সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

রাজনীতি নয়, রোহিঙ্গা গণহত্যার বিচারে কূটনীতি চাই

মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের জাতিগত নির্মূলকরণের অংশ হিসাবে যে গণহত্যা সংঘটনের অভিযোগ বর্তমানে আর্ন্তজাতিক আদালতে বিচারাধীন সেই গণহত্যার চার বছর পূর্ণ হতে চলেছে ২৫আগস্ট।এই  একই অভিযোগের বিষয়ে আর্ন্তজাতিক অপরাধ আদালতও আলাদাভাবে আরেকটি তদন্ত করছেযার ভিত্তিতে অপরাধে জড়িত দায়ী সামরিক-বেসামরিক 
ব্যাক্তিদের বিচারের সম্ভাবনাও রয়েছেএই গণহত্যা প্রায় দশ লাখ রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশুকে জীবন বাঁচানোর জন্য পালিয়ে সীমান্ত 
অতিক্রম করে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য করেছেএঁরা এখন বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের 
মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। ফলে অন্য দেশের 
সামরিকবাহিনীর নিষ্ঠুর নৃশংসতার দ্বিতীয় সবচেয়ে 
ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ এবং তার জনগোষ্ঠী।   

আশ্রিত এসব উদ্বাস্তু রোহিঙ্গার অবস্থান যত দীর্ঘায়িত 

হবেআমাদের ওপর চাপও তত বাড়বেসুতরাংস্বাগতিক জনগোষ্ঠীর ধৈর্যচ্যূতির আশংকা নাকচকরে দেওয়া যায় নাএসব উদ্বাস্তুদের স্বদেশে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ ও 

চেষ্টাকে ত্বরান্বিত করা তাই অগ্রাধিকারের তালিকায় 

থাকাই স্বাভাবিক।তবে গত চার বছরে কূটনৈতিক 

পথে সেই উদ্যোগে কোনো অগ্রগতি নেই

উপরন্তুগতবছর মিয়ানমারে যে সামরিকবাহিনীর 

আবারও ক্ষমতা দখলের কারণে কূটনৈতিক প্রক্রিয়াও 

পুরোপুরি থমকে গেছে। সেখানকার সামরিক সরকার 

নির্বাচনকে নাকচ করে দিয়ে গণতন্ত্রপন্থীদের বিরুদ্ধে যে নিষ্ঠুর দমনপীড়ন চালাচ্ছে তার কারণে আর্ন্তজাতিক 

সম্প্রদায়ের অগ্রাধিকারও কিছুটা বদলে গেছে বলে মনে হয়। তাঁদের কাছে এখন দেশটির গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার 

বেশি গুরুত্বর্পূণ।  

সর্বসাম্প্রতিক সামরিক শাসনজনিত সংকটের প্রাক্কালে কি কূটনৈতিকভাবে আমরা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের প্রশ্নে কোনো অগ্রগতি অর্জনে সক্ষম হয়েছিলামএই প্রশ্নের উত্তর নিশ্চিতভাবেই হতাশাজনকএক্ষেত্রে আমাদের 

এশীয় মিত্র এবং প্রতিবেশিদের সমর্থন আদায়ে ব্যর্থতাই 

সবচেয়ে পীড়াদায়ক।  বিষয়ে নিরাপত্তা পরিষদে 

বিভাজন খুবই স্পষ্ট এবং তা সহসা দূর হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে সাধারণ পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ 

মিয়ানমারের জাতিগত বৈষম্য  নিপীড়ন বন্ধ এবং 

শরণার্থী প্রত্যাবাসনের বিষয়ে একাধিকবার প্রস্তাব গ্রহণ করলেও আমাদের প্রতিবেশীদের অধিকাংশই হয় ভোটদানে বিরত থেকেছেনয়তো বিপক্ষে ভোট দিয়েছেপ্রতিবেশীদের সহানুভূতি  মর্থন এই ঘাটতি 

আঞ্চলিক পরিসরে কোনো সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণের 

সম্ভাবনাকেও নাকচ করে দিয়েছে।  আমাদের নিজেদের 

নীতিতেও যে  ধারাবাহিকতা ব্যত্যয় ঘটেছেসে কথাও ভুলে যাওয়ার নয়মিয়ানমারে নির্বাচনের ফলাফলকে বাতিল করে দিয়ে সেনাশাসন জারির নিন্দা জানিয়ে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ গত ১৮ জুন যে প্রস্তাব গ্রহণ করেআমরা সেই প্রস্তাবেও ভোট দেইনিপ্রস্তাবটিতে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের 

বিষয়ে পরিবেশ সৃষ্টির প্রয়োজনীয়তা যথাযথভাবে 

স্বীকৃত হয়নি বলে বাংলাদেশ ভোটদানে বিরত থাকার 

এক অদ্ভুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেমিয়ানমারের সেনাবাহিনী 

বাংলাদেশের এই ভূমিকায় কতটা তুষ্ট হয়েছে, তা আমরা জানি না কিন্তু রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার প্রশ্নে 

যে সেখানকার সেনাশাসকের মনোভাব যে একটুও 

বদলায়নিতা তাঁর কথা  কাজে প্রমাণিত হয়েছেমিয়ানমারে রোহিঙ্গা গণহত্যা  বিতাড়নের জন্য 

আমাদের সরকার অবশ্য তখনকার বেসামরিক নেতৃত্ব অর্থা শুধুমাত্র অং সান সূচিকেই এককভাবে দায়ী করে থাকলে অন্য কথ। সেরকম কোনো সাক্ষ্যপ্রমাণ সরকার 

পেয়ে থাকলে তো এতোদিনে তা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত আইসিসিতে বাংলাদেশের মামলা করা কিম্বা আইসিসির তদন্তকারীদের কাছে তা হস্তান্তরের কথাসেরকম কিছু তো হয়নিরোহিঙ্গা গণহত্যার বিচারে 

আমাদের যতটা উদ্যোগ  সাহসী হওয়ার কথা ছিল

ততটা আমরা হতে পারিনি 

কূটনৈতিক এসব ব্যর্থতা অথবা অক্ষমতা আড়াল করার একটি সহজ উপায় হচ্ছে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের 

প্রত্যাবাসনে কোনো অগ্রগতি না হওয়ার দায় 

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ে ওপর চাপিয়ে দেওয়া

মন্ত্রীরাজনীতিক  কূটনীতিকরা আন্তর্জাতিক 

সম্প্রদায়ে ঠিক কাদের অন্তর্ভুক্ত করেনআর কাদের বাদ দেন, তা মোটেও স্পষ্ট নয় কিছুদিন আগে তাঁদের বক্তব্য-বিবৃতিতে তাঁরা বললেন আন্তর্জাতিক

সম্প্রদায় রোহিঙ্গাদের আত্তীকরণ বা স্থায়ীভাবে রেখে 

দেওয়ার কথা বলছে বিশ্বব্যাংক রোহিঙ্গাদের জন্য 

আলাদা ৫৯ কোটি ডলার দেওয়ার প্রস্তাব করেছে। তাঁদের কথা অনুযায়ী, বিশ্বব্যাংক জাতিসংঘ শরণার্থী 

সংস্থাইউএনএইচসিআরের দেওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে যে রিফিউজি পলিসি রিভিউ ফ্রেমওয়ার্ক (আরপিআরএফতৈরি করেছেতাতে এই প্রস্তাব করা হয়েছে।  

বিশ্বব্যাংক যে আরপিআরএফ তৈরি করেছেসেটা সত্যবাংলাদেশে আশ্র নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য ৫৯ কোটি ডলার সহায়তা দেওয়ার প্রস্তাব করেছেতাতেও কোনো ভুল নেই তবেসমস্যা হচ্ছে এগুলো সবই খন্ডিত তথ্যআরপিআরএফ শুধু যে রোহিঙ্গাদের বা বাংলাদেশের 

জন্য আলাদা কিছুমোটেও তা নয়। বিশ্বে বর্তমানে যে 

আড়াই কোটিরও বেশি শরণার্থী আছেনতাঁদের আশি 

শতাংশেরও বেশি আশ্রয় পেয়েছে উন্নয়নশীল 

দেশগুলোতে উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে যারা 

উন্নয়ন সহায়তা পেয়ে থাকে এরকম ডজনখানেক 

দেশের জন্য বিশ্বব্যাংক এই আরপিআরএফ তৈরি 

করেছে সুতরাং, এটি শুধু বাংলাদেশকে নিয়ে 

ষড়যন্ত্র’ জাতীয় কিছু নয়   

বাংলাদেশের জন্য ৫৯ কোটি ডলারের বরাদ্দ প্রস্তাব 

সঠিক হলেও তার সম্ভাব্য উপকারভোগী শুধু রোহিঙ্গা 

শরণার্থরা ননতাদের আশ্রয়দাতা স্থানীয় জনপদ  

জনগোষ্ঠী এর আওতায় আসবেবিশ্বব্যাংকের ওই সমীক্ষায় স্পষ্ট করে তিনমাত্রার 

লক্ষ্যের কথা বলা হয়েছে .শরণার্থী প্রবাহের কারণে যে হঠা ঘটে যাওয়া বিপর্যয় কাটাতে স্বাগতিক 

জনগোষ্ঠী  শরণার্থীদের জন্য সামাজিক  অর্থনৈতিক উন্নতির সুযোগ তৈরি করা; . শরণার্থী পরিস্থিতি 

দীর্ঘায়িত হওয়ার ক্ষেত্রে স্বাগতিক দেশে শরণার্থীদের 

টেকসই আর্থসামাজিক অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে অথবা 

তাদের নিজ দেশে ফেরানোর মাধ্যমে টেকসই সমাধানকে ত্বরান্বিত করাএবং সম্ভাব্য নতুন শরণার্থী প্রবাহ বা নতুন শরণার্থী আসার সম্ভাবনা মোকাবিলায় দেশের 

প্রস্তুতি জোরদ করা  

বিশ্বব্যাংকের দ্বিতীয়  তৃতীয় লক্ষ্য নিয়েই মূল বিতর্কআপাতদৃশ্যে মনে হয় তারা শরণার্থীদের স্থায়ীভাবে 

আত্তীকরণের কথা বলছে কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে

শরণার্থীদের ফেরত পাঠানো আমাদের যে রেকর্ড তা 

বিবেচনায় নিলে বিশ্বব্যাংকের প্রস্তাব বিস্মিত হওয়ার 

কিছু নেই আমরা ৯০ দশকে আসা রোহিঙ্গাদের 

তিন দশকেও ফেরত পাঠাতে পারিনিআবার২০১৬তে 

নতুন কিছু শরণার্থী আসার পরও বুঝতে পারিনি যে 

২০১৭ সালে  ন করে কয়েকগুণ বড় 

আকারে শরণার্থী আসতে পারে সেজন্যে আগে থেকে

কূটনৈতিক কার্যক্রম যেমন ছিল নাতেমনি আশ্র 

দেওয়ার প্রস্তুতিও ছিল নাবিশ্বব্যাংক শরণার্থীদের 

ফেরত পাঠানোর কথা বলার পাশাপাশি তা না 

হলে মানবিকভাবে সমস্যাটি মোকাবিলার কৌশল প্রস্তাব করেছে।সবচেয়ে বড় কথাস্বাগতিক জনপদ 

 সেখানকার স্থানীয় জনগোষ্ঠী ওপর যে চাপ তৈরি 

হয়েছে তা প্রশমনে তাদের পর্যাপ্ত সহযোগিতা দেওয়া 

জরুরি ওই প্রস্তাবে সে বিষয়ে সমগুরুত্ব দেওয়া 

হয়েছেঅথচপ্রস্তাবটিকে শুধু শরণার্থীদের কল্যাণে 

পরিকল্পনা হিসেবে তুলে ধরার প্রবণতাই বিশেষভাবে

দৃশ্যমান হয়

বিশ্বব্যাংকের প্রস্তাব গ্রহণ করতে হবেএমন কোনো থা নেই কিন্তুপ্রস্তাবটি নিয়ে রাজনীতি করা দূর্ভাগ্যজনকএর পরিনতিতে রোহিঙ্গাবিদ্বেষ উসকে দেওয়ার মত 

ঘটনাও দৃশ্যমান হচ্ছে যেসব বুদ্ধিজীবি রোহিঙ্গাদের 

রাজনৈতিক প্রতিবাদ সংগঠিত করতে দিতেও রাজি নাসংগঠিত হওয়ার আলামত দেখলেই জঙ্গিবাদের প্রভাব দেখেনতাঁরাই এখন বলছেন ওরা তো নিজেদের দেশে ফেরার সংগ্রাম করছে না মিয়ানমারের অন্যান্য 

জাতিগত গেরিলা গোষ্ঠীর লড়াইয়ের নজির তুলে ধরে 

এধরণের প্রশ্ন তোলা কতটা যৌক্তিক এবং নৈতিক? 

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া এসব রোহিঙ্গাদের শিক্ষা

কাজ করার বা ছোট আকারে ব্যবসা করার সুযোগ

আইনগত সুরক্ষা পাওয়ার অধিকারের মত মৌলিক 

মানবাধিকারগুলো নিশ্চিত করার কথাও ওই ্রস্তাবে 

আছে এগুলো আমাদের কাছে অচেনা-অজানা 

মনে হতে পারেকিন্তু এগুলোর সবই শরণার্থীদের 

অধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক সনদে সুনির্দিষ্টভাবে 

উল্লেখ করে নিশ্চিত করার কথা বলা হযেছে।বাংলাদেশ শরণার্থী সনদে স্বাক্ষরকারী দেশ না হওয়ায় 

এগুলো মানতে বাধ্য নয় বলে দাবি করে থাকেএই দাবি 

সত্য হলেও তা মানবিক নয়, এবং সনদে সাক্ষরকারী 

ছাড়াও এধরণের সুবিধা দেওয়া নজির আছেভারতও শরণার্থী সনদে স্বাক্ষর করেনিকিন্তু  

বাংলাদেশের বহু বুদ্ধিজীবিকে ৭১ সালের উদ্বাস্তুজীবনে চাকরি করতে দিয়েছে কাঁটাতার দিয়ে ঘেরা শিবির 

কিম্বা বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ভাসানচরে এতো বিপুলসংখ্যক 

শরণার্থী কিশোর-তরুণ শিক্ষার সুযোগ না পেলে 

এবং কর্মক্ষম নরনারী কাজ করতে না পারলে বছরের 

পর বছর অলস জীবনযাপন করবে এমন ভাবনা 

বিভ্রান্তিকর ভাসানচরে ইতোমধ্যে মাছ ধরার 

জাল এবং গরু লালনপালনের ব্যবস্থা যেটুকু করা হয়েছেতা যদি সঠিক হয়তাহলে কক্সবাজারের 

রোহিঙ্গারা একইধরনের সুযোগ পাবে না কেনএখানে নীতির 

ধারাবাহিকতা থাকা দরকার এবং তাতে বাড়তি লাভ 

হচ্ছে বিদেশি সহায়তা বাড়তে পারে 

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মৌলিক অধিকারের প্রসঙ্গে 

সবচেয়ে দূর্ভাগ্যজনক খবরটি সোশাল মিডিয়ায় এসেছে দুদিন আগে সেখানকার তরুণদের অনেকেই 

অভিযোগ করেছেন আজ তাঁরা গণহত্যা স্মরণ দিবস 

পালনের জন্য গণহত্যার বিচারের দাবি লেখা গেঞ্জি 

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বাজেয়াপ্ত করেছে হত্যা 

নিহতদের স্মরণ  মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার দাবি করার অধিকার শরণার্থীদের থাকবে না,এটা কেমন সিদ্ধান্তগণহত্যার মর্মবেদনা বাঙালির চেয়ে কে বেশি 

অনুভব করেঅথচসেই বাঙালির দেশে আশ্রয়প্রাপ্তরা অন্য আরেকটি দেশে গণহত্যার শিকার বাবা-মাভাই-বোনদের স্মরণ করতে পারবে নাআশা করিআজ সকালেই  ওই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে 


(২৫ আগস্ট, ২০২১ এর প্রথম আলো পত্রিকায় 

প্রকাশিত।) 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে স্বৈরশাসকের ফেরা সহজ

  গণতন্ত্রে উত্তরণে ব্যর্থতা ও স্বৈরতন্ত্রের নিকৃষ্টতম রুপ প্রত্যক্ষ করার পর অর্ন্তবর্তী সরকারের মেয়াদকালে যে সব বিষয়ে সংস্কারের আলোপ চলছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থা। এরশাদের সামরিক স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনকে গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যম হিসাবে যেভাবে প্রতিষ্ঠার কথা ছিল, তা থেকে প্রধান দুই দলই বিচ্যূত হয়েছিল। পরিণতিতে নির্বাচন শুধু ক্ষমতা দখলের হিংসাত্মক খেলায় পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নির্বাচনকে নানা রকম প্রহসনে পরিণত করে।  এই সমস্যার এক অতি সরলীকৃত সমাধান হিসাবে বলা হচ্ছে, দ্বিদলীয় রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে দেশে সত্যিকার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনব্যবস্থায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ধারণাকে একমাত্র বা চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে।  সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনে একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে তারা সংসদের আসন পাবে। এ আনুপাতিক পদ্ধতিতে প্রার্থীদের নাম দল আগাম ঘোষণা করতেও পারে, আবার না–ও পারে। নাম প্রকাশ করা হলে সেটা হব...

How to Describe the Awami League Accurately?

In an article titled ‘How Not to Describe the Awami League’ , published in this paper, British journalist David Bergman rightly underscores the importance of accuracy in labeling a political party—particularly when such labels carry potential legal consequences. Those familiar with Bergman’s work over the years know that he has consistently taken on politically sensitive and controversial subjects, often at significant personal and professional cost. His courage and commitment to journalistic integrity deserve recognition. Bergman is correct in asserting that “while serious criticisms of the Awami League are both valid and necessary, they must be proportionate and grounded in fact.” His analysis focuses primarily on the legal validity and appropriateness of labeling the Awami League as “fascist” or “Nazi.” He argues that comparing the party to the Nazi regime trivialises the scale of Nazi atrocities and misrepresents the complexities of Bangladeshi politics. Indeed, any historical comp...

স্বৈরতন্ত্রের কেন্দ্রীভূত ক্ষমতার নিকৃষ্ট পরিণতি

ছাত্র–জনতার অভ্যূত্থানের মুখে পালিয়ে যাওয়া স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে রাষ্ট্রপতির কথিত মন্তব্যে যে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে, তা প্রত্যাশিতই ছিল। গত ৫ আগস্ট রাতে জাতির উদ্দেশ্য দেওয়া ভাষণ এবং সম্প্রতি মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীর সঙ্গে আলাপচারিতায় পরস্পরবিরোধী মন্তব্য – এই দুইয়ের একটি যে অসত্য, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বিতর্ক শুরু হওয়ার পর তাঁর দপ্তর যে ব্যাখ্যা দিয়েছে, তা–ও অস্পষ্ট ও ধোঁয়াশাপূর্ণ। তিনি সর্বশেষ বিবৃতিতেও মতিউর রহমান চৌধুরীকে অসত্য কথা বলার বিষয়টি স্বীকার যেমন করেন নি, তেমনি এমন দাবিও করেননি যে তাঁকে ভূলভাবে উদ্ধৃত করা হয়েছে।  ৫ আগস্ট যদি তিনি পদত্যাগপত্র গ্রহণের প্রশ্নে অসত্য বলে থাকেন, তাহলে তা খুবই গুরুতর হিসাবে বিবেচিত হতে বাধ্য। কেননা তা ছিল জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণের তথ্য। আবার যদি তিনি মানবজমিন সম্পাদকের কাছে আলাপচারিতায় অসত্য বলে থাকেন, তাহলে তাঁর কাছে যে দেশবাসী প্রশ্নের জবাব চাইতে পারে, তা হলো অর্ন্তবর্তী সরকার যখন সবকিছু গুছিয়ে আনার চেষ্টা করছে, দেশে স্থিতিশীলতা ফেরানোর চেষ্টা চলছে, তখন তিনি কেন এমন বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে চাইছেন? তাঁর উদ্দ...