সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

একটি ‘সফল‘ নির্বাচন এবং কিছু প্রশ্ন


একটিআন্তর্জাতিক মানেরনির্বাচন উপহার দেওয়ায় পুলিশের সদর দপ্তর সারা দেশে পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের জন্য বিশেষ ভোজের আয়োজন করেছে নির্বাচন কমিশন নিজেদের কর্মকে আন্তর্জাতিক মানের দাবি না করলেওসফলঅভিহিত করে পিঠা উৎসব করেছে নির্বাচনকে প্রহসন দাবি করে তার ফলাফল প্রত্যাখ্যানকারী বিরোধীরা যেদিন অভিযোগ জানাতে যাওয়ার কর্মসূচি দিয়েছিল, কমিশন সেই দিনটিতেই বাড়তি নিরাপত্তার ঘেরাটোপে পিঠা উৎসব করেছে এমনকি কমিশনের শীর্ষ আমলা অফিস চত্বরের কৃত্রিম জলাশয়ে বড়শি ফেলে মাছও ধরেছেন রকম একটি নির্বাচন আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানাতে ঘোষিত ফলাফলের বিজয়ী দলের প্রতিনিধিরা যখন কমিশনে গেছেন, তখন নতুন সরকারের উদ্দেশে তাঁরা কিছু সুযোগ-সুবিধা চেয়েছেন এগুলোকে দাবিনামা বলা যাবে, নাকি আবদার, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়

সবকিছুতে বিশ্বের রোল মডেল হওয়ার যে স্বপ্নের ঘোরে আমাদের অনেকেই আচ্ছন্ন হয়ে আছেন, তার ধারাবাহিকতায় নির্বাচনেওআন্তর্জাতিক মানেরলেবেল আঁটায় তাই বিস্ময়ের কিছু নেই তবে রকম একতরফা নির্বাচন দেখে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যে বিস্মিত হয়েছে, তাতে সন্দেহ নেই আর বিশ্বে যদি এই নির্বাচন কোনো আলোচনার জন্ম না দিত, তাহলে কমিশনেরই সফল হওয়ার প্রশ্ন উঠত না এর আগে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজর কেড়েছিল আর যেসব নির্বাচন কমিশন, সেগুলোর একটি আজিজ কমিশন, অন্যটি রকিব কমিশন আজিজ কমিশনেরসাফল্যছিল এক কোটি ভুয়া ভোটারের তালিকাভুক্তি, যার পরিণতিতে বিদেশিরা এসে টাকা, প্রযুক্তি পরামর্শ দিয়ে একটি ভালো ভোটার তালিকা নির্বাচনের ব্যবস্থা করে দিয়েছিল একইভাবে, বিতর্কিত রকিব কমিশনের কৃতিত্ব ছিল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার নির্বাচন করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজর কাড়া সে কারণে পাঁচ বছর ধরে সারা বিশ্বের প্রায় সবাই অংশগ্রহণমূলক, বিশ্বাসযোগ্য সুষ্ঠু নির্বাচনের জিগির করেছে রকিব কমিশন যদি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার নির্বাচন আয়োজন থেকে বিরত থাকত, তাহলে কি আমাদের নির্বাচন নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মাথাব্যথা থাকত? আবু হেনা কমিশন, সাঈদ কমিশন কিংবা শামসুল হুদা কমিশন রকম বিতর্কের জন্ম দিতে পারেনি!

নূরুল হুদা কমিশন একটা ব্যতিক্রমী নির্বাচন উপহার দিয়েছে কী কী কারণে নির্বাচনটি ব্যতিক্রমী, তা মোটামুটি সবারই জানা এবং সেই তালিকা এত দীর্ঘ হবে যে সংবাদপত্রের নিবন্ধে তার স্থান সংকুলান সম্ভব নয় বিএনপির জোট-ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনের অনিয়ম-কারচুপির তথ্যগুলোর বিবরণ এখনো সংকলন করছে সুতরাং, তার বিবরণগুলো জানতে আমাদের হয়তো আরও কিছুদিন অপেক্ষায় থাকতে হবে তবে বাম জোট গত শুক্রবার এক গণশুনানিতে তাদের প্রার্থীদের অভিজ্ঞতাগুলো তুলে ধরেছে 

প্রবীণ কমিউনিস্ট নেতা আজিজুর রহমান তাঁর নির্বাচনী এলাকায় প্রতিটি পথসভায় হামলার শিকার হওয়ার বিবরণ দিয়েছেন প্রতিটি কেন্দ্রে ৩০০ জন করে লাঠিধারীর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য মহাজোট প্রার্থীর আগাম ঘোষণার কথা জানিয়েছেন তিনি রাজশাহীর প্রার্থী আলফাজ হোসেন প্রায় গুম হওয়ার দশা থেকে ফিরে আসার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন, যার মূল্য হিসেবে তিনি তাঁর মুখ্য এজেন্ট হিসেবে আওয়ামী লীগের মনোনীত ব্যক্তিকে নিয়োগ দিতে বাধ্য হয়েছিলেন গাইবান্ধার একটি আসনের প্রার্থী ভোটকেন্দ্রগুলোয় কর্মকর্তাদের গরু জবাই করে ভুরিভোজ করার দৃশ্য বর্ণনা করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ নিয়ে গেলে তিনি বলেছেন পুলিশের কথা, পুলিশের কাছে গেলে ফল হয়েছে উল্টো দেশের প্রায় সব অঞ্চলের অভিজ্ঞতা একই

বাম জোট বিএনপির ত্রাণকর্তার ভূমিকা নেবেএমনটি নিশ্চয়ই কেউ দাবি করবেন না কিন্তু এই বাম জোটের প্রার্থীরা নিজেদের পাশাপাশি ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের অবরুদ্ধ দশারও বিবরণ দিয়েছেন বাম জোটের ভাষায় যেটি কলঙ্কিত নির্বাচন, তার সাফল্য উদ্যাপনে কমিশন মৎস্য শিকার পিঠা উৎসব আয়োজনের মাধ্যমে যে রুচির পরিচয় দিয়েছে, তার জন্য তারা স্মরণীয় হয়ে থাকবে প্রতিপক্ষকে আবারও জব্দ করতে পারায় ক্ষমতাসীন দলের আত্মতুষ্টি কিংবা অতি উচ্ছাসের কারণ থাকতে পারে কিন্তুনির্বাচন কমিশন এবং পুলিশের প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এমন আচরণের ব্যাখ্যা কী?

কমিশনের নাটকের এখানেই শেষ নয়; সেখানেও আছে ভিন্নমত কমিশনার মাহবুব তালুকদার নির্বাচনকে অবাধ সুষ্ঠু হয়েছেএমন কথা বলতে নারাজ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশনের অনুষ্ঠানে নির্বাচনের সময়ে দায়িত্ব পালনকারী সবাইকে ধন্যবাদ জানানোর বিষয়ে জানুয়ারি এক বিবৃতি দিয়ে তিনি আবারও বলেছেন যে রাজনৈতিক দলগুলো অংশগ্রহণ করায় নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হয়েছে কিন্তু নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হওয়ার মানে তা অবাধ সুষ্ঠু হওয়া নয় নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা গ্রহণযোগ্যতার বিষয়ে তিনি ওই অনুষ্ঠানে কোনো মন্তব্য করেননি বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করেছেন অংশগ্রহণমূলক, অবাধও সুষ্ঠু হিসেবে নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতার প্রশ্নটি গ্রহণযোগ্য বলে কমিশনের সবাই যদি একমত হতেন, তাহলে মাহবুব তালুকদারের আলাদা করে বিবৃতি দেওয়ার প্রয়োজন হলো কেন

মাহবুব তালুকদার রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণের কারণে নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক বলেছেন কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো তো নির্বাচনের একটি অংশমাত্র নির্বাচনের আসল অংশগ্রহণকারী তো দেশের মানুষসাধারণ ভোটার ভোটের দিনের যেসব চিত্র আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে উঠে এসেছে, তাতে দেশের বাইরে গণমাধ্যম কি অংশগ্রহণমূলক বলছে?

গত বছরটি ছিল সর্বজনীন মানবাধিকার সনদের ৭০তম বার্ষিকী ওই সনদের ২১ নম্বর ধারায় বলা আছে, ‘সরকারের কর্তৃত্ব বা ক্ষমতার ভিত্তি হবে জনগণের ইচ্ছা; যে ইচ্ছার প্রকাশ ঘটবে নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে এবং প্রকৃত (জেনুইন) নির্বাচনে, যে নির্বাচন হবে সর্বজনীন এবং সমভোটাধিকারের ভিত্তিতে এবং সেই নির্বাচন হতে হবে গোপন ভোটে অথবা অবাধে ভোট দেওয়ার সমতুল্য প্রক্রিয়ায়জাতিসংঘের মুখপাত্র এবং জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের বিবৃতিগুলো কি আন্তর্জাতিক মানের স্বীকৃতির পরিচয় দেয়?

এই নির্বাচন আরও যে কারণে বৈশ্বিক পরিসরে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে, তা হচ্ছে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের ব্যক্তিগত নৈতিকতার প্রশ্ন সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনারদের মর্যাদা সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের সমান এমন একটা দৃশ্য কি কল্পনা করা যায়, যেখানে কোনো বিচারপতি তাঁর ভাগনের মামলা বিচার করবেন? অথচ প্রধান নির্বাচন কমিশনারের ক্ষেত্রে তেমনটিই ঘটল তাঁর ওই নিকটাত্মীয়কে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে নিবৃত্ত করতে না পারলে তিনি নিজে ছুটিতে যেতে পারতেন, যেমনটি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা করে থাকেন অথচ দেখা গেল, সেই আসনেও তাঁর ভাগনের প্রতিদ্বন্দ্বী না পারলেন প্রচার চালাতে, না পারলেন ভোটকেন্দ্রে এজেন্ট দিতে বরং আহত হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাঠ ছাড়তে বাধ্য হলেন একজন রিটার্নিং কর্মকর্তার (গাইবান্ধার) আত্মীয় প্রার্থী হওয়ায় কমিশন তাঁকে দায়িত্ব থেকে অপসারণ করলেও কমিশনের প্রধান নিজের ক্ষেত্রে সেই নৈতিকতা দেখালেন না

সাবেক একজন নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন লিখেছেন, অতীতে ১৯৭৩ ছাড়া, কোনো ক্ষমতাসীন দল বহুদলীয় নির্বাচনে এত আসন পায়নি অন্যদিকে, মোট হাজার ৮৫৫ জন বৈধ প্রার্থীর মধ্যে হাজার ৪২২ প্রার্থী জামানতের টাকা হারিয়েছেন কোনো এক আসনে একজন প্রার্থী একটি ভোটও পাননি ইভিএমের ভোটের হার যেখানে গড়ে ৫১ শতাংশ, সেখানে জাতীয়ভাবে ভোটের হার ৮০ শতাংশ এই ফারাক কেন? তিনি কমিশনকে এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে বলেছেন

দুর্ভাগ্যজনকভাবে নির্বাচন কমিশনের এসব বিষয়ে ন্যূনতম আগ্রহ আছে বলেও মনে হয় না থাকার কথাও নয় কেননা, ব্যর্থতা স্বীকার করার সংস্কৃতি আমাদের দেশে নেই তা ছাড়া, নির্বাচন কমিশন যেখানে সরকারের ইচ্ছাপূরণের সহযোগী, সেখানে ব্যর্থতা স্বীকারের প্রশ্নই তো ওঠে না তবে তার চেয়েও বড় উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশনের জবাবদিহি আস্থা পুনরুদ্ধারের প্রশ্নগুলোর বদলে আমাদের সমাজের অগ্রসর অংশগুলো হয় ক্ষমতাসীন দলের অবিশ্বাস্য যোগ্যতার প্রশংসায় মেতে আছে, নয়তো বিএনপির ভূত-ভবিষ্যতের জল্পনায় মনোনিবেশ করেছে 

(১৪ জানুয়ারি, ২০১৯‘র প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত নিবন্ধ।)

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

একটি জরিপ, নৈরাশ্য ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রশ্ন

উন্নত গণতন্ত্রে সরকার , সরকারপ্রধান, ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দল এবং বিভিন্ন বিতর্কিত ইস্যুতে প্রায়ই জনমত জরিপ করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। কখনো বিশ্ববিদ্যালয়, কখনো সংবাদমাধ্যম, আবার কখনো বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এসব জরিপ করায়। বেশ কিছু পেশাদার জরিপকারী প্রতিষ্ঠানও আছে, যারা শুধু জরিপের কাজ করে। এসব জরিপ আমাদের গণমাধ্যমগুলোর অনলাইন ভোটের মতো নয়, যা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শুধু সেই ওয়েবসাইটের নিয়মিত ব্যবহারকারীদের মতামত ছাড়া আর কিছুই নয়। আমাদের দেশে গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনের প্রায় দুই দশক বার্ষিক জরিপে রাজনীতির গতিপ্রকৃতির চমৎকার প্রতিফলন দেখা যেত। কিন্তু গণতন্ত্রের ক্ষয়সাধনের সঙ্গে সঙ্গে সেই চর্চা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। ব্যবসায়িক প্রয়োজন ছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে জরিপ করতে গেলে সরকারের সায় আছে কিনা সেটা দেখা হয়, নইলে পেশাদার বিশেষজ্ঞরা বা তাঁদের প্রতিষ্ঠানগুলো ওই দায়িত্ব নিতে চান না। কথা বলার ভয়ের মতো মতামত জানতে চাওয়াতেও এক ধরনের ভয়ের আসর পড়েছে। গণতন্ত্র প্রসারে কাজ করা যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট, আইআরআই এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। তারা এখনো মাঝে মধ্যে স্পর্শকাতর রাজন

ভিসা নিষেধাজ্ঞা গুরুতর, সাংবাদিক নির্যাতন কী

একই দিনের দুটি সংবাদ শিরোনাম, ’৯ মাসে ২১৭ সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির শিকার: আইন ও সালিশ কেন্দ্র’ এবং ’পিটার হাসের বক্তব্য স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর চাপ, সমাবেশে সাংবাদিকনেতারা’। দুটো খবরই সাংবাদিকতা এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়ে। তবে একটি খবর, যাতে আছে সেই সব সাংবাদিকদের কথা, যাঁরা পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে শারীরিক ক্ষতি অথবা গ্রেপ্তার ও মামলার কারণে হয়রানির শিকার হয়েছেন; আর অন্যটিতে ভবিষ্যতে কোনো গণমাধ্যমকর্মী যুক্তরাষ্ট্র যেতে চাইলে ভিসা না পাওয়ার কারণে তিনি বা তাঁর যে সম্ভাব্য ক্ষতি হতে পারে, তা নিয়ে আশঙ্কা। সাংবাদিকদের নিপীড়ন–নির্যাতন ও হয়রানির বিষয়ে গবেষণার কাজ ও তা প্রকাশের দায়িত্ব পালন করেছে একটি মানবাধিকার সংগঠন। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসার দুশ্চিন্তায় প্রতিবাদী হয়েছেন সাংবাদিকদের অপেক্ষাকৃত নতুন একটি প্লাটফর্ম জাস্টিস ফর জার্নালিস্ট।  বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠনগুলোর নিয়মিত কাজের একটি হচ্ছে বিভিন্ন নিপীড়ন–নির্যাতন ও হয়রানির মত অধিকার লংঘনের তথ্য সংগ্রহ করা এবং তারই অংশ হিসাবে অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ পেশা সাংবাদিকতার ওপর তাদের আলাদা মনোযোগ। তাদের প্রকাশিত হিসাব

ভারত কেন গণতন্ত্রের বদলে স্থিতিশীলতার কথা বলছে

শুরুতেই চলতি সপ্তাহের দুটো খবরের দিকে পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। প্রথমটি  বাংলাদেশের সরকারি বার্তা সংস্থা, বাসসের  ১৭ ডিসেম্বরের একটি প্রতিবেদন। এতে তারা জানিয়েছে, ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম জে আকবর বলেছেন, ’প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী। কারণ, তিনি স্বৈরাচার থেকে  দেশকে মুক্ত করেছেন।’ ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ‘৫২ বছরে বাংলাদেশের অর্জন এবং আগামী দশকগুলোতে এই অঞ্চলে এবং এর বাইরে দেশটির অবস্থান’ শীর্ষক একটি আলোচনায় তিনি ছিলেন মূল বক্তা। তিনি আসন্ন নির্বাচন প্রসঙ্গে বলেন, ’বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকায় তিনি এখানে দারুণ আনন্দ দেখতে পাচ্ছেন।’   দ্বিতীয় খবরটিও ভারতের আরেকজন সাবেক কূটনীতিকের বক্তব্যসম্পর্কিত, যা তিনি ১৮ ডিসেম্বর ঢাকাতেই একটি দৈনিকের আয়োজিত অনুষ্ঠানে বলেছেন। বাংলাদেশে ভারতের সাবেক হাইকমিশনার পঙ্কজ সরণ বলেছেন, ‘বাংলাদেশের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় কে নির্বাচিত হবেন, সে বিষয়ে দেশের জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এটা বোঝা যে নির্বাচনে আসতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘ভারত গণতন্