সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আমাদের কি `সর্বনাশ` হয়ে গেছে

 এক দশক বাদে বাজেট সহায়তার জন্য বাংলাদেশ আইএমএফের দ্বারস্থ হচ্ছে বলে খবর ছাপা হলে ২০ জুলাই অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বললেন, যদি প্রয়োজন হয় আমরা (ঋণ) নেব। কিন্তু এই মুহূর্তে আমাদের প্রয়োজন নেই` ( ২০ জুলাই, ২০২২, বিডিনিউজ ২৪)। মাত্র চার দিনের ব্যবধানে গত রোববার বাংলাদেশ আইএমএফের কাছে ঋণ চেয়ে চিঠি দিয়েছে বলে খবর দিয়েছে ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার। চাওয়া হচ্ছে ৪৫০ কোটি ডলার। ঋণ চাওয়ার কারণ চলতি হিসাবে লেনদেনের প্রয়োজন মেটানো। এটি হচ্ছে এযাবৎকালে আইএমএফের কাছে চাওয়া সবচেয়ে বড় ঋণ এবং এর জন্য যে অনেক কঠিন শর্ত মানতে হবে, তা-ও মোটামুটি নিশ্চিত। একই দিনের বাংলাদেশ প্রতিদিন জানিয়েছে, জাপানের আন্তর্জাতিক সহায়তা প্রতিষ্ঠান জাইকার কাছেও সাহায্যের অনুরোধ জানানোয় বাজেট-সহায়তা হিসাবে সংস্থাটি ৫০ কোটি ডলার দিতে রাজি হয়েছে। 


এদিনই দেশে খোলাবাজারে ডলারের দাম ১১২ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে বলে গণমাধ্যমের খবর। আইএমএফের ঋণের প্রয়োজন হবে কি না, সেটা যদি অর্থমন্ত্রী চারদিন আগে বুঝতে না পেরে থাকেন, তাহলে আগামী মাস কিম্বা তিন মাস পর আমাদের আয়-ব্যয়ের অবস্থা কী দাঁড়াবে, সে সম্পর্কে তাঁর আশাবাদে কি ভরসা রাখা চলে? কতটা তেল পোড়ানো যাবে, কিম্বা জীবনযাত্রায় কতটা পরিবর্তন আনতে হবে, খাবারের তালিকায় কী কী যোগ করা যাবে, বা বাদ দিতে হবে , সরকারের সে সব পরামর্শে কি আর আস্থা রাখা যায়?     


বাজারের নিজস্ব কিছু রীতিনীতি ও কলাকৌশল আছে। যে কারণে সরকার বলার আগেই বাজার চাহিদা ও সরবরাহের ভাবগতি ধরে ফেলে এবং নিজেরাই নানাধরণের পদক্ষেপ নিতে শুরু করে। ডলারের বাজারে দাম বাড়তে থাকাও তারই লক্ষণ। পাম্পগুলো যে জ্বালানি তেলের মাত্রা বেঁধে দিতে শুরু করেছে, সেটাও সরবরাহ পরিস্থিতি আঁচ-অনুমানের বিষয়। সরকার আন্তর্জাতিক বাজারের ভাব-গতি কখন, কতটা বুঝতে পেরেছে, তা বলা মুশকিল। সরকার নাগরিকদের যে ধরনের কষ্ট করতে বলছে, সরকারি ব্যয় কমানোর ক্ষেত্রে কি ততটা নজর দিয়েছে? সচিবালয় ও সরকারি দপ্তরগুলোর সামনে নির্ধারিত পার্কিং ছাড়িয়ে রাস্তার দুই ধারজুড়ে বিলাসবহুল গাড়িগুলোর সারি কতটা কমানো হয়েছে? সচিবালয় ও সরকারি দপ্তরগুলোর সামনে সব সময় যে পরিমাণে গাড়ি দেখা যায়, তার শতাংশ পরিমাণেও লন্ডনের ডাউনিং স্ট্রিট কিম্বা হোয়াইট হলের সামনে দেখা যাবে না। অপ্রিয় সত্য হচ্ছে এই আমলাদের আবার সরকারি ব্যবস্থায় ব্যাক্তিগত গাড়ি কেনার ঋণ ও তেল-চালকের খরচ দেওয়া হয়। প্রশ্ন করা যায়, প্রয়োজনের তুলনায় পদায়ন হয়ে আছেন কী বিপুল সংখ্যক পদস্থ কর্মকর্তা? শুধু সরকারি চাকরির সুবাদে অবসরের সময় পুরো পেনশন তুলে নেওয়ার পর ১৫ বছর পূর্ণ হওয়ায় কত লাখ লোককে আবারও পেনশন দেওয়া হচ্ছে?


মন্ত্রীরা জ্বালানি সংকটের কারণে শিল্পোন্নত দেশগুলোতেও যে পেট্রল, গ্যাস ও বিদ্যূতের দাম বেড়েছে, সেই নজিরগুলো তুলে ধরেন। এমনকি কোনো কোনো নেতা অষ্ট্রেলিয়া ও জাপানে লোডশেডিং আবিষ্কার করে ফেলেছেন। কিন্তু তাঁরা যা বলেন না, তা হচ্ছে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির চাপ কমাতে ওইসব দেশে সরকারগুলো নাগরিকদের কী ধরনের সহায়তা দিচ্ছে? জ্বালানি তেল হচ্ছে সরকারগুলো্র আবগারি শুল্ক (ডিউটি) আয়ের বড় উৎস। যুক্তরাজ্যে এই শুল্কে রেয়াত দেওয়া হচ্ছে। বৈদ্যূতিক ও হাইব্রিড গাড়ির জন্য সরকার ভর্তুকি দিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট বাইডেন তিন মাসের জন্য জ্বালানির ওপর ফেডারেল শুল্ক স্থগিত রাখার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন। ফ্রান্সে গ্যাসের দামের সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে এবং দেশটির বৃহত্তম গ্যাস কোম্পানি ইডিএফ-এর মালিকানা সরকার অধিগ্রহণ করেছে। তা ছাড়া মূল্যস্ফীতির কারণে জীবনযাত্রার বাড়তি ব্যয়ের চাপ কমাতে নিম্ন-আয়ের পরিবারগুলোর জন্য আলাদা আর্থিক সহায়তাও দেওয়া হচ্ছে। ব্যাক্তিগত গাড়ির ব্যবহার কমাতে জার্মান রেলওয়ে মাত্র ৯ ইউরো দিয়ে মাসিক টিকিট চালু করেছে, যা দিয়ে বাস, ট্রাম বা লোকাল ট্রেনে সব জায়গায় যাওয়া যাবে। তারা এখন পর্যন্ত গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির বোঝা ভোক্তাদের ওপর চাপিয়ে দেয়নি।  


এ ধরনের ব্যপক কল্যাণমূলক পদক্ষেপ আমাদের দেশে যে সম্ভব নয়, সেটা মেনে নিয়েও বলা যায় সীমিত আকারে সহায়তার কথা ভাবা দরকার। তবে অন্য নজিরটি সম্ভবত খুবই প্রাসঙ্গিক। যুক্তরাজ্য সরকার জ্বালানি খাতের বৃহৎ কোম্পানিগুলো গত কয়েক বছরে জ্বালানির বাজারে অস্থিরতার সুযোগে যে বিপুল মুনাফা করেছে, তার উপর ২৫ শতাংশ হারে বিশেষ কর (উইন্ডফল ট্যাক্স) আরোপ করেছে। বিবিসির হিসাবে এই জ্বালানি মুনাফার কর (এনার্জি প্রফিটস লেভি) বাবদ সরকার পাঁচশো কোটি পাউন্ড আয় করবে। ওই অর্থই ব্যয় হবে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধিতে কষ্টে পড়া লোকজনের সাহায্যে। আমাদের দেশে ক্যাপাসিটি চার্জের নামে গত এক দশকে যেসব কোম্পানিকে লাখো কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে, তাদের অতি মুনাফার ওপরও একইধরণের কর আরোপ করা সম্ভব। ক্ষমতাসীন দলের আশীর্বাদপ্রাপ্ত এসব সুবিধাভোগীদের ওপর বিশেষ কর আরোপের মতো পদক্ষেপ অবশ্য সরকার নেবে - এমন ভাবনা সম্ভবত দূরাশা মাত্র।       


জাতীয় রাজস্ব বোর্ড খরচ কমাতে কাগজের দুই দিকে প্রিন্ট করতে বলেছে, যা চলমান বৈশ্বিক সংকটের আগে থেকেই বিভিন্ন দেশ ও প্রতিষ্ঠান জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় করে আসছে। বোর্ডের আদেশে বিদ্যুৎ খাতে ২৫ শতাংশ এবং জ্বালানি খাতে ২০ শতাংশ খরচ সাশ্রয়ে্র কথা বলা হয়েছে। একইদিনে দেশের সব ব্যাংককে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির খরচ কমানোর নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ব্যয় সংকোচনের নির্দেশনা দিয়েছে। জরুরি ও অপরিহার্য ক্ষেত্র বিবেচনায় আপ্যায়ন ব্যয়, অন্যান্য মনিহারি, কম্পিউটার ও আনুষঙ্গিক, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম, আসবাব খাতে বরাদ্দ করা টাকার সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ব্যয় করা যাবে। দেশের অভ্যন্তরে প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রেও বরাদ্দ করা টাকার সর্বোচ্চ অর্ধেক ব্যয় করা যাবে। আর জ্বালানি খাতে বরাদ্দ করা টাকার সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশ ব্যয় করা যাবে। আর বিদ্যুৎ খাতে বরাদ্দ করা টাকার ২৫ শতাংশ সাশ্রয় করতে হবে। 


ধীরে ধীরে যেসব পদক্ষেপ ঘোষণা করা হচ্ছে, সেগুলো আরও আগেই হওয়া উচিত ছিল। অর্থমন্ত্রী যখন বাজেট দিলেন, তখনই বৈশ্বিক জ্বালানির বাজার চড়া, মুল্যস্ফীতি অসহনীয় এবং বিভিন্ন দেশ সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছিল। আমাদের কি তাহলে বিশ্বাস করতে হবে অর্থমন্ত্রী তখন এগুলো টের পাননি। নাকি তিনি তাঁর উন্নয়ন অগ্রযাত্রার বয়ান চালিয়ে গিয়ে সবাইকে বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছেন? সরকারি ব্যয় কমানোর ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দ্বিধাগ্রস্ততার কারণ আমরা সবাই জানি। সরকার ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য আমলাতন্ত্রকেই অপরিহার্য গণ্য করছে। অথচ, এধরনের সংকটে প্রয়োজন রাজনৈতিক মতৈক্য।  


রাজনৈতিক মতৈক্যের প্রশ্নে সরকারের মনোভঙ্গি বোঝার জন্য বিনাভোটের নির্বাচনে বৈধতার খোঁজে সঙ্গী করা দল জাতীয় পার্টির নেতা জি এম কাদেরের আক্ষেপের কথা স্মরণ করা যায়। ২০১৮ সালের নির্বাচনেও তাঁরা ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে জোট বেঁধে নির্বাচন করেও সরকারের ইচ্ছায় বিরোধী দলে আসীন। তিনি বলছেন, `দেশের সব সংকটে সহায়তা করতে চাইলেও সরকার জাতীয় পার্টিকে ডাকে না।  অথচ দেশের মানুষ উৎকণ্ঠার সাথে জানতে চাচ্ছে- দেশের বর্তমান পরিস্থিতি। কিন্তু সরকার কোনো কিছুই পরিষ্কার করছে না` (২৬ জুলাই, বিডিনিউজ ২৪)।


অন্য আরেকজন রাজনীতিককে দিয়ে লেখাটা শেষ করবো। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সদ্য সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম গত ৩০ জুন বাজেট পাস হওয়ার দিনে ফেসবুকে একটি কবিতা তুলে দিয়েছিলেন। কবিতাটি হচ্ছে পশ্চিম বঙ্গের কবি তারাপদ রায়ের `আমাদের সর্বনাশ হয়ে গেছে`। মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম সেদিনেই আমাদের সর্বনাশ হয়ে গেছে বুঝেছিলেন কি না, তা আর জিজ্ঞাসা করা হয় নি। ছোট ওই কবিতার প্রথম তিন লাইন আর শেষের দুটো লাইন পাঠকদের উদ্দেশ্যে তুলে দিলামঃ 


আমরা যে গাছটিকে কৃষ্ণচূড়া গাছ ভেবেছিলাম

যার উদ্দেশ্যে ধ্রূপদী বিন্যাসে কয়েক অনুচ্ছেদ প্রশস্তি লিখেছিলাম

গতকাল বলাই বাবু বললেন, ‘ঐটি বাঁদরলাঠি গাছ’।

- - -

আমরা বুঝতে পারিনি

আমাদের কবে সর্বনাশ হয়ে গেছে।


(২৮ জুলাই, ২০২২-এর প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত।)



মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

Bangladesh is vexed by and wary of Modi’s unstinting support to Sheikh Hasina

In the run-up to Bangladesh’s general election in January 2014, New Delhi took the unusual step of sending a top diplomat from its external affairs ministry to Dhaka to persuade General Hussain Muhammaed Ershad, the country’s former military ruler, to participate in the polls. Big questions had been raised over the fairness of the election. The incumbent government was led by Sheikh Hasina’s Awami League, and the leader of the opposition Bangladesh Nationalist Party (BNP) had been placed under virtual house arrest, with police and roadblocks around her house in Dhaka. The BNP and other opposition parties were threatening to boycott the election. Ershad, the head of the Jatiya Party, was perceived as a potential kingmaker, able to bring to power whichever of Bangladesh’s two main parties he supported, but he was also threatening to withdraw from the election.  After a decade of Modi’s reign in India, people in Bangladesh are angry at their government cosying up to a Hindutva regime ...

অরাজনৈতিক আন্দোলনের করুণ রাজনৈতিক মূল্য

কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ ছাত্র–ছাত্রীদের আন্দোলনে  কদিন ধরে যা ঘটে চলেছে, তা যেমন বেদনাদায়ক, তেমনই নিন্দনীয় ও ক্ষোভের কারণ। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিতে ক্ষমতাসীন সরকারের সমর্থক এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর হাতে একইদিনে দেশের তিন জায়গায় ছয়জনের প্রাণহানির ঘটনা স্বাধীন বাংলাদেশে বিরল।  এবার আরও যেসব ঘটনা আমাদের স্তম্ভিত করেছে, অভিভাবকদের চোখ অশ্রুসিক্ত করেছে, এসব মৃত্যুর পরও সরকারের রাজনৈতিক দম্ভ বজায় রাখার চেষ্টা, যা আরও প্রাণহানির কারণ হয়েছে। ছয়জন তরুণের প্রাণ বিসর্জনের পরও কোটা সংস্কারের দাবিতে সরকার ”নীতিগতভাবে একমত” – একথাটি বলে  আলোচনায় না ডেকে সময়ক্ষেপণ করেছে। আইনমন্ত্রী কথাটি যখন বললেন, তার আগেই আরও জীবন গেল, শত শত মানুষ আহত হলো, দেশের সম্পদ নষ্ট হলো। রাজনৈতিক গরিমা ছাড়া এর আর কোনো কারণ আছে কি? ছাত্রলীগ পরিচয়ে অন্ত্রধারীদের তান্ডব, পুলিশের চরম নিষ্ঠুরতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের গড়পরতা মারধর ও লাঞ্চিত করার যে দৃশ্যগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে, তা কোনো অভিভাবকের পক্ষেই ভোলা সম্ভব নয়। এসব ঘটনার বিবরণ উদ্ধৃত না করে শুধু নিষ্ঠুর ...

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে স্বৈরশাসকের ফেরা সহজ

  গণতন্ত্রে উত্তরণে ব্যর্থতা ও স্বৈরতন্ত্রের নিকৃষ্টতম রুপ প্রত্যক্ষ করার পর অর্ন্তবর্তী সরকারের মেয়াদকালে যে সব বিষয়ে সংস্কারের আলোপ চলছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থা। এরশাদের সামরিক স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনকে গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যম হিসাবে যেভাবে প্রতিষ্ঠার কথা ছিল, তা থেকে প্রধান দুই দলই বিচ্যূত হয়েছিল। পরিণতিতে নির্বাচন শুধু ক্ষমতা দখলের হিংসাত্মক খেলায় পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নির্বাচনকে নানা রকম প্রহসনে পরিণত করে।  এই সমস্যার এক অতি সরলীকৃত সমাধান হিসাবে বলা হচ্ছে, দ্বিদলীয় রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে দেশে সত্যিকার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনব্যবস্থায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ধারণাকে একমাত্র বা চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে।  সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনে একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে তারা সংসদের আসন পাবে। এ আনুপাতিক পদ্ধতিতে প্রার্থীদের নাম দল আগাম ঘোষণা করতেও পারে, আবার না–ও পারে। নাম প্রকাশ করা হলে সেটা হব...