সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

টিকা শুধু কেনা নয়, উৎপাদনেরও উদ্যোগ চাই

কোভিড মহামারির বিরুদ্ধে সারা বিশ্ব যখন সম্ভাব্য চার থেকে পাঁচটি টিকার কার্যকারিতার সাফল্য উদযাপন করছে, তখন সবার মনেই যে সহজ প্রশ্নটি জন্ম নিচ্ছে, তা হচ্ছে, কবে এটি আমার কাজে আসবে? ইউরোপ এবং আমেরিকায় জনপ্রত্যাশা ক্রমশই জোরালো হচ্ছে যে চলতিবছরেই এটি পাওয়া যাবে। কিন্তু, উন্নয়নশীল দেশগুলো কি একইভাবে আশাবাদী হতে পারে ? নিষ্ঠুর সত্য হচ্ছে, না। সেটা হবে অবাস্তব প্রত্যাশা।

এখনও পর্যন্ত যে কোনো ন্যায়সঙ্গত বিশ্বব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি, এই টিকার বিলিবন্টনে তা আবারও প্রমাণিত হতে যাচ্ছে। বস্তুত: জি ২০-র শীর্ষসম্মেলনে কোভিড মহামারি মোকাবিলা ও টিকার সুষম বন্টনের আলোচনার সময়ে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর রাষ্ট্রটির বিদায়ী প্রেসিডেন্ট গলফ খেলায় মগ্ন ছিলেন বলে সংবাদমাধ্যমগুলো খবর দিয়েছে। টিকা কেনার প্রতিযোগিতায় তাঁর দেশই সবচেয়ে বেশি এগিয়ে আছে। ব্যাক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রী (পিপিই), রোগ শনাক্তকরণ পরীক্ষার সামগ্রী ও সরঞ্জাম এবং জীবনরক্ষাকারী জরুরি চিকিৎসার ওষুধপত্র কেনার বেলাতেও তেমনটিই ঘটেছিল।      

আশার কথা হচ্ছে, যে টিকাটি জনতার টিকা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছিলো, অক্সফোর্ড উদ্ভাবিত সেই টিকাটিও কার্যকর হিসাবে প্রমাণিত হয়েছে। যদিও পরীক্ষার ফলাফলে ৭০ শতাংশের ওপর এর কার্যকারিতা প্রমাণিত হওয়ার তথ্য অন্য তিনটি ( ফাইজার-বায়োএনটেক ও মর্ডানার উদ্ভাবন এবং রাশিয়ার স্পুটনিক) টিকার তুলনায় কম বলে মনে হয়, তবুও উদ্ভাবকরা বলছেন যে টিকাটি প্রয়োগের ডোজের ওপর ভিত্তি করে তাঁরা ৯০ শতাংশ সাফল্যও পেয়েছেন। বিজ্ঞানীদের কয়েকটি সাবধানবাণীর কথাও অবশ্য এখানে স্মরণে রাখা প্রয়োজন। যাঁদের ওপর এসব টিকার পরীক্ষায় সাফল্য মিলেছে, তা অন্য সবার জন্য একইধরণের সক্ষমতা নাও দেখাতে পারে। সবার জন্য যে এগুলো নিরাপদ হবে, তাও নিশ্চিত নয়। সর্বোপরি, টিকা শুধু টিকাগ্রহণকারীকে নিরাপত্তা দেবে, না-কি তার দেহ থেকে অন্যের মধ্যে সংক্রমণও প্রতিরোধ করবে, সেসব প্রশ্নের উত্তর এখনও স্পষ্ট নয়।    

অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রোজেনকার এই টিকাটির ক্ষেত্রে এমন কথাও বলা হয়েছে যে  তাঁরা বড়দিনের আগেই টিকা সরবরাহ করার প্রতিযোগিতা করছেন না। তবে, ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী ডিসেম্বরেই কিছুসংখ্যায় হলেও টিকাটির প্রয়োগ শুরু করা সম্ভব হবে বলে তাঁরা আশাবাদী। স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং অক্সফোর্ডের উদ্ভাবকরা অবশ্য বলেছেন তাঁরা তৃতীয় ধাপের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করার পর নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ তা নিরীক্ষা করে অনুমোদন দিলেই কেবলমাত্র তা সরবরাহ করা হবে। অন্যদিকে, ফাইজার এবং মর্ডানা উভয়েই অন্তত যুক্তরাষ্ট্রে ডিসেম্বরের শুরুতেই টিকা সরবরাহ করতে পারবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কেননা, নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের নিয়মমাফিক নিরীক্ষা সম্পন্ন হওয়ার আগেই উভয়েই জরুরি ব্যবহারের জন্য তাঁরা অনুমতি চেয়েছে।

বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য সমস্যা হচ্ছে এসব টিকার অধিকাংশই ধনী দেশগুলো কিনে নিয়েছে। অল্প পরিমাণে যা পাওয়া যাবে তা সংগ্রহের লাইনটাও বেশ লম্বা। মডার্না একবছরে উৎপাদন করবে একশো কোটি ডোজ, যার টিকার ৭৮ শতাংশই ধনী দেশগুলো আগাম কিনে নিয়েছে। এরমধ্যে প্রথম দশ কোটিই পাবে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের সরকার এই টিকার উদ্ভাবন ও উৎপাদনে সহায়তার জন্য মডার্নাকে প্রায় শত কোটি ডলার সহায়তা দিয়েছে। ফাইজার-বায়োএনটেক চলতি বছরে উৎপাদন করবে মাত্র চারকোটি ডোজ। তবে, আগামী বছরে তারা একশো কোটি ডোজ তৈরি করতে সক্ষম হবে বলে জানিয়েছে। কিন্তু, এটি মাইনাস ৭০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় রক্ষণাবেক্ষণের বাধ্যবাধকতা থাকায় খুব বেশিসংখ্যক দেশ তা এখনই কাজে লাগাতে পারবে না। এর জন্য যে অবকাঠামো গড়ে তুলতে হবে, তা রাতারাতি হবে না। আর, রাশিয়ার স্পুটনিক নিয়ে পাশ্চাত্যের বিজ্ঞানীদের সংশয় এখনও দূর হয়নি।

এসব চ্যালেঞ্জ বিবেচনায় সবচেয়ে সহজে ব্যবহার্য্য টিকা হচ্ছে অক্সফোর্ড -অ্যাস্ট্রোজেনকার টিকা। এর রক্ষণাবেক্ষণ অন্যান্য রোগের টিকার মতোই এবং তা বিশ্বের যেকোনো প্রান্তেই সহজে পরিবহনযোগ্য। দামেও সস্তা, মডার্নার দশভাগের এক ভাগ, আর ফাইজারের সাত ভাগের এক ভাগ। এটি আগামী একবছরে তিনশো কোটি ডোজ উৎপাদনের ব্যবস্থা হয়েছে, যা মডার্না এবং ফাইজারের মোট উৎপাদনের চেয়েও একশো কোটি বেশি। অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রোজেনকা বিশ্বের সব দেশের জন্য টিকা সরবরাহের ব্যবস্থা করার অঙ্গীকারও করেছে। তবে, এই টিকারও দশ কোটি ডোজ আগাম কিনে নিয়েছে যুক্তরাজ্য। এই টিকার উদ্ভাবন এবং উৎপাদনে সহায়তার জন্য যুক্তরাজ্য সরকার প্রায় একশো কোটি পাউন্ড দিয়েছে।

অ্যাস্ট্রোজেনকা এই টিকায় মুনাফা না করার অঙ্গীকার করেছিল জানিয়ে অধিকারবিষয়ক বৈশ্বিক সংগঠন গ্লোবাল জাস্টিস কোম্পানিটির প্রতি তার হিসাব উন্মুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছে। গ্লোবাল জাস্টিসের মূল দাবি হচ্ছে যেহেতু সরকারের আর্থিক সহায়তায় এটির উদ্ভাবন সম্ভব হয়েছে, সেহেতু এর প্রযুক্তি জ্ঞানের ওপর কোনো কোম্পানির একচেটিয়া কর্তৃত্ব কাম্য নয়। এর প্রযুক্তি জ্ঞানের লাইসেন্স উন্মুক্ত করা হলে অন্যান্য কোম্পানি এবং সরকারগুলো এর উৎপাদনের ব্যবস্থা করতে পারে, যাতে মহামারি মোকাবিলায় সবাই উপকৃত হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও সবগুলো টিকার মেধাস্বত্ত্ব উন্মুক্ত করে দেওয়ার পক্ষে কথা বলছে। সংস্থার উদ্যোগে যে বৈশ্বিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে সেই কোভ্যাক্সের অংশীদার বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন অ্যাস্ট্রোজেনকার উৎপাদন-সহযোগী ভারতের সেরাম ইনিস্টিটিউটকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে।

আমরা গতসপ্তাহেই জেনেছি যে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার আলোচনায় কোভিডের টিকার মেধাস্বত্ত্ব সংরক্ষণ না করার জন্য উন্নয়নশীল দেশগুলো যে আহ্বান জানিয়েছিলো শিল্পোন্নত দেশগুলো তা নাকচ করে দিয়েছে। ফলে, এবিষয়ে কোনো সমঝোতা হয়নি। কিন্তু, পথও বন্ধ হয়নি। অক্সফোর্ড উদ্ভাবকদলের নেতা অবশ্য সোমবারই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে কোনো কোম্পানি যাতে এককভাবে এই মানবতার সম্পদ নিয়ে মুনাফা না করে তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন। অ্যাস্ট্রোজেনকার প্রধান নির্বাহীও একইদিনে এই টিকায় মুনাফা না করার ঘোষণা দেওয়ায় শেয়ারবাজারে সেদিনই তাদের শেয়ারের দাম এক ধাক্কায় চার শতাংশ পড়ে যায়।   

গত মে মাসে বিশ্বের ১৪০ জন রাষ্ট্রনেতা ও বিশিষ্ট নাগরিক এক যৌথবিবৃতিতে বলেছিলেন যে কোভিডের টিকা হতে হবে জনগণের টিকা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিচালনা পরিষদ ওর্য়াল্ড হেলথ অ্যাসেম্বলির অধিবেশনের প্রাক্কালে তাঁরা দাবি জানিয়েছিলেন যে টিকা  হতে হবে পেটেন্ট বা মেধাস্বত্ত্বমুক্ত, তা দ্রুত উৎপাদন করতে হবে এবং বিনামূল্যে বিতরণ করতে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগ কোভ্যাক্স এই লক্ষ্যে কিছুটা কাজ করলেও তার মাধ্যমে যে পরিমাণে টিকা নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে পৌঁছাবে তা ওইসব দেশের জনগোষ্ঠীর এক দশমাংশেরও চাহিদা পূরণে সক্ষম হবে না। তাছাড়া, যেসব দেশে টিকা উৎপাদন হচ্ছে, সেসব দেশের আগে অন্যদের পাওয়ার কোনো কারণ নেই।

গত আগস্টেই আমরা বলেছিলাম যে টিকা উৎপাদনে বাংলাদেশের অংশীদার হওয়ার চেষ্টা করা উচিত। কিন্তু, সেদিকে বেসরকারি ওষুধ প্রস্তুতকারকদের উৎসাহিত করতে সরকারের কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনা। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনায় উৎপাদনে অংশগ্রহণের যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল তারও কোনো অগ্রগতি ঘটেছে বলে মনে হয় না। 

টিকা কেনার জন্য দাতা দেশ সংস্থার কাছে ঋণ চাওয়া হয়েছে এবং মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে তিন কোটি টিকা কেনার চুক্তিও হয়েছে। সবচেয়ে কাছের বন্ধু প্রতিবেশি দেশ থেকে টিকা সংগ্রহে তৃতীয়পক্ষের প্রয়োজন কেন হলো, তা মোটেও স্পষ্ট নয়। সেরাম ইনিস্টিটিউটের মতো উৎপাদনে অংশ নেওয়ার সুযোগ যে আমাদের ছিলনা, তাও বিশ্বাস করা কঠিন। প্রচলিত অনেক রোগের টিকাই যেহেতু আমাদের দেশে তৈরি হয়, সেহেতু কিছু বিনিয়োগ ও সক্ষমতা বৃদ্ধির চেষ্টা করলে নিশ্চয়ই তা সম্ভব হতো। 

বিজ্ঞানীদের আশংকা, কোভিড সহসা নির্মূল হবে না এবং অন্যান্য ফ্লুর মতোই এর জন্য ফি বছরই টিকার প্রয়োজন হবে। টিকার জন্য তাই অন্যদের উপর নির্ভরশীল না হয়ে নিজেদের সক্ষমতা তৈরিই কি শ্রেয় নয়? সর্বসম্প্রতি সানোফি-জিএসকের টিকার পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য বিএসএমএমইউ যে উদ্যোগ নিয়েছে, তার পরিণতি যেন চীনা টিকার মতো না হয়। উদ্ভাবন ও উৎপাদনে অংশীদার হওয়াও কম গুরুত্বর্পূণ নয়।

(২৫ নভেম্বর, ২০২০-র প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত।)

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

Bangladesh is vexed by and wary of Modi’s unstinting support to Sheikh Hasina

In the run-up to Bangladesh’s general election in January 2014, New Delhi took the unusual step of sending a top diplomat from its external affairs ministry to Dhaka to persuade General Hussain Muhammaed Ershad, the country’s former military ruler, to participate in the polls. Big questions had been raised over the fairness of the election. The incumbent government was led by Sheikh Hasina’s Awami League, and the leader of the opposition Bangladesh Nationalist Party (BNP) had been placed under virtual house arrest, with police and roadblocks around her house in Dhaka. The BNP and other opposition parties were threatening to boycott the election. Ershad, the head of the Jatiya Party, was perceived as a potential kingmaker, able to bring to power whichever of Bangladesh’s two main parties he supported, but he was also threatening to withdraw from the election.  After a decade of Modi’s reign in India, people in Bangladesh are angry at their government cosying up to a Hindutva regime in N

একটি জরিপ, নৈরাশ্য ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রশ্ন

উন্নত গণতন্ত্রে সরকার , সরকারপ্রধান, ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দল এবং বিভিন্ন বিতর্কিত ইস্যুতে প্রায়ই জনমত জরিপ করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। কখনো বিশ্ববিদ্যালয়, কখনো সংবাদমাধ্যম, আবার কখনো বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এসব জরিপ করায়। বেশ কিছু পেশাদার জরিপকারী প্রতিষ্ঠানও আছে, যারা শুধু জরিপের কাজ করে। এসব জরিপ আমাদের গণমাধ্যমগুলোর অনলাইন ভোটের মতো নয়, যা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শুধু সেই ওয়েবসাইটের নিয়মিত ব্যবহারকারীদের মতামত ছাড়া আর কিছুই নয়। আমাদের দেশে গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনের প্রায় দুই দশক বার্ষিক জরিপে রাজনীতির গতিপ্রকৃতির চমৎকার প্রতিফলন দেখা যেত। কিন্তু গণতন্ত্রের ক্ষয়সাধনের সঙ্গে সঙ্গে সেই চর্চা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। ব্যবসায়িক প্রয়োজন ছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে জরিপ করতে গেলে সরকারের সায় আছে কিনা সেটা দেখা হয়, নইলে পেশাদার বিশেষজ্ঞরা বা তাঁদের প্রতিষ্ঠানগুলো ওই দায়িত্ব নিতে চান না। কথা বলার ভয়ের মতো মতামত জানতে চাওয়াতেও এক ধরনের ভয়ের আসর পড়েছে। গণতন্ত্র প্রসারে কাজ করা যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট, আইআরআই এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। তারা এখনো মাঝে মধ্যে স্পর্শকাতর রাজন

ভিসা নিষেধাজ্ঞা গুরুতর, সাংবাদিক নির্যাতন কী

একই দিনের দুটি সংবাদ শিরোনাম, ’৯ মাসে ২১৭ সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির শিকার: আইন ও সালিশ কেন্দ্র’ এবং ’পিটার হাসের বক্তব্য স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর চাপ, সমাবেশে সাংবাদিকনেতারা’। দুটো খবরই সাংবাদিকতা এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়ে। তবে একটি খবর, যাতে আছে সেই সব সাংবাদিকদের কথা, যাঁরা পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে শারীরিক ক্ষতি অথবা গ্রেপ্তার ও মামলার কারণে হয়রানির শিকার হয়েছেন; আর অন্যটিতে ভবিষ্যতে কোনো গণমাধ্যমকর্মী যুক্তরাষ্ট্র যেতে চাইলে ভিসা না পাওয়ার কারণে তিনি বা তাঁর যে সম্ভাব্য ক্ষতি হতে পারে, তা নিয়ে আশঙ্কা। সাংবাদিকদের নিপীড়ন–নির্যাতন ও হয়রানির বিষয়ে গবেষণার কাজ ও তা প্রকাশের দায়িত্ব পালন করেছে একটি মানবাধিকার সংগঠন। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসার দুশ্চিন্তায় প্রতিবাদী হয়েছেন সাংবাদিকদের অপেক্ষাকৃত নতুন একটি প্লাটফর্ম জাস্টিস ফর জার্নালিস্ট।  বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠনগুলোর নিয়মিত কাজের একটি হচ্ছে বিভিন্ন নিপীড়ন–নির্যাতন ও হয়রানির মত অধিকার লংঘনের তথ্য সংগ্রহ করা এবং তারই অংশ হিসাবে অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ পেশা সাংবাদিকতার ওপর তাদের আলাদা মনোযোগ। তাদের প্রকাশিত হিসাব