সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

নিষ্ঠুরতা কি সহনীয় হয়ে উঠছে?


সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাংলাভাষীদের চলতি আলোচনার কারণে ক্ষমতাসীন দলের সাংসদ আব্দুর রহমান ওরফে বদিকে সাম্প্রতিককালের সবচেয়ে আলোচিত ব্যাক্তি বললেও সম্ভবত কম বলা হবে। আলোচনায় যেসব বিষয় এসেছে সেগুলোর মধ্যে আছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আইন-শৃংখলারক্ষাকারী বাহিনীগুলোর প্রধানদের সঙ্গে কোনো একটি অনুষ্ঠানে তাঁর খোলামেলা আলোচনার ছবি, সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে অন্তত তিনটি ভিন্ন ভিন্ন অনুষ্ঠানের কিছু ছবি, ত্রাণমন্ত্রীর সঙ্গে ছবি এবং তাঁর ফেসবুকের একটি স্ক্রিনশট যাতে লেখা আছে চলো যাই যুদ্ধে, মাদকের বিরুদ্ধে। জনআলোচনায় সাংসদ বদির এই প্রাধান্য পাওয়ার কারণ সর্বনাশা ইয়াবার কারবারে তাঁর জড়িত থাকার অভিযোগ।
সরকারঘোষিতমাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধেনিহতের সংখ্যা গত বারোদিনে সত্তুর ছাড়িয়েছে। ধারণা করা যায় কথিত এই যুদ্ধের গতি একই থাকলে দুএকদিনের মধ্যে তা শতক ছাড়াবে। নিহতদের সম্পর্কে যতটা তথ্য পাওয়া যাচ্ছে তাতে এঁদের অধিকাংশের বিরুদ্ধে পুলিশসহ আইন-শৃংখলাবাহিনীগুলোর তৈরি তালিকায় মাদককারাবারী হিসাবে নাম নথিভুক্ত ছিল। পুলিশ ছাড়া আর যারা তালিকা করেন তাঁদের মধ্যে আছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের গোয়েন্দা শাখা, পুলিশের অভিজাত অংশ- র‌্যাব এবং পুলিশের গোয়েন্দা শাখা। এছাড়া জাতীয় নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আরও কোনো কোনো সংস্থার তালিকাতেও তাঁদের নাম থাকার সম্ভাবনা আছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন যে সাংসদ বদির বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলেও প্রমাণ নেই। প্রমাণ পেলে সরকার ব্যবস্থা নেবে। আইনসম্মত এবং যৌক্তিক এই মন্তব্যের জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। বছর কয়েক আগে সাংসদের ছয় ভাইয়ের নাম সরকারের তৈরি তালিকায় ছিল। ছোট ভাইয়ের ইয়াবার চালান ধরা পড়ার পর পাঁচবছরেও যেহেতু তদন্ত শেষ হয় নি সেহেতু তাঁরা সবাই নিরপরাধ বিবেচিত হবেন সেটাই স্বাভাবিক। শুক্রবার তাঁর যে বিয়াইয়ের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে তাঁর মৃত্যুও কাম্য ছিল না। তাঁর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ ছিল তা  আদালতের বিচার্য্য বিষয় ছিল। সাংসদের ক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যে যুক্তি দিলেন তাঁর বেয়াইয়ের ক্ষেত্রেও সেই যুক্তি প্রযোজ্য হওয়ার কথা ছিল। শুধু সাংসদ বদি কেন, এর আগে আরও কয়েকজন সাংসদ এবং ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধেও মাদকব্যবসার অভিযোগ এসেছে। যেহেতু তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার কথা শোনা যায় না সেহেতু ধরে নেওয়া যায় তাঁদের ক্ষেত্রেও প্রমাণের জন্য অপেক্ষার পালা চলছে। তবে, নিহতদের কপাল খারাপ যে তাঁদের ক্ষেত্রে একই নীতি অনুসৃত হয়নি।
মাদকের মত অপরাধ দমনের ক্ষেত্রে মৃত্যু অথবা অপরাধীকে নির্মূল করাই যখন একমাত্র সমাধান হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে তখন যাঁদের প্রাণ গেছে তাঁদের আসল পরিচয়টাও একটু দেখা দরকার। যাঁরা মারা গেছেন তাঁদের মধ্যে কেউ আদালতে সাজাপ্রাপ্ত হয়ে পালিয়ে ছিলেন এমন কারো কথা শোনা যায় নি। তবে, গ্রেফতার হয়ে আদালত থেকে জামিনে ছিলেন এমন অনেকের কথাই শোনা গেছে। পুলিশের দূর্নীতিগ্রস্তদের চাঁদাবাজির শিকার হয়েছেন এমন কয়েকজনের কথাও পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। অন্তত একজন রাজনৈতিক বিরোধীদলীয় কর্মীর মৃত্যুর কথাও জানা গেছে। সবচেয়ে মর্মান্তিক হচ্ছে পরিচয় ভুল হওয়ায় নিহত হওয়ার ঘটনা। অর্থাৎ, সাক্ষ্যপ্রমাণ ছাড়াই শুধুমাত্র অভিযোগ ওঠার কারণেই এঁদেরকে প্রাণ দিতে হয়েছে।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের বাংলাদেশ শাখার ২০১৩ সালের একটি জরিপ বলছে যে দেশটিতে জনসেবা খাতে সবচেয়ে দূর্নীতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি হচ্ছে পুলিশ। গত পাঁচবছরে পুলিশের ভাবমূর্তির যে খুব একটা উন্নতি ঘটেছে সেকথা বলার মত কোনো দৃষ্টান্ত তাঁরা তৈরি করতে পেরেছেন এমন নয়। বরং, পত্রিকান্তরে প্রকাশিত খবরগুলো পড়লে অন্যরকম ধারণা তৈরি হয়। মাদকবিরোধী যুদ্ধ চলার সময়েই ইত্তেফাক একজন পুলিশ সুপারের ভাষ্য উল্লেখ করে বলছে সীমান্তবর্তী একটি জেলায় পুলিশ মাদককারবারীদের কাছ থেকে নিয়মিত মাসোহারা পায় (আমাদেরও অনেকে মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মিশে গেছে, ইত্তেফাক, ২৫ মে, ২০১৮)। সীমান্তবর্তী অন্যান্য জেলার অবস্থা এর চেয়ে উন্নত কিছু হবে এমনটি মনে করা কঠিন। ইতোমধ্যে, খবর বেরিয়েছে পুলিশ টাকা আদায়ের জন্য আটক করে মাদকের অভিযোগ দিয়ে শুধু হয়রানি করছে তা-ই নয়, গাজীপুরে টাকা নেওয়ার পরও কথিত বন্দুকযুদ্ধে সন্দেহভাজন ব্যাক্তিকে মেরে ফেলা হয়েছে ( টাকাও নিয়েছে, ক্রসফায়ারেও দিয়েছে; বাংলা ট্রিবিউন, ২২ মে, ২০১৮)। চট্টগ্রামে র‌্যাবের সোর্স পরিচয় ভুল করায় নিহত হয়েছেন একজন এবং পরে সেই সোর্স ও ক্রসফায়ারে মারা পড়েছেন  (ভুল তথ্যে র‌্যাবের বন্দুকযুদ্ধে হাবিব নিহত, দাবি পরিবারের, বিডিনিউজ২৪.কম, ২১ মে, ২০১৮)।

সন্দেহের বশে এবং বিনাবিচারে হত্যার এই ধারা ধীরে ধীরে সমাজে সহনীয় উঠছে কিনা সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। ২০১৩, ১৪ এবং ১৫ সালে রাজনৈতিক সহিংসতার সময়েও এরকম বিনাবিচারে নাশকতার সন্দেহে অস্ত্রউদ্ধারের অভিযানে নিয়ে যাওয়ার পরিণতিতে অনেকগুলো প্রাণহানি ঘটেছে। সংবাদমাধ্যমের একটি বড় অংশই এসব ঘটনায় আইন-শৃংখলাবাহিনীর ভাষ্য কোনোধরণের প্রশ্ন ছাড়াই প্রকাশ করে এসেছে। কিন্তু, দুএকটি সংবাদপত্রের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এসব কল্পকাহিনীর গোমর ফাঁস হতে শুরু করে এবং মানবাধিকারকর্মীদের প্রতিবাদের মুখে আইন-শৃংখলাবাহিনীর কৌশলে পরিবর্তন আসে। শুরু হয় পায়ে গুলি করে পঙ্গু করে দেওয়ার কৌশল অনুসরণ। এরপর ২০১৬তে ধর্মীয় উগ্রপন্থীরা হলি আর্টিজানে হামলা পরিচালনার পর জঙ্গি নির্মূলে আবারও বন্দুকযুদ্ধ একটি সমাধান হিসাবে ফিরে আসে। জঙ্গিবাদের নৃশংসতার বিপরীতে বন্দুকযুদ্ধের বিরুদ্ধে অনেকেই নীরবতার নীতি গ্রহণ করেন।

জঙ্গিবাদীদের কাছে নানাধরণের অস্ত্রশস্ত্র ও বিস্ফোরক ছিল, তাদের কৌশল ছিল আত্মঘাতি লড়াইয়ের। মাদককারবারীদের কাছেও অস্ত্র-শস্ত্র থাকা অস্বাভাবিক নয়। তবে, মাদককারবারীদের বাজার দখল বা নিয়ন্ত্রণের জন্য বড়ধরণের কোনো লড়াই বা অস্ত্রপ্রদর্শনীর নজির তেমন একটা নজরে পড়ে না। আসলে মাঠপর্যায়ে যাঁরা এগুলো লেনদেন করেন তাঁরা খুব বড় মাপের কেউ নন। এই ব্যবসায় যাঁরা বড় খেলোয়াড় তাঁরা রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক পৃষ্ঠপোষকতা যথেষ্ট পরিমাণে পেয়ে থাকেন। পুলিশের গৎবাঁধা বন্দুকযুদ্ধের কাহিনীর উপুর্যপুরি পুনরাবৃত্তির বিশ্বসযোগ্যতা তাই এখন শূণ্যের কোঠায়। এসব মৃত্যুর খবরে অবশ্য সরকারের প্রত্যাশা কিছুটা হলেও পূরণ হবে। কেননা, এসব বন্দুকযুদ্ধ দূর্নীতি ও রাজনৈতিক পক্ষপাতের কারণে জনমনে আতংক সৃষ্টির জন্য খুবই কার্যকর। আতংকের কারণে মাঠপর্যায়ের খুচরা কারবারীরা আপাতত হয়তো আত্মগোপন করবে। তবে, র্দীঘমেয়াদে সমাজের মাদকমুক্তিতে তা খুব একটা কাজে আসবে না। ফিলিপাইন বা মেক্সিকোর অভিজ্ঞতা সেকথাই বলে।

মাদকের সমস্যা একদিনের নয়, অতএব সমাধানও তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে এমন ভাবনার সুযোগ নেই। এর উৎপাদনকেন্দ্র বাংলাদেশে নয়, প্রতিবেশি দেশগুলোতে। আগে আসতো ভারত থেকে ফেনসিডিল এবং র্পূব এশিয়ার দেশগুলো থেকে সাগরপথে হেরোইন, এখন তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মিয়ানমারের ইয়াবা। এসব সরবরাহের পথ বন্ধে কার্যকর ভূমিকা রাখায় ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিলে চুনোপুটিদের ক্রসফায়ারকেই মোক্ষম দাওয়াই ভাবা হোত না। তবে, আতংক সৃষ্টি করার পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকলে আলাদা কথা। নির্বাচনের আগে সেই আশংকাকে নাকচও করা যায় না।

মাদক সমস্যা মোকাবেলার উদ্দেশ্য মহৎ, কৌশল বেআইনী শিরোনামে গতসপ্তাহে প্রথম আলো অনলাইনে প্রকাশিত আমার নিবন্ধে শতাধিক পাঠকের মন্তব্যে দেখা যায় বন্দুকযুদ্ধের কৌশলকে সমর্থন এবং বিরোধীতার মধ্যে ব্যবধান খুব বেশি নয়। সমর্থনকারীদের অনেকের মন্তব্যে স্পষ্ট ইঙ্গিত মেলে যে এই নিষ্ঠুরতা অনেকের কাছেই সহনীয় হয়ে উঠেছে। আপনি আইন ধুয়ে পানি খানমন্তব্যে বোঝা যায় এই সমস্যা জনগোষ্ঠীকে কতটা ভোগাচ্ছে। কিন্তু, একইভাবে রাজনৈতিক সন্ত্রাস আমাদেরকে ভুগেয়েছে, ধর্মীয় উগ্রবাদ ভুগিয়েছে, ভোগাচ্ছে যত্রতত্র ধর্ষণের ঘটনা, শিশু নির্যাতন, চাঁদাবাজি, অপহরণ, বেপরোয়া চালকদের মানুষ চাপা দেওয়ার প্রতিযোগীতার মত প্রাণঘাতি নানা অপরাধ। ইতোমধ্যে ধর্ষণ মামলার অভিযুক্তদের দ্রুতবিচার এবং মৃত্যুদন্ডের দাবিতে মানববন্ধনও হয়েছে। ধর্ষণ, শিশু নির্যাতন, মানুষ চাপা দেওয়ার মত ঘটনায় অভিযুক্তদের ধরতে পারলে গণপিটুনিতে মেরে ফেলার দৃষ্টান্তও আমাদের রয়েছে। এসব অপরাধের ক্ষেত্রে মানুষের ধৈর্যচ্যূতির কারণ হচ্ছে পুলিশের দূর্নীতি এবং অদক্ষতার কারণে তদন্ত ঝুলে যাওয়া, মামলায় সাক্ষ্য-প্রমাণ দিতে না পারা ইত্যাদি। এসব ক্ষেত্রেও  কি তাহলে বন্দুকযুদ্ধই সমাধান?

আমাদের উচ্চ আদালত অনেক বিষয়েই স্বত;প্রণোদিত হয়ে অন্যায়ের প্রতিকারে উদ্যোগী হয়েছেন এবং তাঁদের সাফল্যও আছে। কিন্তু, শুধুমাত্র সন্দেহের বশে যেসব বেআইনী হত্যাকান্ডের মত নিষ্ঠুরতার চর্চা চলছে তা বন্ধে তাঁরা কেনো উদ্যোগী হচ্ছেন না তার কোনো উত্তর আমাদের জানা নেই। তবে, আমরা উদ্বিগ্ন হচ্ছি এই ভেবে যে বিনা বিচারে সন্তেহভাজনকে সাজা দেওয়ার প্রথা আদালতের ভাবমূর্তির জন্য মোটেও শুভ নয়। এসব বন্দুকযুদ্ধ আইন-শৃংখলাবাহিনীর একটা বড় অংশকেও যে নিষ্ঠুরতায় অভ্যস্ত করে তুলছে সেটাও একটা র্দূভাবনার বিষয়।

( ২৭মে, ২০১৮‘র প্রথম আলোয় প্রকাশিত লেখকের কলাম ।)

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে স্বৈরশাসকের ফেরা সহজ

  গণতন্ত্রে উত্তরণে ব্যর্থতা ও স্বৈরতন্ত্রের নিকৃষ্টতম রুপ প্রত্যক্ষ করার পর অর্ন্তবর্তী সরকারের মেয়াদকালে যে সব বিষয়ে সংস্কারের আলোপ চলছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থা। এরশাদের সামরিক স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনকে গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যম হিসাবে যেভাবে প্রতিষ্ঠার কথা ছিল, তা থেকে প্রধান দুই দলই বিচ্যূত হয়েছিল। পরিণতিতে নির্বাচন শুধু ক্ষমতা দখলের হিংসাত্মক খেলায় পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নির্বাচনকে নানা রকম প্রহসনে পরিণত করে।  এই সমস্যার এক অতি সরলীকৃত সমাধান হিসাবে বলা হচ্ছে, দ্বিদলীয় রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে দেশে সত্যিকার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনব্যবস্থায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ধারণাকে একমাত্র বা চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে।  সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনে একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে তারা সংসদের আসন পাবে। এ আনুপাতিক পদ্ধতিতে প্রার্থীদের নাম দল আগাম ঘোষণা করতেও পারে, আবার না–ও পারে। নাম প্রকাশ করা হলে সেটা হব...

How to Describe the Awami League Accurately?

In an article titled ‘How Not to Describe the Awami League’ , published in this paper, British journalist David Bergman rightly underscores the importance of accuracy in labeling a political party—particularly when such labels carry potential legal consequences. Those familiar with Bergman’s work over the years know that he has consistently taken on politically sensitive and controversial subjects, often at significant personal and professional cost. His courage and commitment to journalistic integrity deserve recognition. Bergman is correct in asserting that “while serious criticisms of the Awami League are both valid and necessary, they must be proportionate and grounded in fact.” His analysis focuses primarily on the legal validity and appropriateness of labeling the Awami League as “fascist” or “Nazi.” He argues that comparing the party to the Nazi regime trivialises the scale of Nazi atrocities and misrepresents the complexities of Bangladeshi politics. Indeed, any historical comp...

সংবিধান সংস্কারে জাতীয় সমঝোতা কি অসম্ভব কিছু

সংবিধান সংস্কার কমিশন সংবিধান নিয়ে যে জনমত সংগ্রহ ও জাতীয়ভিত্তিক সংলাপগুলো করছে, তাতে বেশ ভালোই সাড়া মিলছে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন নাগরিক গোষ্ঠী, রাজনৈতিক দল, বিদ্বজ্জনেরা কেমন সংবিধান দেখতে চান, তা নিয়ে বিতর্ক ও মতবিনিময় করছেন। দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যত নির্ধারণের মৌলিক ভিত্তি তথা রাষ্ট্রকাঠামো ও ক্ষমতার বিন্যাস সম্পর্কে নাগরিকদের এতটা উৎসাহ সম্ভবত: এর আগে আর দেখা যায়নি। সংস্কার কমিশনের সূত্র থেকে জেনেছি, অনলাইনে তাঁরা অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছেন এবং মতামত দেওয়ার জন্য সপ্তাহখানেক সময় বাকি থাকতেই ৩০ হাজারেরও বেশি পরামর্শ তাঁদের কাছে জমা পড়েছে। নাগরিকদের এ আগ্রহ থেকে যে বার্তাটি স্পষ্ট হয়, তা হচ্ছে তাঁরা চান তাঁদের মতামত যেন গুরুত্ব পায়। দীর্ঘ ১৫ বছরের স্বৈরশাসনে ক্ষমতাধরদের কিছু বলার বা তাঁদের প্রশ্ন করার কোনো অধিকার সাধারণ মানুষের ছিল না। প্রতি পাঁচ বছরে একবার ভোটের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচনের যে অধিকার, সেটুকুও তাঁরা হারিয়েছিলেন। এই পটভূমিতে নাগরিকদের প্রথম চাওয়া হচ্ছে, তাঁদের হারানো অধিকার ফিরে পাওয়া। ভোট দেওয়ার অধিকার, কথা বলার অধিকার, প্রশ্ন করার অধিকার, সংগঠন করার...