সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ইরানের শাস্তি এবং আরও একটি যুদ্ধের শঙ্কা


ইরানের পরমাণু চুক্তি যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বাতিল করবেন সেটা সবার জানাই ছিল, কিন্তু এর প্রতিক্রিয়া কতটা ব্যপক কিম্বা বিপজ্জনক হবে তা আমরা কেউই জানিনা। ইরানকে শাস্তি দিতে উদগ্রীব তিনটি দেশ যুক্তরাষ্ট্র, ইজরায়েল এবং সউদি আরব। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিষেধাজ্ঞা জারিকে সঠিক পদক্ষেপ হিসাবে বর্ণনা করে তাকে স্বাগত জানিয়েছে ইজরায়েল এবং সউদি আরব। কিন্তু, বাকি বিশ্ব , বিশেষত যুক্তরাষ্ট্রের ইউরোপীয় মিত্ররা  হতচকিত এবং হতাশ। ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে মতপার্থক্য এর আগে কখনও এতোটা প্রকট হয় নি। পরমাণূ কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যে বিশ্ব সংস্থা সেই আই এ ই এর নোবেল শান্তি পুরষ্কারবিজয়ী সাবেক মহাপরিচালক মোহাম্মদ আল বেরাদেইয়ের কথায় বিশ্বে এখন আরেকটি যুদ্ধের আশংকা আরও ঘনীভূত হলো।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে এই বহুজাতিক চুক্তি নস্যাৎ করা থেকে বিরত রাখার চেষ্টায় ইউরোপের নেতারা চেষ্টার কসুর করেন নি। ফরাসী প্রেসিডেন্ট ম্যাখঁ এবং জার্মান চ্যান্সেলর ব্যাক্তিগতভাবে তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন ওয়াশিংটনে উড়ে গিয়ে টেলিভিশন সাক্ষাৎকার দিয়ে কোরীয় উপদ্বীপে বিপারমাণবিকীকরণ উদ্যোগের জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে নোবেল পুরষ্কার দেওয়ার পক্ষে ওকালতি করে তাঁর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন যে ইরান চুক্তি বাতিলের পরিণতিতে কোরীয় উদ্যোগ ভন্ডুল হয়ে যেতে পারে। কিন্তু, মি ট্রাম্পের মন টলানো যায় নি। 
কেন ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত?
প্রশ্ন হচ্ছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কেন ইরান চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নিলেন? এর সম্ভাব্য কারণ তিনটি। প্রথমত: ওবামার অর্জনগুলো নস্যাৎ করা। প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ওবামা প্রশাসনের নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো সম্পর্ তাঁর বক্তব্য-বিবৃতিগুলোর কথা স্মরণ করলে প্রমাণ মেলে যে তিনি তাঁর পূর্বসুরির প্রতি কতটা বিদ্বেষ পোষণ করেন এবং তাঁকে ছোট করায় কতটা আনন্দ পান। তিনি শপথগ্রহণের পর প্রথম যে কাজটি করেছিলেন তা ছিল ওবামা প্রশাসনের সম্পাদিত বাণিজ্য বিষয়ক চুক্তি ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ (টিপিপি) থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহারের আদেশে স্বাক্ষরদান। এরপর তাঁর অগ্রাধিকারের বিষয় ছিল স্বাস্থ্যসেবাখাতে ওবামা যে পরিবর্তনের সূচনা করেছিলেন সেই যুগান্তকারী ওবামাকেয়ার বাতিল করা। ওবামাকেয়ারের বিকল্প ব্যবস্থার পক্ষে কোনোধরণের ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা ছাড়াই তিনি সেটি বাতিল করাতে সক্ষম হয়েছেন। ওবামা প্রশাসনের আরেকটি বড় নীতি নাকচ করার দৃষ্টান্ত হচ্ছে অভিবাসীদের সুযোগ-সুবিধা বাতিল করে তাদের জোর করে ফেরত পাঠানো।
দ্বিতীয়ত: মধ্যপ্রাচ্য নীতির ক্ষেত্রে তাঁর প্রশাসনের ওপর ইজরায়েল রাষ্ট্র এবং তার কট্টরপন্থী নেতা বেনইয়ামিন নেতানিয়া্হু এবং সউদি যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমানের প্রভাব। প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্বগ্রহণের পর মি ট্রাম্প প্রথম যে পাঁচটি দেশ সফর করেছিলেন তার প্রথম দুটি হচ্ছে সউদি আরব এবং ইজরায়েল। অথচ, ঐতিহ্য হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টরা প্রথম সফরে যান প্রতিবেশি কানাডায়।প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রথম সফরে তেলআবিব গিয়ে ইজরায়েলের সুরক্ষা তাঁর প্রথম অগ্রাধিকার বলে যে ঘোষণা দিয়েছিলেন তাতে কোনো বিস্ময়ের কিছু ছিল না। তবে, লক্ষ্যণীয় ছিল ইরানের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি। ইজরায়েলের জন্য সব মিত্রকে বাদ দিয়ে এককভাবে সিদ্ধান্ত নিতে তাঁর যে মোটেও সংকোচ হয় না তার প্রমাণ হচ্ছে জেরুজালেমে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত। আগামীকাল বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্র সেই কাজটিও সম্পন্ন করতে যাচ্ছে। মুসলিম বিশ্বের নেতৃত্বের দাবিদার সউদি শাসকদের কাছে এখন সবচেয়ে বড় শত্রু কে?  ইজরায়েল? মোটেও না। তাদের শত্রু ইরান। ইরানকে শায়েস্তা করতে তারা তাদের সাবেক মিত্র কাতারের ওপরও গত দেড়বছরের বেশি সময় ধরে নানাধরণের নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে। সুতরাং, মধ্যপ্রাচ্যে ট্রাম্প প্রশাসনের সবচেয়ে বিশ্বস্ত বন্ধুদের জন্য উপহার হচ্ছে েইরানের বিরুদ্ধে নতুন নতুন এবং কঠোরতর নিষেধাজ্ঞা।
তৃতীয়ত: প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ঘোষিত নীতি হচ্ছে আমেরিকা ফার্ষ্ট, যে নীতির কারণে তিনি একলা চলার পথে হাঁটতে মোটেও দ্বিধান্বিত নন। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলার বৈশ্বিক সনদ প্যারিস চুক্তির কথা স্মরণ করুন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আন্তর্জাতিক মিত্রদের হতাশ করে প্যারিস চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। আর, সর্বসম্প্রতি তাঁর প্রশাসনের গুরুত্বর্পূণ পদগুলোতে যুক্ত হয়েছেন কট্টর ডানপন্থী কয়েকজন ব্যাক্তিত্ব যাঁরা বুশ প্রশাসনের সময়ে মানবাধিকার লংঘন এবং পেশিশক্তি প্রয়োগের নীতির কারণে ব্যপকভাবে সমালেচিত। এঁরা ইরানের বিরুদ্ধে কট্টর অবস্থানগ্রহণের পক্ষে উৎসাহ যুগিয়ে থাকতে পারেন বলেও ধারণা করা হয়।
চুক্তির কি অপমৃত্যু ঘটছে?
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ সমর্থিত বহুপাক্ষিক ইরান চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরে গেলে চুক্তির কি অপমৃত্যু ঘটে? এর উত্তর হ্যাঁ এবং না দুটোই। হ্যাঁ, এই কারণে যে যুক্তরাষ্ট্র নিজেকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার ফলে ইরানের ওপর তাদের আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো পুর্নবহাল হচ্ছে। শুধু তাই নয়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নতুন করে আরো কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন। আমরা জানি বিশ্ববাণিজ্যের প্রধান বিনিময়মাধ্যম হচ্ছে ডলার। এখন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কারণে অন্যরা ইরানের সঙ্গে বাণিজ্যিক লেনদেন অব্যাহত রাখলেও ডলার এবং যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকিংমাধ্যমের অসহযোগিতার কারণে তা বাধাগ্রস্ত হতে বাধ্য। এমনিতেই, এই চুক্তি স্বাক্ষরের পরও ইরান যুক্তরাষ্ট্রে আটকে থাকা সম্পদ ফিরে পাওয়া এবং অন্যান্য আর্থিক সুবিধা যেগুলো পাওয়ার কথা ছিল তার অনেকটাই পায় নি। এখন নতুন নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরান যে বড়ধরণের চাপের মধ্যে পড়বে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
তবে, চুক্তির মৃত্যু ঘটবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং জার্মানির নেতারা। তাঁরা বলেছেন  চুক্তির যেসব বাধ্যবাধকতা তাঁদের ওপর বর্তায় সেগুলো তাঁরা মেনে চলবেন। ইরানের প্রতি তাঁরা অনুরোধ জানিয়েছেন যে ইরান যেন চুক্তি থেকে সরে না যায়। বিবিসি জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কারণে আমেরিকান কোম্পানিগুলো যেসব ব্যবসা থেকে সরে যেতে বাধ্য হবে সেসব শূণ্যতা পূরণের সুযোগগ্রহণের জন্য ব্রিটিশ সরকার ব্যবসায়ীদের পরামর্শ দিয়েছে। ইরান এয়ার যুক্তরাষ্ট্রের বোয়িং কোম্পানির কাছ থেকে দুই হাজার কোটি ডলারের যে বিমান কেনার কথা ছিল সেই সুযোগটি ইউরোপের এয়ারবাস গ্রহণ করতে পারে কিনা এমন সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে ইউরোপের ব্যবসায়ীরা। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রবিষয়ক প্রধান মেঘরিনি ট্রাম্পের ঘোষণার ঘন্টাখানেকের মধ্যেই এক সংবাদ সম্মেলনে এই চুক্তিকে রক্ষার জন্য ইরানের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন বারো বছরের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পরিণতি হচ্ছে এই চুক্তি। এটি পুরো আর্ন্তজাতিক সম্প্রদায়ের সম্পদ। কাউকে এটি ভেঙ্গে ফেলতে দেওয়া যাবে না। ইরাক যুদ্ধের সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৃহত্তর ইউরোপের একটি দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। তবে, তখন ব্রিটেন এবং পোল্যান্ড যুক্তরাষ্ট্রের সহযাত্রী হয়েছিল। এবারে , যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে ইউরোপের কোনো দেশই নেই বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। যার মানে হচ্ছে এবারই একটা নজিরবিহীন দূরত্ব তৈরি হলো।
বহুপক্ষীয় ওই চুক্তিতে রাশিয়া এবং চীনও ছিল অন্যতম অংশীদার। তাঁদের প্রতিক্রিয়া এখন পর্যন্ত স্পষ্ট না হলেও ধারণা করা যায় তারা ইরানের প্রতি সহানুভূতিশীল। সিরিয়া সংকটে রাশিয়া এবং ইরান একযোগে আসাদ সরকারকে শক্তি ও সামরিক সরবরাহ যুগিয়ে আসছে। চীনও ইরানের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে আগ্রহী। সুতরাং, চীন, রাশিয়া ও ইউরোপ যদি ইরানের সঙ্গে বাণিজ্য ও অন্যান্য সহযোগিতা অব্যাহত রাখে তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা নিষেধাজ্ঞার ধার অনেকটাই কমে যাবে। মন্দের ভালো হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রের একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তারের হাতিয়ার কিছুটা দূর্বল হওয়াকে অনেকে স্বাগতও জানাতে পারেন।  
বিশ্বাসভঙ্গের নজির:
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সিদ্ধান্তটিকে বিশেষজ্ঞদের অনেকেই বিশ্বাসভঙ্গের একটি নজির হিসবে দেখছেন। ইরাকে সাদ্দাম হোসেনের গণবিধ্বংসী অস্ত্রমজুতের ভিত্তিহীন অজুহাত দিয়ে প্রেসিডেন্ট বুশ ও প্রধানমন্ত্রী ব্লেয়ার যে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের সূচনা করেছিলেন তার আগুন এখনও জ্বলছে, এখনও রক্তক্ষরণ হচ্ছে এবং পৃথিবী আরও নিরাপত্তাহীনতার মুখে পড়েছে। বিশ্বাসযোগ্যতার ঘাটতি যখন শক্তিধর দেশগুলোর নেতাদের নিত্যসঙ্গী তখন ইরানের সেঙ্গে চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাহার বিশ্বনেতাদের প্রতি আস্থাহীনতা বাড়াবে। বিপারমাণবিকীকরণে উত্তর কোরিয়াকে এটি নিরুৎসাহিত করবে। আবার, একইভাবে ইরানকে যেকোনো উপায়ে পরমাণু অস্ত্রের অধিকারী হওয়ার জন্য এটি উৎসাহিত করবে। কেননা, পরমাণূ শক্তির অধিকারী হলে যে বিশ্বশক্তিগুলোর কাছ থেকে মর্যাদা আদায় করা যায় উত্তর কোরিয়া তার উৎকৃষ্ট প্রমাণ।
ইরানের পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে আসার পরিণতিতে মধ্যপ্রাচ্যে আরেকটি যুদ্ধের যে আশংকার কথা বিবিসিতে আল বেরাদাইর মুখ থেকে শোনা গেছে সেই বিপদের কথা আরও অনেক বিশ্লেষকই বলছেন। এর কারণ হচ্ছে ইজরায়েল এবং সউদি আরবের অভিন্ন লক্ষ্য হচ্ছে ইরানের সামরিক সামর্থ্য ও আঞ্চলিক রাজনৈতিক আকাঙ্খাকে ধ্বংস করা। বর্তমানে সিরিয়া, লেবানন এবং ইয়েমেনে ইরানের সক্রিয় উপস্থিতি রয়েছে। ইসলামের শিয়া মতানুসারীদের সুরক্ষা ইরানের আধ্মাত্যিক নেতাদের কাছে খুবই গুরুত্বর্পূণ যেই দ্বন্দ্বে প্রতিপক্ষ হচ্ছে সউদি আরব। অন্যদিকে, ফিলিস্তিনী সংঘাতের একটি পক্ষ হামাসের মিত্র হচ্ছে ইরান। ফিলিস্তিনীদের আরেক মিত্র  লেবাননের হেজবুল্লাহরও প্রধান সাহায্যকারী ইরান। সবমিলিয়ে ইরান বেশ কিছুদিন ধরেই ইজরায়েল এবং  সউদি আরবের সঙ্গে এক ছায়াযুদ্ধে লিপ্ত আছে। বিশেষজ্ঞদের আশংকা , এটি যেকোনো সময়েই একটি বড় আকারের আঞ্চলিক যুদ্ধে রুপান্তরিত হতে পারে।
অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এখন অত্যন্ত নাজুক এক পরিস্থিতির মুখোমুখি। নির্বাচনে রাশিয়ার প্রভাব বিস্তারের তদন্তে যেভাবে একের পর এক কেলেংকারি ফাঁস হতে শুরু করেছে তাতে আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য মধ্যবর্তী নির্বাচনে কংগ্রেস ও সিনেটে রিপাবলিকান পার্টির নিয়ন্ত্রণ হারানোর সম্ভাবনা এখন ক্রমশই স্পষ্ট হচ্ছে। সেখানে ডেমোক্র্যাটদের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাওয়ার মানে হচ্ছে তাঁর অভিশংসনের ঝুঁকি নাটকীয়ভাবে বেড়ে যাওয়া। ঘরের আগুনের ধোঁয়া আড়াল করতে তাঁর কট্টর সহযোগীরা যদি এখন বাইরের কোথাও দাবানল সৃষ্টিতে উৎসাহিত করেন তাতে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
( প্রথম আলোর অনলাইন পোর্টালে ৯ মে, ২০১৮ তে প্রকাশিত লেখকের নিবন্ধ।)

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

Bangladesh is vexed by and wary of Modi’s unstinting support to Sheikh Hasina

In the run-up to Bangladesh’s general election in January 2014, New Delhi took the unusual step of sending a top diplomat from its external affairs ministry to Dhaka to persuade General Hussain Muhammaed Ershad, the country’s former military ruler, to participate in the polls. Big questions had been raised over the fairness of the election. The incumbent government was led by Sheikh Hasina’s Awami League, and the leader of the opposition Bangladesh Nationalist Party (BNP) had been placed under virtual house arrest, with police and roadblocks around her house in Dhaka. The BNP and other opposition parties were threatening to boycott the election. Ershad, the head of the Jatiya Party, was perceived as a potential kingmaker, able to bring to power whichever of Bangladesh’s two main parties he supported, but he was also threatening to withdraw from the election.  After a decade of Modi’s reign in India, people in Bangladesh are angry at their government cosying up to a Hindutva regime ...

অরাজনৈতিক আন্দোলনের করুণ রাজনৈতিক মূল্য

কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ ছাত্র–ছাত্রীদের আন্দোলনে  কদিন ধরে যা ঘটে চলেছে, তা যেমন বেদনাদায়ক, তেমনই নিন্দনীয় ও ক্ষোভের কারণ। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিতে ক্ষমতাসীন সরকারের সমর্থক এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর হাতে একইদিনে দেশের তিন জায়গায় ছয়জনের প্রাণহানির ঘটনা স্বাধীন বাংলাদেশে বিরল।  এবার আরও যেসব ঘটনা আমাদের স্তম্ভিত করেছে, অভিভাবকদের চোখ অশ্রুসিক্ত করেছে, এসব মৃত্যুর পরও সরকারের রাজনৈতিক দম্ভ বজায় রাখার চেষ্টা, যা আরও প্রাণহানির কারণ হয়েছে। ছয়জন তরুণের প্রাণ বিসর্জনের পরও কোটা সংস্কারের দাবিতে সরকার ”নীতিগতভাবে একমত” – একথাটি বলে  আলোচনায় না ডেকে সময়ক্ষেপণ করেছে। আইনমন্ত্রী কথাটি যখন বললেন, তার আগেই আরও জীবন গেল, শত শত মানুষ আহত হলো, দেশের সম্পদ নষ্ট হলো। রাজনৈতিক গরিমা ছাড়া এর আর কোনো কারণ আছে কি? ছাত্রলীগ পরিচয়ে অন্ত্রধারীদের তান্ডব, পুলিশের চরম নিষ্ঠুরতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের গড়পরতা মারধর ও লাঞ্চিত করার যে দৃশ্যগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে, তা কোনো অভিভাবকের পক্ষেই ভোলা সম্ভব নয়। এসব ঘটনার বিবরণ উদ্ধৃত না করে শুধু নিষ্ঠুর ...

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে স্বৈরশাসকের ফেরা সহজ

  গণতন্ত্রে উত্তরণে ব্যর্থতা ও স্বৈরতন্ত্রের নিকৃষ্টতম রুপ প্রত্যক্ষ করার পর অর্ন্তবর্তী সরকারের মেয়াদকালে যে সব বিষয়ে সংস্কারের আলোপ চলছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থা। এরশাদের সামরিক স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনকে গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যম হিসাবে যেভাবে প্রতিষ্ঠার কথা ছিল, তা থেকে প্রধান দুই দলই বিচ্যূত হয়েছিল। পরিণতিতে নির্বাচন শুধু ক্ষমতা দখলের হিংসাত্মক খেলায় পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নির্বাচনকে নানা রকম প্রহসনে পরিণত করে।  এই সমস্যার এক অতি সরলীকৃত সমাধান হিসাবে বলা হচ্ছে, দ্বিদলীয় রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে দেশে সত্যিকার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনব্যবস্থায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ধারণাকে একমাত্র বা চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে।  সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনে একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে তারা সংসদের আসন পাবে। এ আনুপাতিক পদ্ধতিতে প্রার্থীদের নাম দল আগাম ঘোষণা করতেও পারে, আবার না–ও পারে। নাম প্রকাশ করা হলে সেটা হব...