার সাধারণ মানুষের ছিল না। প্রতি পাঁচ বছরে একবার ভোটের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচনের যে অধিকার, সেটুকুও তাঁরা হারিয়েছিলেন। এই পটভূমিতে নাগরিকদের প্রথম চাওয়া হচ্ছে, তাঁদের হারানো অধিকার ফিরে পাওয়া। ভোট দেওয়ার অধিকার, কথা বলার অধিকার, প্রশ্ন করার অধিকার, সংগঠন করার...