সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ইউরোপ আশান্বিত: বাইডেনের পররাষ্ট্রনীতির কেন্দ্রে গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও জলবায়ু

 

আমেরিকার নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন এবং কমলা হ্যারিস জুটির বিজয় নানা কারণে ঐতিহাসিক, সন্দেহ নেই বাইডেনের বিজয়কে কেউ কেউ পৃথিবীর যন্ত্রণামুক্তির সঙ্গে তুলনা করে বলেছেন, এর ফলে বিশ্ব উজ্জীবিত বোধ করছেফ্রম এগনি টু ইলেশন: দ্য ইলেকশন দ্যাট হ্যাজ ট্রান্সফিক্সড দা ওয়ার্ল্ডছিল গার্ডিয়ানের তাৎক্ষণিক শিরোনাম নির্বাচন নিয়ে যে ধরনের আশঙ্কা অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল, তা শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে এতে দেশটির গণতন্ত্রের শক্তিমত্তা প্রমাণিত হওয়ায় পাশ্চাত্যের দেশগুলো স্বস্তি ফিরে পেয়েছে
এই স্বস্তিবোধের কারণ প্রধানত দুটি: ওয়াশিংটনে ক্ষমতার পালাবদলের কারণে বিশ্ব ব্যবস্থায় ট্রাম্পের বিঘ্ন সৃষ্টির অবসান ঘটবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব এমন একজনের হাতে পড়ছে যাঁর অভিজ্ঞতার ঝুলি সম্ভবত সবচেয়ে সমৃদ্ধ তিনি আট বছর ভাইস-প্রেসিডেন্ট ছিলেন এবং অতীতে সিনেটেও পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন
আমেরিকায় সরকার বদলায়, বিদেশনীতি বদলায় না বলে যে ধারণা চালু আছে, তা অনেকাংশে সত্য হলেও এবার ব্যতিক্রমটা স্পষ্ট কেননা, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আমেরিকা ফার্স্ট নীতি নিয়ে মিত্রদের থেকে অনেকটাই দূরে সরে গিয়েছিলেন এবং তাঁর একলা চলার নীতির কারণে আন্তর্জাতিক পরিসরে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বের অবস্থান কিছুটা নড়বড়ে হয়ে পড়েছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, জলবায়ু চুক্তি এবং জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থার মতো বৈশ্বিক কাঠামোয় শূন্যস্থান পূরণে এগিয়ে আসছিল চীন এবং অন্যরা
গার্ডিয়ান জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট হিসাবে বিজয়ী ঘোষিত হওয়ার আগেই বাইডেনকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ফিজির প্রধানমন্ত্রী তিনি অভিনন্দনবার্তার মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের বিপদ মোকাবিলায় ভূমিকা নেওয়ার আহ্বানটিও যুক্ত করেছিলেন স্মরণ করা যেতে পারে যে নির্বাচনের পরদিন, অর্থাৎ নভেম্বর, জলবায়ু বিষয়ক প্যারিস চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাহার কার্যকর হয়েছে ফল ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ জো বাইডেন তখনই জানিয়ে দেন যে তিনি বিজয়ী হলে আমেরিকা প্যারিস চুক্তিতে ফিরবে এই নির্বাচনে বাংলাদেশের জন্য এটি একটি ভালো সংবাদ বিশ্বের যেসব দেশ জলবায়ু পরিবর্তনের বিধ্বংসী প্রভাবের ঝুঁকিতে আছে তার শীর্ষে থাকা দেশগুলোর অন্যতম বাংলাদেশ
জো বাইডেনের বিজয়ে বিশেষভাবে উজ্জীবিত হয়ে উঠেছে ইউরোপ উত্তর-আটলান্টিক সামরিক জোট ন্যাটোতে মিত্রদের সঙ্গে ট্রাম্পের যে এক ধরনের দূরত্ব তৈরি হয়েছিল তা মোটামুটি সবারই জানা ট্রাম্প মিত্রদের কাছ থেকে আরও বেশি অর্থের জন্য চাপ দেওয়া ছাড়াও বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সবাইকে আস্থায় নেওয়ার ধার ধারতেন না সিরিয়ায় আইসিসবিরোধী অভিযানে সফল হওয়ার পর মিত্রদের না জানিয়েই তিনি আমেরিকান সৈন্যদের প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন এতে কী ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল তার বিবরণ তখনকার প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিসের জবানিতে সাংবাদিক বব উডওয়ার্ড তাঁর বইতে লিখেছেন
ইউরোপীয় নেতাদের মধ্যে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ, স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেড্রো স্যানচেজ এবং আইরিশ প্রধানমন্ত্রী মাইকেল মার্টিন ভবিষ্যৎ সহযোগিতার বিষয়ে তাঁদের আশাবাদ প্রকাশ করেছেন এঁদের মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে সবচেয়ে স্পর্শকাতর অবস্থায় আছেন বরিস জনসন, ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সখ্য এবং ডানপন্থী জনতুষ্টিবাদী আদর্শের নৈকট্যের কারণে ইউরোপের সঙ্গে বিচ্ছেদ, ব্রেক্সিটের প্রশ্নে জো বাইডেন আগেই স্পষ্ট করে জানিয়েছিলেন যে আইরিশ শান্তিচুক্তির ক্ষতি হয় এমন কোনো পদক্ষেপকে তিনি সমর্থন করবেন না বিপরীতে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কোনো ধরনের চুক্তি ছাড়াই ইউরোপের সঙ্গে বিচ্ছেদকে উৎসাহিত করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী বরিস অবশ্য বাইডেনের বিজয় ঘোষিত হওয়ার সামান্য আগে জানিয়েছেন যে চুক্তির মাধ্যমেই বিচ্ছেদের চেষ্টা চলছে
জো বাইডেনের পররাষ্ট্রনীতি কী হবে তা গত মার্চেই তিনি স্পষ্ট করে জানিয়েছিলেন ফরেন অ্যাফেয়ার্স সাময়িকীর মার্চ-এপ্রিল সংখ্যায়আমেরিকাকে কেন আবারও নেতৃত্ব দিতে হবেশিরোনামে তিনি লেখেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মিত্র শরিকদের উপেক্ষা করেছেন, হেয় করেছেন এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে পরিত্যাগ করেছেন তিনি প্রতিপক্ষদের চাঙা করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের শত্রু-মিত্র নির্বিশেষে অনেকের সঙ্গে অপ্রয়োজনীয় বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু করেছেন বৈশ্বিক হুমকি মোকাবিলায় আমেরিকার নেতৃত্বদানের ভূমিকা ত্যাগ করেছেন সবচেয়ে গভীর ক্ষতি যেটি করেছেন তা হলো গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ থেকে সরে গেছেন
জলবায়ু পরিবর্তন, গণ অভিবাসন, প্রযুক্তিগত বাধা এবং সংক্রামক রোগের মতো বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি আরও জটিল এবং জরুরি যে সমস্যা বিস্তৃত হচ্ছে, তা হলো কর্তৃত্ববাদ, জাতীয়তাবাদ অনুদারবাদ গণতন্ত্রগুলো চরম দলীয়করণ, দুর্নীতি এবং চরম বৈষম্যের কারণে স্থবির হয়ে গেছে, মানুষকে সেবা দিতে পারছে না গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আস্থা কমছে ট্রাম্প এবং বিশ্বের জনতুষ্টিবাদী নেতারা ব্যক্তিগত এবং রাজনৈতিক সুবিধার জন্য এসব শক্তির প্রতি ঝুঁকে পড়েছেন
জো বাইডেন লিখেছেন, আগামী বছরের জানুয়ারিতে নতুন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব হবে এগুলো সামাল দেওয়া আমাদের সুনাম বাঁচানো, নেতৃত্বে আস্থা ফেরানো এবং নতুন চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় মিত্রদের সঙ্গে মিলে উদ্যোগ নেওয়া তিনি বলেছেন, তাঁর প্রথম কাজ হবে আমেরিকার গণতন্ত্র জোটের নবায়ন, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক স্বার্থকে সুরক্ষা করা এবং আবারও বিশ্বকে নেতৃত্ব দেওয়া তিনি বলছেন, আমেরিকার নিজের গণতন্ত্রে আগে সংস্কার করতে হবে, যাতে সারা বিশ্বে তা দৃষ্টান্ত হতে পারে সে জন্যে তিনি ভোটের অধিকার বিষয়ক আইন, রাজনীতির অর্থায়নের আইন এবং সরকারের স্বচ্ছতা জবাবদিহি নিশ্চিত করবেন
বিশ্বে গত পাঁচ বছরে গণতন্ত্রের অবনমন ঘটার বিষয়ে ফ্রিডম হাউসের পরিসংখ্যান উদ্ধৃত করে বাইডেন জানিয়েছেন তিনি বিশ্বের গণতান্ত্রিক নেতাদের একটি সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানাবেন যার লক্ষ্য হবে বিশ্বে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি সমর্থনের জন্য বিশ্ব যখন যুক্তরাষ্ট্রের দিকে তাকিয়েছে, তখন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্বৈরশাসকদের কথায় ভরসা রেখে গণতন্ত্রীদের অবজ্ঞা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত প্রশাসনের নেতৃত্ব দিয়ে তিনি বিশ্বের সব জায়গায় ক্লেপ্টোক্র্যাটদের লাইসেন্স দিয়েছেন তিনটি বিষয়কে তাঁর প্রশাসন অগ্রাধিকার দেবে: দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই, কর্তৃত্ববাদিতার বিরুদ্ধে দাঁড়ানো এবং মানবাধিকারকে এগিয়ে নেওয়া
গণতন্ত্র শীর্ষসম্মেলনে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরাও অংশ নেবেন এবং সেখান থেকে প্রযুক্তি কোম্পানি সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিগুলোর জন্য নীতিমালা তৈরিরও ইঙ্গিত রয়েছে তাঁর নিবন্ধে তিনি বলেছেন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং গণতান্ত্রিক সমাজকে সুরক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি বাক্‌স্বাধীনতা প্রযুক্তির মাধ্যমে বিদ্বেষমূলক মিথ্যা প্রচারের মাধ্যম হতে পারে না এসব কোম্পানিকে এটাও নিশ্চিত করতে হবে যে এসব প্রযুক্তি প্ল্যাটফর্ম যেন রাষ্ট্রের নজরদারির হাতিয়ারে পরিণত না হয়
বাইডেন তাঁর পররাষ্ট্রনীতি মধ্যবিত্তের পররাষ্ট্রনীতি হবে জানিয়ে লিখেছেন, চীন কিংবা অন্য কোনো দেশের বিপরীতে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকার জন্য গণতান্ত্রিক দেশগুলোর সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে, যাতে অর্থনৈতিক চর্চায় কেউ ক্ষমতার অপব্যবহার করতে না পারে এবং বৈষম্য কমে অর্থনৈতিক নিরাপত্তাকে জাতীয় নিরাপত্তা অভিহিত করে বাইডেন বলছেন, তাঁর বাণিজ্যনীতির লক্ষ্য হচ্ছে স্বদেশে মধ্যবিত্তকে শক্তিশালী করা চীনের বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্রের পিছিয়ে পড়ার কোনো কারণ নেই উল্লেখ করে তিনি বলছেন, সংরক্ষণবাদের বিপজ্জনক পথে বিশ্বের যে পশ্চাৎযাত্রা শুরু হয়েছে, তার বিপরীতে বাণিজ্যবাধাগুলো অপসারণ করতে হবে শ্রমিকদের স্বার্থ, পরিবেশ মধ্যবিত্তের মজুরি সুরক্ষা এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত হয় এমন বাণিজ্যবিধি তৈরির কাজে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্ব দেবে
চীন নিজস্ব রাজনৈতিক মডেলের প্রসার ঘটিয়ে এবং ভবিষ্যতের প্রযুক্তিতে বিনিয়োগের মাধ্যমে বিশ্বে  তার প্রভাব বাড়াচ্ছে উল্লেখ করে বাইডেন লিখেছেন, চীন হচ্ছে একটি আলাদা চ্যালেঞ্জ তাঁর কথায়চীনের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর হওয়ার প্রয়োজন নেই মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং অন্যান্য অন্যায় আচরণের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র মিত্রদের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে কাজ করতে পারে বলে মন্তব্য করে তিনি লিখেছেন যে চীন বিশ্ব অর্থনীতির অর্ধেক অংশকে কীভাবে উপেক্ষা করবে? এই শক্তিকেই কাজে লাগাতে হবে
জো বাইডেনের পররাষ্ট্রনীতিতে বৈশ্বিক হুমকিগুলো মোকাবিলায় সম্মিলিত ব্যবস্থা নেওয়ার কাজে যুক্তরাষ্ট্র শীর্ষ টেবিলের আসনে ফিরে যাবে তাঁর কথায় ৭০ বছর ধরে আমেরিকা এই কাজে নেতৃত্ব দিয়েছে, যে দায়িত্ব ট্রাম্প পরিত্যাগ করেছিলেন বিবিসি জানিয়েছে, তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাতেও যুক্তরাষ্ট্রকে ফিরিয়ে আনবেন
যুদ্ধ সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ের প্রসঙ্গে বাইডেন লিখেছেন, তিনি আগেও আফগানিস্তান এবং মধ্যপ্রাচ্যে আল-কায়েদা এবং আইসিস-বিরোধী মিশনে যুক্তরাষ্ট্রের মিশন সীমিত রাখার পক্ষে কথা বলেছেন তিনি এসব জায়গা থেকে সৈন্যদের ফিরিয়ে আনার ইঙ্গিত দিয়েছেন ওই সব দেশে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সহায়তায় স্পেশাল ফোর্সের শুধু কয়েকশো সদস্যকে রাখার পক্ষে তিনি উল্লেখ্য, ট্রাম্প নির্বাচিত হওয়ার আগে এসব সৈন্য প্রত্যাহারের অঙ্গীকার করেছিলেন কিন্তু বিদেশে মোতায়েন প্রায় দুই লাখেরও বেশি সৈন্যের মধ্যে তিনি মাত্র এক-দশামংশ ফেরাতে পেরেছেন বাইডেনের নিবন্ধে ইয়েমেনের যুদ্ধে সৌদি আরবকে দেওয়া সমর্থন বন্ধের কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে
পরমাণু অস্ত্রের বিস্তাররোধে ওবামা প্রশাসনের সময়ে সম্পাদিত ইরান চুক্তি থেকে ট্রাম্পের সরে আসার সমালোচনা করে বাইডেন লিখেছিলেন, এতে বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষুণ্ন হয়েছে এবং ইরান থেকে উত্তর কোরিয়া, রাশিয়া থেকে সৌদি আরবে পরমাণু অস্ত্রের প্রসার এবং নতুন অস্ত্র প্রতিযোগিতা শুরুর আশঙ্কা তৈরি হয়েছে তিনি লিখেছেন, তেহরান ওই চুক্তি কঠোরভাবে অনুসরণ করলে যুক্তরাষ্ট্র আবারও তাতে অংশ নেবে অস্থিতিশীলতা তৈরি করে ইরানের কোনো কার্যক্রম মোকাবিলার বিষয়ে অবশ্য তিনি দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়ারও অঙ্গীকার করেছেন ইসরায়েল প্রসঙ্গে তিনি শুধু বলেছিলেন যে দেশটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করায় আমেরিকা অঙ্গীকারাবদ্ধ উত্তর কোরিয়া বিপারমাণবিকীকরণে আলোচনা উদ্যোগ এগিয়ে নেওয়ার কাজটি দ্রুত শুরু করার কথাও তিনি বলেছেন
বাইডেন তাঁর পররাষ্ট্রনীতির যেসব ইঙ্গিত প্রায় ছমাস আগে দিয়েছেন, তা কতটা বাস্তবায়নযোগ্য সেই প্রশ্নও গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু, তার ঘোষিত লক্ষ্যগুলো গণতন্ত্র, মানবাধিকার জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিষয়গুলোতে যে আশাব্যঞ্জক তাতে সন্দেহ নেই

(৯ নভেম্বর, ২০২০-র প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত।)

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

Bangladesh is vexed by and wary of Modi’s unstinting support to Sheikh Hasina

In the run-up to Bangladesh’s general election in January 2014, New Delhi took the unusual step of sending a top diplomat from its external affairs ministry to Dhaka to persuade General Hussain Muhammaed Ershad, the country’s former military ruler, to participate in the polls. Big questions had been raised over the fairness of the election. The incumbent government was led by Sheikh Hasina’s Awami League, and the leader of the opposition Bangladesh Nationalist Party (BNP) had been placed under virtual house arrest, with police and roadblocks around her house in Dhaka. The BNP and other opposition parties were threatening to boycott the election. Ershad, the head of the Jatiya Party, was perceived as a potential kingmaker, able to bring to power whichever of Bangladesh’s two main parties he supported, but he was also threatening to withdraw from the election.  After a decade of Modi’s reign in India, people in Bangladesh are angry at their government cosying up to a Hindutva regime ...

অরাজনৈতিক আন্দোলনের করুণ রাজনৈতিক মূল্য

কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ ছাত্র–ছাত্রীদের আন্দোলনে  কদিন ধরে যা ঘটে চলেছে, তা যেমন বেদনাদায়ক, তেমনই নিন্দনীয় ও ক্ষোভের কারণ। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিতে ক্ষমতাসীন সরকারের সমর্থক এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর হাতে একইদিনে দেশের তিন জায়গায় ছয়জনের প্রাণহানির ঘটনা স্বাধীন বাংলাদেশে বিরল।  এবার আরও যেসব ঘটনা আমাদের স্তম্ভিত করেছে, অভিভাবকদের চোখ অশ্রুসিক্ত করেছে, এসব মৃত্যুর পরও সরকারের রাজনৈতিক দম্ভ বজায় রাখার চেষ্টা, যা আরও প্রাণহানির কারণ হয়েছে। ছয়জন তরুণের প্রাণ বিসর্জনের পরও কোটা সংস্কারের দাবিতে সরকার ”নীতিগতভাবে একমত” – একথাটি বলে  আলোচনায় না ডেকে সময়ক্ষেপণ করেছে। আইনমন্ত্রী কথাটি যখন বললেন, তার আগেই আরও জীবন গেল, শত শত মানুষ আহত হলো, দেশের সম্পদ নষ্ট হলো। রাজনৈতিক গরিমা ছাড়া এর আর কোনো কারণ আছে কি? ছাত্রলীগ পরিচয়ে অন্ত্রধারীদের তান্ডব, পুলিশের চরম নিষ্ঠুরতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের গড়পরতা মারধর ও লাঞ্চিত করার যে দৃশ্যগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে, তা কোনো অভিভাবকের পক্ষেই ভোলা সম্ভব নয়। এসব ঘটনার বিবরণ উদ্ধৃত না করে শুধু নিষ্ঠুর ...

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে স্বৈরশাসকের ফেরা সহজ

  গণতন্ত্রে উত্তরণে ব্যর্থতা ও স্বৈরতন্ত্রের নিকৃষ্টতম রুপ প্রত্যক্ষ করার পর অর্ন্তবর্তী সরকারের মেয়াদকালে যে সব বিষয়ে সংস্কারের আলোপ চলছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থা। এরশাদের সামরিক স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনকে গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যম হিসাবে যেভাবে প্রতিষ্ঠার কথা ছিল, তা থেকে প্রধান দুই দলই বিচ্যূত হয়েছিল। পরিণতিতে নির্বাচন শুধু ক্ষমতা দখলের হিংসাত্মক খেলায় পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নির্বাচনকে নানা রকম প্রহসনে পরিণত করে।  এই সমস্যার এক অতি সরলীকৃত সমাধান হিসাবে বলা হচ্ছে, দ্বিদলীয় রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে দেশে সত্যিকার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনব্যবস্থায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ধারণাকে একমাত্র বা চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে।  সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনে একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে তারা সংসদের আসন পাবে। এ আনুপাতিক পদ্ধতিতে প্রার্থীদের নাম দল আগাম ঘোষণা করতেও পারে, আবার না–ও পারে। নাম প্রকাশ করা হলে সেটা হব...