সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

হায় হায় ব্যাংকের দায় কার?

ফারমার্স ব্যাংকের মরণদশার দায় কার? এই ব্যাংকটিসহ কথিত চর্তুথ প্রজন্মের নয়টি ব্যাংকের অনুমোদনের সময়ে (আওয়ামী লীগের আগের মেয়াদে) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গর্ভণর ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন গবেষণা বিভাগের অধ্যাপক আতিউর রহমান। রাষ্ট্রীয় মুদ্রাভান্ডারের প্রায় শত কোটি ডলার খোয়ানোর কৃতিত্বের অধিকারী এই সাবেক কেন্দ্রীয় ব্যাংকার বুধবার ২০ ডিসেম্বর বলেছেন ব্যাংকটিকে বাঁচাতে হলে এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে (ফারমার্স ব্যাংক বিষয়ে এখনই উদ্যোগ নিতে হবে‘, প্রথম আলো, ২০ ডিসেম্বর, ২০১৭ ) । কি চমৎকার দায়িত্ববোধ! শুধুমাত্র রাজনৈতিক নির্দেশনায় প্রচলিত নিয়মনীতিগুলোর বেশিরভাগ উপেক্ষা করে জনসাধারণের কষ্টের আমানত লুটে নেওয়ার লাইসেন্স দেওয়ার জন্য তাঁর মধ্যে ন্যূনতম কোনো অনুশোচনা নেই। কোনোধরণের দু:খপ্রকাশ ছাড়াই তিনি সেই মৃত্যুপথযাত্রী ব্যাংককে বাঁচানোর জন্য সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন। যার মানে হচ্ছে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে জনগণের করের টাকা ব্যয় করা, যে টাকা ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা প্রায় শুণ্যের কোটায়। 

ফারমার্স ব্যাংকের এই অধ:পতনের জন্য অনেকেই দায়ী করছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতকে। আদর্শ গণতন্ত্রে নিশ্চয়ই অর্থমন্ত্রীকে এই কেলেংকারির দায় নিতে হতো। কিন্তু, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের বর্তমান দুর্দশায় তাঁর ওপর এককভাবে এর দায় দেওয়া হলে তা যথার্থ হবেনা। এখানে আমাদের স্মরণে রাখা দরকার যে ব্যাংকিং খাতে এসব অনিয়মের জন্য তিনি সংসদেই তাঁর অসহায়ত্বের কথা প্রকাশ করেছিলেন। বেসরকারী খাতে এসব নতুন নতুন ব্যাংক অনুমোদনের প্রশ্নেও তাঁর সরল স্বীকারোক্তি রয়েছে। ব্যাংকগুলোকে রাজনৈতিক বিবেচনায় অনুমোদন দেওয়ার কথা তিনি একাধিকবার বলেছেন। বেসরকারী খাতে প্রয়োজনের তুলনায় ব্যাংকের সংখ্যা অনেক বেশি বলে ব্যাংকিং বিশেষজ্ঞরা অনেকদিন ধরেই বলে আসছেন। দেশের জনসংখ্যার তুলনায় নতুন ব্যাংকের চাহিদা এখনও আছে এমন ঠুনকো যুক্তিও তাঁর মুখ থেকে আমরা শুনেছি। আরেকটি বহুল আলোচিত ব্যাংক লুটের ঘটনা বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাচ্চুর বিরুদ্ধে কাগজে-কলমে অনিয়ম-দূর্নীতির প্রমাণ থাকার পরও কোনো ব্যবস্থা নিতে না পারার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেছিলেন যে রাজনৈতিক কারণেই কিছু করা যাচ্ছে না।

ফারমার্স ব্যাংকের উদ্যোক্তা পরিচালকদের শিরোমনি ছিলেন মহিউদ্দিন খান আলমগীর, যদিও ব্যাংকের ওয়েবসাইটে এর প্রতিষ্ঠাকালীন ইতিহাস কিম্বা তার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যানের নামগন্ধও এখন আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ব্যাংকটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যানের জন্য ফারমার্স বা কৃষককুল রীতিমতো একটি সৌভাগ্যের বিষয়। হয়তো সেকারণেই গ্রামীণ এবং কৃষিখাতকেন্দ্রিক ব্যাংক না হলেও তাঁর ব্যাংকের নাম ফারমার্স ব্যাংক। সাবেক সেনাশাসক জিয়ার আমলে যশোরের শার্শা এলাকায় কৃষকদের সেচের সংকট মোকাবেলায় খাল কাটা কর্মসূচিতে তাঁর ভূমিকাই তাঁকে প্রথম আলোচনায় তুলে আনে।

দ্বিতীয়বার তিনি আলোচনায় আসেন খালেদা জিয়ার সরকারের বিরুদ্ধে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আন্দোলনের সময় জনতার মঞ্চে অংশ নিয়ে। তাঁর নেতৃত্বেই সরকারী কর্মকর্তারা সরকারবিরোধী রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নেয়, যা দেশের আমলাতন্ত্রের রাজনীতিকরণে একটি নতুন মাত্রা যোগ করে।

তৃতীয়দফায় তিনি আলোচিত হন জাতীয় সংসদে নির্বাচিত হওয়ার অযোগ্য ঘোষিত হওয়ার রায় সুপ্রিম কোর্টে বহাল থাকায়। ২০১০ সালের ১৫ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের রায়ে তাঁর আসন শূণ্য ঘোষিত হলেও একটি রিভিউ আবেদন দায়ের করে তিনি তাঁর সংসদীয় মেয়াদ পূরণ করেন। সেসময়ে তিনি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। দেশের সবচেয়ে প্রাণঘাতি শিল্প র্দূঘটনা রানা প্লাজা ধসের বিষয়ে তিনি বিরোধীদল বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের ধাক্কাধাক্কিতে স্থানীয় যুবলীগ নেতার ভবনটির ভিত র্দূবল হয়ে পড়ার কথা বলে সমালোচিত হন।  

২০১৩ সালের ২৭ ডিসেম্বর ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল পত্রিকা বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন রাজনীতিকদের কাঁথা থেকে প্রাচূর্য্যে ( Rags to Riches) উত্তরণের কয়েকটি দৃষ্টান্ত তুলে ধরে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ঐ প্রতিবেদনে বলা হয় মহিউদ্দিন খান আলমগীর নির্বাচন কমিশনে তাঁর সম্পদবিবরণীতে তিন কোটিরও বেশি নগদ টাকা থাকার কথা জানিয়েছেন। তিনি ফারমার্স ব্যাংকের অনুমতি পান ২০১৩ সালে এবং ব্যাংকটি আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে ২০১৪ সালে। কিন্তু, মাত্র তিনবছরের মধ্যেই ঋণ দেওয়ায় অনিয়মের বোঝা অসহনীয় হয়ে ওঠে এবং ব্যাংকটি আমানতকারীদের আমানত ফেরত দেওয়ার সামর্থ্য হারায়। এখন ব্যাংকটি তার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন দিতেও অক্ষম হয়ে পড়েছে। বছরখানেক ধরে বাংলাদেশ ব্যাংকের উপুর্য্যপুরি তদন্ত, জরিমানা ও পর্যবেক্ষক নিয়োগেও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ব্যাংকিং খাতে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে।

সংবাদমাধ্যমে এবিষয়ে খবর প্রকাশিত হতে থাকলে মি আলমগীর স্বভাবসুলভ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে তা অস্বীকার করে ব্যাংকটির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনেন, পত্র-পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে বিশেষ ব্যবস্থায় ঋণ নিয়ে এবং বাজার থেকে বন্ডের মাধ্যমে পাঁচশো কোটি টাকা সংগ্রহের উদ্যোগ নেন। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে নিজেদেরকে রক্ষার জন্য জোর তদবির চালান। কিন্তু, তাঁর সীমাহীন অর্থলিপ্সার কারণে এবার আর কাঙ্খিত রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা মেলেনি। বাংলাদেশ ব্যাংক অটল থাকতে পেরেছে। ফলে, ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর তিনি ব্যাংকটির চেয়ারম্যানের পদ ছাড়তে বাধ্য হন। আর, ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক একেএম শামীমকে তাঁর মেয়াদ শেষ হওয়ার মাত্র সাতদিন আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাঁর পদ থেকে অপসারণ করে।

ফারমার্স ব্যাংক ঘিরে মহিউদ্দিন খান আলমগীরের বিরুদ্ধে আরও দুটি গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। প্রথমত: তিনি সাংসদ হিসাবে সংসদের অত্যন্ত গুরুত্বর্পূণ এবং ক্ষমতাবান একটি অংশ, সরকারী হিসাব সংক্রান্ত স্ট্যন্ডিং কমিটির সভাপতি হিসাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকিং খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসাবে যখন তাঁর ফারমার্স ব্যাংকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের তদন্ত করছিল তখন তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের কার্য্যক্রম তদন্তের উদ্যোগ নেন। স্পষ্টতই: সম্ভাব্য স্বার্থের সংঘাত (Conflict of Interest) সত্ত্বেও তিনি এই উদ্যোগ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে তটস্থ রাখতে চেয়েছিলেন। বাংলাদেশে অবশ্য স্বার্থের সংঘাত বিষয়টি অনেকক্ষেত্রেই উপেক্ষিত হয়ে থাকে। দ্বিতীয়ত: ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদ ছাড়তে বাধ্য হওয়ার পর তিনি ব্যাংকে তাঁর অংশীদারত্ব বাড়ানোর চেষ্টায় আরো শেয়ার কেনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে অনুমতি চেয়েছিলেন। এখানেও তাঁর উদ্দেশ্য পরিষ্কার। তিনি জানেন যে সরকার ব্যাংকটিকে রক্ষা করবে, যার ফলে ভবিষ্যতে তাঁর সম্পদ এবং নিয়ন্ত্রণ আবারও বাড়ানোর সুযোগ তৈরি হতে পারে। তাঁর এই চেষ্টার আরেকটি তাৎপর্য্য হচ্ছে তিনি মোটামুটি আশ্বস্তবোধ করছেন যে এই ব্যাংক কেলেংকারির কারণে তাঁকে জেলে যেতে হবে না।

বাংলাদেশের বিদ্যমান ব্যাংকিং আইনে ব্যাংকের চেয়ারম্যান এবং পরিচালকরা জনসেবক বা পাবলিক সারভেন্ট। পাবলিক সারভেন্ট হিসাবে অনৈতিক কাজের জন্য যেসব শাস্তির বিধান আছে সেগুলো তাঁর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হওয়ার কথা। সোনালী এবং অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের কারো কারো ইতোমধ্যেই আশ্রয় হয়েছে জেলে, নয়তো তাঁরা পলাতক। তাহলে, মি আলমগীরের ক্ষেত্রে ব্যাতিক্রম কেন? তাঁর দলও এবিষয়ে নিশ্চুপ। সংসদের ঐ অতীব গুরুত্বর্পূণ এবং ক্ষমতাধর কমিটি থেকেও তাঁকে অপসারণ করা হয় নি।

বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে দীর্ঘদিন ধরেই একধরণের বিশৃংখলা চলে আসছে। রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংকগুলোতেও রাজনৈতিক আনুগত্য বিবেচনায় নিয়োগপ্রাপ্ত পরিচালকরা বাণিজ্যিক যৌক্তিকতার চেয়ে দলীয় এবং গোষ্ঠীস্বার্থে ঋণ বিতরণ করেই অভ্যস্ত। ফলে, সেগুলোও সংকটের ঘূর্ণাবর্তে ঘুরপাক খাচ্ছে। রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে একাধিকবার পূরণ করা হয়েছে মুলধনের ঘাটতি। বেসরকারী খাতের ব্যাংকও এখন আর অনিয়মের পাল্লায় পিছিয়ে নেই। ফারমার্স ব্যাংক একা নয়, এই ধারায় আছে রাজনৈতিক কারণে প্রতিষ্ঠা পাওয়া অন্য ব্যাংকও। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতা পরিচয়ে অনুমোদন পাওয়া উদ্যোক্তাদের এনআরবি কর্মাশিয়াল ব্যাংকও পরিচালনা পরিষদ রদবদল ঘটাতে বাধ্য হয়েছে। কিন্তু, কেলেংকারির মূল হোতারা ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাচ্ছেন। এসব হায় হায় ব্যাংকের দায় কার? 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ঘৃণা চাষের উর্বর ভূমি ও রাজনৈতিক সংকট

  দেশে একের পর এক অস্থিরতা সৃষ্টির বেশ কয়েকটি ঘটনা আমরা প্রত্যক্ষ করলাম। এগুলোর কোনোটিই প্রত্যাশিত ছিল না। অনেকেই এগুলো নির্বাচন যাতে প্রধান উপদেষ্টার প্রতিশ্রুত সময়ে না হয়, তার জন্য পরিস্থিতি ঘোলাটে করার অপচেষ্টা হিসাবে বর্ণনা করেছেন। পরিকল্পিতভাবে অস্থিরতা সৃষ্টির পিছনে প্রধানত: দুটি শক্তিকে দায়ী করা হচ্ছে – একটি হচ্ছে পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের পলাতক নেতৃত্বের সাংগঠনিক উদ্যোগ; অপরটি হচ্ছে, বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার (সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম) সুবাদে সমাজে প্রভাব বিস্তারে দক্ষতা অর্জনকারী কিছু প্রভাবক ব্যক্তি বা গোষ্ঠী। এসব প্লাটফর্ম বিদ্বেষ ও ঘৃণা ছড়ানোর সবচেয়ে কার্যকর হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে।  আপনি যদি কাউকে অপদস্থ বা হেয় করতে চান, তাহলে তার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত স্থান সম্ভবত:  সোশ্যাল মিডিয়ার কোনো একটি প্লাটফর্ম – বাংলাদেশে এটি ফেসবুক এবং ইউটিউব। বৈশ্বিক পরিসরে অবশ্য এক্স (সাবেক টুইটার) এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে আছে। প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে গণহত্যার শিকার সংখ্যালঘু মুসলিম জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে জাতিগত বিদ্বেষ ছড়ানোয় এই সোশ্যাল মিডিয়া কী ভূমিকা রেখেছে, তা জাতিসংঘ তদন্...

How to Describe the Awami League Accurately?

In an article titled ‘How Not to Describe the Awami League’ , published in this paper, British journalist David Bergman rightly underscores the importance of accuracy in labeling a political party—particularly when such labels carry potential legal consequences. Those familiar with Bergman’s work over the years know that he has consistently taken on politically sensitive and controversial subjects, often at significant personal and professional cost. His courage and commitment to journalistic integrity deserve recognition. Bergman is correct in asserting that “while serious criticisms of the Awami League are both valid and necessary, they must be proportionate and grounded in fact.” His analysis focuses primarily on the legal validity and appropriateness of labeling the Awami League as “fascist” or “Nazi.” He argues that comparing the party to the Nazi regime trivialises the scale of Nazi atrocities and misrepresents the complexities of Bangladeshi politics. Indeed, any historical comp...

ভারতে ’বাংলাদেশি ভাষা’ বিতর্ক, পুশ–ইন ও প্রতিক্রিয়া

  দিল্লি পুলিশ একটি চিঠিতে বাংলা ভাষাকে 'বাংলাদেশি ভাষা' হিসেবে উল্লেখ করায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায় 'বাংলা ভাষাকে বাংলাদেশি ভাষা বলা কলঙ্কজনক, অপমানকর, দেশবিরোধী এবং অসাংবিধানিক কাজ। এটি ভারতের সব বাংলাভাষী মানুষকে অপমান করে। তারা আমাদেরকে হেয় করে (চিঠিতে) এমন ভাষা ব্যবহার করতে পারে না।'  দিল্লির পুলিশ যে চিঠিতে বাংলাকে বাংলাদেশি ভাষা বলেছে, সেটি বাংলাভাষী কয়েকজনকে জোর করে বাংলাদেশে পাঠানোর উদ্দেশ্যে একটি এফআইআর তদন্তের নথি অনুবাদ সম্পর্কিত। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের দিল্লিতে যে পান্থশালা আছে, সেখানকার কর্মকর্তাদের সাহায্য চাইতেই ওই চিঠি। চিঠিটি জুলাইয়ের ২৯ তারিখের। কিন্তু তার মাসখানেকের আগে থেকে মমতা বন্দোপাধ্যায় বাংলাভাষী ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশি তকমা দিয়ে জোর করে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন।  দিল্লিতে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার পশ্চিম বঙ্গ ও আসামের রাজ্য বিধানসভার আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে সংখ্যালঘু মুসলমান বাংলাভাষীদের অবৈধ অভিবাসী হিসাবে চিহ্নিত করে যে জোরপূর্বক ঠেলে দেওয়ার কাজ শুরু কর...