সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

জনমত জরিপ ও নির্বাচনী ইশতেহার

বাংলাদেশে অনেক দিন ধরেই নির্বাচনকেন্দ্রিক স্বাধীন, বস্তুনিষ্ঠ ও বিশ্বাসযোগ্য জনমত জরিপ হয় না। সেদিক থেকে বেসরকারি উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান ব্র্যাকের জরিপটি কিছুটা হলেও জনমানসের গতি-প্রকৃতির ওপর আলোকপাত করেছে। নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের ইশতেহারকে দেশের ৮৩ শতাংশ মানুষ গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করে এবং প্রায় ৭ শতাংশ ইশতেহারের আলোকে ভোট দেন—এটি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। ভোটের হিসাবে প্রধান দুই দলের সমর্থনের হার খুব কাছাকাছি হওয়ায় এই ৭ শতাংশ ভোটও নির্বাচনের ফল ঘুরিয়ে দিতে পারে।
বলে রাখা ভালো যে বেসরকারী উদ্যোগে দেশীয় কোনো ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠান জনমত জরিপের উদ্যোগ না নিলেও ক্ষমতাসীন দলের অনেকগুলো নিজস্ব জরিপের কথা আমরা  শুনেছি। এরকম একটি সাম্প্রতিক জরিপে কোন দল সম্ভাব্য কত আসন বা কত শতাংশ ভোট পেতে পারে তাঁরা শুধু সেটুকু তথ্য প্রকাশ করলেও পুরো জরিপটি প্রকাশ না করায় তার খুঁটিনাটি জানা যায় নি। ফলে, অনেক প্রশ্নেরই উত্তর মেলেনি।

ব্র্যাকের জরিপের ফল বলছে, এই নির্বাচনে ভোটাররা পাঁচটি ইস্যুকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন, যার শীর্ষে আছে কর্মসংস্থান—প্রায় ২৮ শতাংশ। এরপর যথাক্রমে পরিবহন, শিক্ষা, সুষ্ঠু নির্বাচন এবং মাদক নিয়ন্ত্রণ। নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া প্রয়োজন মনে করছে প্রায় ১৮ শতাংশ মানুষ। জরিপটি যেহেতু সেপ্টেম্বর মাসের, অর্থাৎ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগের, সেহেতু ধারণা করা অযৌক্তিক হবে না যে সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে মানুষের মধ্যে উদ্বেগ এখন আরও বেড়েছে। অন্তত জন–আলোচনায় সে রকমই দেখা যায়।
প্রধান দুই দল এবং জোটের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষিত হওয়ায় এখন প্রতিদ্বন্দ্বীদের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক অগ্রাধিকারগুলো স্পষ্ট হয়েছে। মোটাদাগে উভয় পক্ষের ইশতেহারের ফারাকটা নীতিগত। আওয়ামী লীগের সরকার পরিচালনার ভিত্তি চলমান নীতিগুলোর ধারাবাহিকতায় আরও প্রবৃদ্ধি, উন্নয়ন এবং মুক্তিযুদ্ধের ভাবাদর্শ। মনে রাখা দরকার, মুক্তিযুদ্ধের ভাবাদর্শের পরিধি ও ব্যাখ্যার বিষয়টি দেশের রাজনৈতিক বিভাজনের একটি বড় কারণ। এর বিপরীতে ঐক্যফ্রন্টের নীতির ভিত্তি গণতন্ত্রের পুনরুজ্জীবন ও জাতীয় আপসরফা বা রিকনসিলিয়েশন, আইনের শাসন বা সুশাসন এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন।
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের বিষয়টি ক্ষমতাসীন জোটের বাইরের দলগুলো—যেমন বাম জোটের ইশতেহারেও অগ্রাধিকার পেয়েছে। ঐক্যফ্রন্ট ও বাম জোট উভয়েই ২০১৪–এর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার নির্বাচনকে প্রহসন অভিহিত করেছে এবং বলেছে, দেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার ক্রমে সংকুচিত হয়েছে। ঐক্যফ্রন্ট বলেছে, ‘জনগণের ন্যূনতম গণতান্ত্রিক অধিকার ক্ষুণ্ন করে এই রাষ্ট্রকে পূর্ণ স্বৈরতন্ত্রের পথে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’ আর বাম জোট দেখছে, ‘নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগে ব্যক্তিকেন্দ্রিকতার বিপদ’ এবং সে জন্য তারা রাজনৈতিক সংস্কারের কথা বলছে।
আওয়ামী লীগের ইশতেহারে ‘জনগণের ক্ষমতায়ন’ পর্বে গণতন্ত্র, নির্বাচন ও কার্যকর সংসদ উপশিরোনামে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা পেয়েছে দাবি করে বলা হয়েছে, গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ এগিয়ে চলছে। সংসদ কীভাবে কার্যকর হবে, তার কোনো পথনির্দেশ দেওয়া হয়নি। সোজা কথায়, দেশের গণতন্ত্রে কোনো সংকট বা ঘাটতির স্বীকৃতি দলটির ইশতেহারে নেই এবং গত পাঁচ বছরের একজোটীয় শাসনকেই তারা গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ হিসেবে তুলে ধরেছে। এখানে স্মরণ করা যেতে পারে, দশম সংসদের একতরফা নির্বাচনের পটভূমিতে দলটি গণতান্ত্রিক বৈধতার সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছিল। সে কারণে ২০১৩–এর ১৯ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী অল্প সময়ের মধ্যেই আরেকটি নির্বাচনের কথা বলেছিলেন। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দলের বিজয় ঘোষিত হওয়ার পর ২০১৪–এর ৬ জানুয়ারির সংবাদ সম্মেলনেও তিনি বলেছিলেন, ‘আগামী নির্বাচন সম্পর্কে আলোচনা করেই সমাধান করা যাবে।’
অবশ্য, ওই দুবারই প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গ ছাড়ার জন্য বিএনপির প্রতি শর্ত দিয়েছিলেন। বিএনপি জামায়াতের সঙ্গ ছাড়েনি এবং এবারও আওয়ামী লীগের তৃতীয় মেয়াদে ভোট চাওয়ার অন্যতম যুক্তি: স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে যেন স্বাধীনতাবিরোধী কেউ ক্ষমতায় না থাকে। তবে, স্বাধীনতাবিরোধী হিসেবে জামায়াতকে নিয়ে আওয়ামী লীগের এই অবস্থানও প্রশ্নবিদ্ধ হতে বাধ্য, কেননা তারা গত পাঁচ বছরে দলটিকে নিষিদ্ধ করেনি এবং এবারের ইশতেহারেও সে রকম কোনো অঙ্গীকার নেই।
ইশতেহার প্রকাশের পর স্পষ্ট হয়েছে, দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ প্রশ্নে সরকারের সঙ্গে বিরোধীদের ব্যবধান অপরিবর্তিত রয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বিলোপের পর গণতন্ত্রের অন্যতম প্রধান উপাদান নির্বাচনব্যবস্থায় যে ধারাবাহিক বিকৃতি এবং অনাচার শুরু হয়েছে, তার স্বীকৃতি ও সমাধান ছাড়া এই সংকট নিরসনের কোনো সম্ভাবনাই নেই। একতরফা নির্বাচন এবং বিরোধী দলের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাজ করতে না দেওয়া ও হয়রানির যেসব নজির গত পাঁচ বছরে তৈরি হয়েছে, সেই ধারাবাহিকতাতেই কথিত ‘গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ’ চলবে বলে ধরে নেওয়া যায়।
উভয় পক্ষের ইশতেহারে কিছু বিষয় উপেক্ষিতও হয়েছে। দেশ থেকে যে বিপুল পরিমাণে সম্পদ বিদেশে পাচার হয়েছে, সে বিষয়ে কোনো ইশতেহারই আশা জাগায় না। অথচ সর্বসাম্প্রতিক হিসাব বলছে, ২০১৪ সালে প্রায় ৭৩ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে এবং ২০০৫–এর পর থেকে ১০ বছরে পাচার হওয়া টাকার পরিমাণ প্রায় ৬ লাখ কোটি। এই টাকা দেশে থাকলে তা দিয়ে কত লাখ তরুণের কর্মসংস্থান সম্ভব হতো? সেই টাকা ফিরিয়ে আনার কথায় কেন কেউ জোর দেবে না? নাকি তাতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির রাজনীতির যাঁরা খরচ জোগান, তাঁরা রুষ্ট হবেন? আওয়ামী লীগ আগের দুটি নির্বাচনে এ বিষয়ে অঙ্গীকার করলেও তাদের আমলে এটি অব্যাহতভাবে বেড়েছে। এ বিষয়ে কেন কোনো সাফল্য নেই, তারও কোনো ব্যাখ্যা এতে নেই। আর ঐক্যফ্রন্ট পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনাকে খুব একটা অগ্রাধিকার দিয়েছে বলে দেখা যাচ্ছে না।
আর্থিক খাতের ভয়াবহ অনিয়ম-জালিয়াতির প্রতিকার কীভাবে হবে, সেই প্রশ্নেও কোনো সুদৃঢ় অঙ্গীকার নেই। অথচ এসব আর্থিক জালিয়াতি ও অবৈধ সুবিধাভোগীদের অনেকেই এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন। এ ধরনের অনিয়ম ও অবৈধ সুবিধার মাত্রা বোঝার জন্য এখানে দু–একটি উদাহরণ টানা অপ্রাসঙ্গিক হবে না। ঢাকারই একটি আসনে একজন প্রার্থীর এলাকায় ভোটার আছেন সাড়ে চার লাখ। সেই প্রার্থীকে রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলো যথেচ্ছ পরিমাণে সুবিধা দিয়েছে। এর মধ্যে শুধু অগ্রণী ব্যাংকের মওকুফ করা সুদের পরিমাণ ২৩০ কোটি টাকা। অর্থাৎ, ওই একজন ব্যক্তিকে ওই বেআইনি সুবিধাটুকু না দিয়ে সরকার বরং তার নির্বাচনী এলাকায় ভোটারপ্রতি ৫ হাজার টাকা করে অনুদান দিতে পারত। অন্যান্য ব্যাংক এবং শেয়ারবাজার থেকেও তাঁর বিরুদ্ধে শত শত কোটি টাকা অন্যায়ভাবে হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ আছে। ফারমার্স ব্যাংকের কেলেঙ্কারির কথা আমরা সবাই জানি, যে ব্যাংকটিকে বাঁচাতে সরকার রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলো থেকে যে টাকার সংস্থান করে দিয়েছে, তার পরিমাণ হাজার কোটির বেশি। অথচ ওই ব্যাংকের উদ্যোক্তা চেয়ারম্যানকে আমানতকারীদের আমানত নয়ছয় করার জন্য বিচারের মুখোমুখি না করে আবারও মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগের ইশতেহারে তেমন চমক নেই। ডিজিটাল (ভার্সন) ২–ও ধারাবাহিকতায় প্রত্যাশিত বিষয়। তবে ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহার এমন সব সম্ভাবনার কথা বলেছে, যাকে এমনকি সরকার সমর্থকেরাও ‘অবিশ্বাস্য’ (টু গুড টু বি ট্রু) অভিহিত করেছেন। জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ হিসেবে নির্বাচনব্যবস্থার সংস্কার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, ক্ষমতার ভারসাম্য তৈরি করা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আদালতের ক্ষেত্রে যেসব পরিবর্তনের কথা বলেছে, তা দেশে গুণগত রূপান্তর ঘটানোর জন্য প্রয়োজন। কিন্তু জোটের প্রধান দল বিএনপির অতীত রেকর্ড এগুলোর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ তৈরি করে। অনেকের ধারণা, উদার গণতন্ত্রী ড. কামাল হোসেনের কারণেই ইশতেহারে এসব অঙ্গীকার যুক্ত হয়েছে। এবং স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, যেহেতু তিনি নির্বাচন করছেন না এবং ভবিষ্যতে সরকারের কোনো দায়িত্ব গ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন, সেহেতু এসব অঙ্গীকার বাস্তবায়নে তিনি কোনো ভূমিকা রাখতে আদৌ সক্ষম হবেন কি?
এবারের নির্বাচনে তরুণদের ভূমিকা নিয়ে ইতোমধ্যে অনেক কথাই হয়েছে এবং  উচ্চ প্রবৃদ্ধিতে উচ্চহারে ব্র্যাকের জরিপেও দেখা যাচ্ছে তরুণদের প্রধান সমস্যা কর্মসংস্থানের কর্মসূচির বিশ্বসযোগ্যতা ভোটের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় প্রভাবক হিসাবে কাজ করবে। বিষয়টিতে উভয় জোটের লক্ষ্য খুবই কাছাকাছি। পাঁচ বছরে সোয়া থেকে দেড় কোটি কর্মসংস্থান। তবে, বিশ্বাসযোগ্যতার প্রশ্নে উচ্চ প্রবৃদ্ধিতে কেন উচ্চহারে কাজের ব্যবস্থা হয় নি সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। 

ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহারে সব উন্নয়ন প্রকল্প চালু থাকবে বলে যে অঙ্গীকার করা হয়েছে, তা খণ্ডিত ও অস্পষ্ট। পদ্মা সেতু কিংবা বড় বড় রাস্তা ও উড়ালসড়কের মতো অবকাঠামোর বিষয়ে আশ্বস্ত করার জন্য হয়তো তাদের এই বক্তব্য যথেষ্ট। কিন্তু বিতর্কিত রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, দ্বিতীয় আরেকটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রস্তাব, বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন ধ্বংসকারী রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প, ফুলবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প এবং মহাকাশে দ্বিতীয় আরেকটি উপগ্রহ পাঠানোর উদ্যোগের বিষয়ে ঐক্যফ্রন্টের অবস্থান কী, তা স্পষ্ট নয়। পারমাণবিক বিদ্যুৎ ও সুন্দরবন ধ্বংসের প্রকল্প জনমত উপেক্ষা করে চাপিয়ে দেওয়ার বিষয়টি জোট নেতাদের অজানা নয়। তাই এ ধরনের বিষয়কে উপেক্ষা করা অনাকাঙ্ক্ষিত।
(নিবন্ধটি ২২ ডিসেম্বর, ২০১৮‘র প্রথম আলো পত্রিকায় কিছুটা সংক্ষেপিত আকারে প্রকাশিত।)

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে স্বৈরশাসকের ফেরা সহজ

  গণতন্ত্রে উত্তরণে ব্যর্থতা ও স্বৈরতন্ত্রের নিকৃষ্টতম রুপ প্রত্যক্ষ করার পর অর্ন্তবর্তী সরকারের মেয়াদকালে যে সব বিষয়ে সংস্কারের আলোপ চলছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থা। এরশাদের সামরিক স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনকে গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যম হিসাবে যেভাবে প্রতিষ্ঠার কথা ছিল, তা থেকে প্রধান দুই দলই বিচ্যূত হয়েছিল। পরিণতিতে নির্বাচন শুধু ক্ষমতা দখলের হিংসাত্মক খেলায় পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নির্বাচনকে নানা রকম প্রহসনে পরিণত করে।  এই সমস্যার এক অতি সরলীকৃত সমাধান হিসাবে বলা হচ্ছে, দ্বিদলীয় রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে দেশে সত্যিকার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনব্যবস্থায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ধারণাকে একমাত্র বা চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে।  সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনে একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে তারা সংসদের আসন পাবে। এ আনুপাতিক পদ্ধতিতে প্রার্থীদের নাম দল আগাম ঘোষণা করতেও পারে, আবার না–ও পারে। নাম প্রকাশ করা হলে সেটা হব...

How to Describe the Awami League Accurately?

In an article titled ‘How Not to Describe the Awami League’ , published in this paper, British journalist David Bergman rightly underscores the importance of accuracy in labeling a political party—particularly when such labels carry potential legal consequences. Those familiar with Bergman’s work over the years know that he has consistently taken on politically sensitive and controversial subjects, often at significant personal and professional cost. His courage and commitment to journalistic integrity deserve recognition. Bergman is correct in asserting that “while serious criticisms of the Awami League are both valid and necessary, they must be proportionate and grounded in fact.” His analysis focuses primarily on the legal validity and appropriateness of labeling the Awami League as “fascist” or “Nazi.” He argues that comparing the party to the Nazi regime trivialises the scale of Nazi atrocities and misrepresents the complexities of Bangladeshi politics. Indeed, any historical comp...

সংবিধান সংস্কারে জাতীয় সমঝোতা কি অসম্ভব কিছু

সংবিধান সংস্কার কমিশন সংবিধান নিয়ে যে জনমত সংগ্রহ ও জাতীয়ভিত্তিক সংলাপগুলো করছে, তাতে বেশ ভালোই সাড়া মিলছে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন নাগরিক গোষ্ঠী, রাজনৈতিক দল, বিদ্বজ্জনেরা কেমন সংবিধান দেখতে চান, তা নিয়ে বিতর্ক ও মতবিনিময় করছেন। দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যত নির্ধারণের মৌলিক ভিত্তি তথা রাষ্ট্রকাঠামো ও ক্ষমতার বিন্যাস সম্পর্কে নাগরিকদের এতটা উৎসাহ সম্ভবত: এর আগে আর দেখা যায়নি। সংস্কার কমিশনের সূত্র থেকে জেনেছি, অনলাইনে তাঁরা অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছেন এবং মতামত দেওয়ার জন্য সপ্তাহখানেক সময় বাকি থাকতেই ৩০ হাজারেরও বেশি পরামর্শ তাঁদের কাছে জমা পড়েছে। নাগরিকদের এ আগ্রহ থেকে যে বার্তাটি স্পষ্ট হয়, তা হচ্ছে তাঁরা চান তাঁদের মতামত যেন গুরুত্ব পায়। দীর্ঘ ১৫ বছরের স্বৈরশাসনে ক্ষমতাধরদের কিছু বলার বা তাঁদের প্রশ্ন করার কোনো অধিকার সাধারণ মানুষের ছিল না। প্রতি পাঁচ বছরে একবার ভোটের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচনের যে অধিকার, সেটুকুও তাঁরা হারিয়েছিলেন। এই পটভূমিতে নাগরিকদের প্রথম চাওয়া হচ্ছে, তাঁদের হারানো অধিকার ফিরে পাওয়া। ভোট দেওয়ার অধিকার, কথা বলার অধিকার, প্রশ্ন করার অধিকার, সংগঠন করার...