সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ইভিএমে কেন নির্বাচন কমিশনের অগ্রাধিকার

`তখন চিঠিতে ইসি যা বলেছিল, এখন বলছে ঠিক তার তার উল্টোটা` শিরোনামে গত ২১ জুনের প্রথম আলোয় প্রকাশিত খবর থেকে জানা যাচ্ছে, কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সময়ে স্থানীয় সংসদ সদস্যকে কমিশন এলাকা ছাড়তে বলেনি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল ২০ জুন সাংবাদিকদের বলেছেন, `` তাঁকে আমরা স্থান ত্যাগ করতে বলতে পারি না এবং বলি নাই। কাজেই তিনি কোনো কিছু ভঙ্গ করেননি। আমরাও ব্যর্থ হইনি।`` আলোচিত নির্বাচন হয়ে যাওয়ার প্রায় এক সপ্তাহ পর তাঁর কাছ থেকে এই ব্যাখ্যা মিলেছে। গন্ডারকে সুড়সুড়ি দেওয়ার পর কত দিনে তার হাসি পায় সেই প্রশ্ন না হয় উড়িয়ে দেওয়া যায়, কিন্তু নির্বাচন কমিশনের নির্বাচনোত্তর ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে দাঁড়ানো নিয়ে তৈরি হওয়া প্রশ্নগুলো তো উপেক্ষণীয় নয়। 

সিইসির এই বক্তব্য থেকে অন্তত তিনটি গুরুতর প্রশ্ন উঠছে - ১. একজন সংসদ সদস্যকে যদি সুষ্ঠূ নির্বাচনের প্রয়োজনে কমিশন `স্থান ত্যাগ করতে বলতে` না পারে তাহলে জাতীয় নির্বাচনের সময়ে বাকি ৩৪৯ জন সংসদ সদস্যকে তাঁরা কোনো নির্দেশ দিতে পারবেন কীভাবে? এঁদের মধ্যে তো মন্ত্রীও থাকবেন। প্রতিদ্বন্দিতপূর্ণ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র দখল বা কেন্দ্রে বেআইনি  অবস্থানের অভিযোগ এঁদের কারো বিরুদ্ধে কখনো শোনা যায়নি, এমন তো নয়। মনে রাখা দরকার, সংসদ বহাল থাকা অবস্থায় সংসদে একচেটিয়া আধিপত্যের সুবাদে যেকোনো সাংবিধানিক পদাধিকারিকে অভিশংসনের সুযোগ  ক্ষমতাসীন দলের রয়েছে। ২.দলীয় সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় সুষ্ঠু নির্বাচন অসম্ভব বলে যাঁরা দাবি করে আসছেন, তাঁদের যুক্তি নাকচ করার কোনো অবকাশ কি আছে? এবং ৩.কমিশন কি আদৌ প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কাজ করতে সক্ষম? নাকি কমিশনাররা একরকম সিদ্ধান্ত নেন, আর সিইসি তা অনুমোদন তো দূরের কথা, নাকচ করে দেন। ইতিমধ্যে অন্তত দুটি উদাহরণ তো তৈরি হয়ে গেল। কুমিল্লায় দুজন নির্বাচন কমিশনার স্থানীয় সংসদ সদস্যকে কুমিল্লা ছাড়ার নির্দেশনা দেওয়ার কথা জানিয়ছিলেন এবং বলেছিলেন, `একজন সম্মানিত লোককে টেনেহিঁচড়ে নামানো কমিশনের কাজ নয়।` এর আগে সিইসিকে উদ্ধৃত করে ইভিএমের ত্রুটি ধরিয়ে দিতে পারলে এক কোটি ডলার পুরস্কারের কথা বলেছিলেন আরেকজন কমিশনার এবং পরে সিইসি তা অস্বীকার করেন। এ দুটো ঘটনায় কমিশনে বিশৃংখলা না বললেও সমন্বয়হীনতাই কি প্রকাশ পায় না? 

কমিশনের কাজকর্মে সমন্বয়হীনতার পাশাপাশি প্রস্তুতির অভাব ছিল কিনা, সেটাও একটা প্রশ্ন। কুমিল্লার সংসদ সদস্যকে কমিশন `বিধিবহির্ভূতভাবে কৌশলে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়ার জন্য নির্বাচনী এলাকা ত্যাগের নির্দেশনা দেওয়ার` পর শোনা গেল হাইকোর্ট ওই নির্দেশনার বৈধতার বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন। কিন্তু কমিশন আদালতের এ রকম নির্দেশ পেয়েছিল কিনা, তা নিয়ে রহস্যের জাল বিস্তৃত হয়েছে। কেননা, এরকম ক্ষেত্রে আদালতে নিজেদের সিদ্ধান্তকে আইনসম্মত হিসাবে প্রমাণের আইনি লড়াইয়ে কমিশনের কোনো উদ্যোগের কথা শোনা গেল না। তার মানে কি কমিশনের আইনজীবীরা এজন্য প্রস্তুত ছিলেন না? হাইকোর্ট যদি কোনো আদেশ দিয়েও থাকেন, তা কমিশনে না পৌঁছানো অবধি নিজেদের নির্দেশনা বাস্তবায়নে কমিশন কেন উদ্যোগী হয়নি, তার ব্যাখ্যা কী? এধরনের নিষ্ক্রিয়তাকে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর প্রতি পক্ষপাতের আলামত হিসাবে অভিযোগ উঠলে, তার কী জবাব মিলবে? 

কুমিল্লার নির্বাচনে কমিশন তার যোগ্যতা প্রমাণের মাধ্যমে নিজেদের গ্রহণযোগ্য করে তোলার চেষ্টায় যে সফল হয়নি, তা মোটামুটি স্পষ্ট। ইভিএম নিয়ে তাদের যে আগ্রহ, অথবা সরকার ও ক্ষমতাসীন দলের চাপের মুখে আগামীতে সব ভোট ইভিএমে অনুষ্ঠানের চিন্তা কুমিল্লার নির্বাচনের কারণে যে আরও বিরোধিতা ও বিতর্কের মুখে পড়বে, তা মোটামুটি স্পষ্ট। কুমিল্লার নির্বাচনে সব ভোটকেন্দ্রে যে ইভিএম নির্ঝঞ্ঝাটে কাজ করেছে তা নয়। প্রধান বিরোধীদলের অংশগ্রহণ ছাড়াই যে প্রবল প্রতিদ্বন্দিতাপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে, তাতে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের প্রতিটি ভোটের আলাদা মূল্য রয়েছে। চারটি কেন্দ্রের ফলাফল নিয়ে পরাজিত প্রার্থীর অভিযোগ আদালতে যাচ্ছে বলে খবর বেরিয়েছে। কিন্তু ভোট পুনর্গণনা ও যাচাইয়ের সুযোগ না থাকায় সংক্ষুব্ধ প্রার্থীর অভিযোগ কীভাবে নিষ্পত্তি হবে, সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। আর এর মূল কারণ আমাদের ইভিএম।  

আগামী জাতীয় নির্বাচন ইভিএমে করার জন্য ক্ষমতাসীন দল ও সরকার কতটা উৎসাহী, তা কমিশনের সঙ্গে গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত আলোচনার পর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যে পরিষ্কার। রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ইভিএমবিষয়ক তৃতীয় ও শেষ ধাপের মতবিনিময় সভার পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন ‘আমরা ৩০০ আসনেই ইভিএম চাই। মন থেকে চাই, চেতনা থেকে চাই।’ বিষয়টিতে দলের অবস্থান যে শক্ত, তা বোঝাতে তিনি বলেন, “আমরা গত নির্বাচনের সময় কমিশনে বলেছি, আমাদের দলের সিদ্ধান্ত হচ্ছে, আমাদের পার্টির স্ট্যান্ড হচ্ছে- দিস ইজ লাউড অ্যান্ড ক্লিয়ার- আমরা ইভিএম পদ্ধতির পক্ষে, রাখঢাক করে কোনো লাভ নেই।“

ইভিএম নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ছাড়াও নতুন কমিশন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও সাবেক নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে। মতবিনিময় পর্ব শেষে দেখা যাচ্ছে, ক্ষমতাসীন জোটের প্রধান দল আওয়ামী লীগের মতকে অন্য শরিকরা সমর্থন করছে, যা প্রত্যাশিত ছিল। তবে তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি ও তাদের সাবেক ও বর্তমান জোটসঙ্গীরা এবং বামপন্থী দলগুলো নতুন কমিশনকে যেমন গ্রহণ করতে পারছে না, ঠিক তেমনই তারা ইভিএমেরও বিরুদ্ধে। 

আমাদের অসহিষ্ণু ও বৈরিতাপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবেশে নির্বাচন পরিচালনার অভিজ্ঞতা যাঁদের আছে, তাঁদের প্রায় সবাই নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক সমঝোতার ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছেন। এমনকি চরম ব্যর্থতা ও খোলামেলাভাবে দলীয় পক্ষপাতের জন্য বিপুলভাবে সমালোচিত সদ্য সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার খান মোহাম্মদ নুরুল হুদাও এখন বলছেন রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বোঝাপড়া হলে নির্বাচনে আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েনেরও প্রয়োজন নেই। প্রতিদ্বন্দ্বীদের সম্মতি বা সমঝোতা ছাড়া ইভিএমের প্রবর্তন করে বিতর্কের জন্ম দেওয়া সিইসি নুরুল হুদাই সম্ভবত একমাত্র সাবেক কমিশনপ্রধান, যিনি আগামী জাতীয় নির্বাচন ইভিএমে অনুষ্ঠানের পক্ষে কথা বলেছেন।       

ইভিএমের পক্ষে যে রাজনৈতিক মতৈক্য নেই, সেকথা স্বীকার করে নিয়ে বর্তমান সিইসি আউয়াল বলেছেন, ``আগামী নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে কি না, তা পর্যালোচনা করবে ইসি। ইসির সামর্থ্য কতটা রয়েছে, সেটা দেখা হবে। আদৌ ইভিএম ব্যবহার করা হবে কি না বা সম্পূর্ণ কিংবা অর্ধেক আসনে  ব্যবহার হবে কি না, সে বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত হবে।`` তাঁর এ বক্তব্য আপাতদৃশ্যে সরল ও যৌক্তিক মনে হলেও কমিশনের সিদ্ধান্ত বদলের সাম্প্রতিক নজিরগুলো সন্দেহ জাগায়। ক্ষমতাসীন দল ও সরকারের চাইলে তা নাকচ করার নৈতিক মনোবল ও সাহস তাঁরা দেখাতে পারবেন, এমনটি বিশ্বাস করা কঠিন। ইভিএম কারা চায় এবং কেন, এ প্রশ্নের উত্তর সবারই জানা। কোনো রাজনৈতিক দল নিজেদের সুবিধা ছাড়া নিঃস্বার্থভাবে নির্বাচনে কোনো পরিবর্তন চাইতে পারে - এ কথা কি বিশ্বাসযোগ্য? 

আরেকটি প্রশ্ন হলো, সিইসির কথামতো যে সিদ্ধান্ত পরে নেওয়া হবে, তা নিয়ে এতো ঘটা করে আলোচনা বা মেশিন পরীক্ষার আয়োজনই কেন অগ্রাধিকার পেল ? কমিশনের তো বরং অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা সামগ্রিকভাবে নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতৈক্যের সম্ভাব্য দিকগুলো খতিয়ে দেখা ও  সেই মতৈক্যে পৌঁছানোর জন্য সব দলকে উৎসাহিত করা।   

(৩০ জুন, ২০২২-এর প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত।) 


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে স্বৈরশাসকের ফেরা সহজ

  গণতন্ত্রে উত্তরণে ব্যর্থতা ও স্বৈরতন্ত্রের নিকৃষ্টতম রুপ প্রত্যক্ষ করার পর অর্ন্তবর্তী সরকারের মেয়াদকালে যে সব বিষয়ে সংস্কারের আলোপ চলছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থা। এরশাদের সামরিক স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনকে গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যম হিসাবে যেভাবে প্রতিষ্ঠার কথা ছিল, তা থেকে প্রধান দুই দলই বিচ্যূত হয়েছিল। পরিণতিতে নির্বাচন শুধু ক্ষমতা দখলের হিংসাত্মক খেলায় পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নির্বাচনকে নানা রকম প্রহসনে পরিণত করে।  এই সমস্যার এক অতি সরলীকৃত সমাধান হিসাবে বলা হচ্ছে, দ্বিদলীয় রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে দেশে সত্যিকার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনব্যবস্থায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ধারণাকে একমাত্র বা চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে।  সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনে একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে তারা সংসদের আসন পাবে। এ আনুপাতিক পদ্ধতিতে প্রার্থীদের নাম দল আগাম ঘোষণা করতেও পারে, আবার না–ও পারে। নাম প্রকাশ করা হলে সেটা হব...

অরাজনৈতিক আন্দোলনের করুণ রাজনৈতিক মূল্য

কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ ছাত্র–ছাত্রীদের আন্দোলনে  কদিন ধরে যা ঘটে চলেছে, তা যেমন বেদনাদায়ক, তেমনই নিন্দনীয় ও ক্ষোভের কারণ। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিতে ক্ষমতাসীন সরকারের সমর্থক এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর হাতে একইদিনে দেশের তিন জায়গায় ছয়জনের প্রাণহানির ঘটনা স্বাধীন বাংলাদেশে বিরল।  এবার আরও যেসব ঘটনা আমাদের স্তম্ভিত করেছে, অভিভাবকদের চোখ অশ্রুসিক্ত করেছে, এসব মৃত্যুর পরও সরকারের রাজনৈতিক দম্ভ বজায় রাখার চেষ্টা, যা আরও প্রাণহানির কারণ হয়েছে। ছয়জন তরুণের প্রাণ বিসর্জনের পরও কোটা সংস্কারের দাবিতে সরকার ”নীতিগতভাবে একমত” – একথাটি বলে  আলোচনায় না ডেকে সময়ক্ষেপণ করেছে। আইনমন্ত্রী কথাটি যখন বললেন, তার আগেই আরও জীবন গেল, শত শত মানুষ আহত হলো, দেশের সম্পদ নষ্ট হলো। রাজনৈতিক গরিমা ছাড়া এর আর কোনো কারণ আছে কি? ছাত্রলীগ পরিচয়ে অন্ত্রধারীদের তান্ডব, পুলিশের চরম নিষ্ঠুরতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের গড়পরতা মারধর ও লাঞ্চিত করার যে দৃশ্যগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে, তা কোনো অভিভাবকের পক্ষেই ভোলা সম্ভব নয়। এসব ঘটনার বিবরণ উদ্ধৃত না করে শুধু নিষ্ঠুর ...

সংবিধান সংস্কারে জাতীয় সমঝোতা কি অসম্ভব কিছু

সংবিধান সংস্কার কমিশন সংবিধান নিয়ে যে জনমত সংগ্রহ ও জাতীয়ভিত্তিক সংলাপগুলো করছে, তাতে বেশ ভালোই সাড়া মিলছে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন নাগরিক গোষ্ঠী, রাজনৈতিক দল, বিদ্বজ্জনেরা কেমন সংবিধান দেখতে চান, তা নিয়ে বিতর্ক ও মতবিনিময় করছেন। দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যত নির্ধারণের মৌলিক ভিত্তি তথা রাষ্ট্রকাঠামো ও ক্ষমতার বিন্যাস সম্পর্কে নাগরিকদের এতটা উৎসাহ সম্ভবত: এর আগে আর দেখা যায়নি। সংস্কার কমিশনের সূত্র থেকে জেনেছি, অনলাইনে তাঁরা অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছেন এবং মতামত দেওয়ার জন্য সপ্তাহখানেক সময় বাকি থাকতেই ৩০ হাজারেরও বেশি পরামর্শ তাঁদের কাছে জমা পড়েছে। নাগরিকদের এ আগ্রহ থেকে যে বার্তাটি স্পষ্ট হয়, তা হচ্ছে তাঁরা চান তাঁদের মতামত যেন গুরুত্ব পায়। দীর্ঘ ১৫ বছরের স্বৈরশাসনে ক্ষমতাধরদের কিছু বলার বা তাঁদের প্রশ্ন করার কোনো অধিকার সাধারণ মানুষের ছিল না। প্রতি পাঁচ বছরে একবার ভোটের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচনের যে অধিকার, সেটুকুও তাঁরা হারিয়েছিলেন। এই পটভূমিতে নাগরিকদের প্রথম চাওয়া হচ্ছে, তাঁদের হারানো অধিকার ফিরে পাওয়া। ভোট দেওয়ার অধিকার, কথা বলার অধিকার, প্রশ্ন করার অধিকার, সংগঠন করার...