সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

নির্বাচনী রাজনীতি ও সাংবাদিকতা!

বর্ষীয়ান রাজনীতিক ও আইনজ্ঞ ড. কামাল হোসেন যেসব সাংবাদিককে পয়সা খেয়ে প্রশ্ন করতে এসেছেন কি না বলে ধমক দিয়েছেন, সেটা তিনি ঠিক করেননি। তবে তার জন্য স্বল্পতম সময়ে দুঃখ প্রকাশ করে ঠিক কাজটিই করেছেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, সাংবাদিক হিসেবে আমরা ঠিক কাজটি করছি কি না? সরকার-সমর্থক হিসেবে পরিচিত ইউনিয়নের প্রতিবাদ সমাবেশ দেখে অন্তত তা মনে হয় না। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচার কমিটির সদস্য যেসব সাংবাদিক, তাঁদের কথা বাদ দিলেও প্রধানমন্ত্রীর তথ্যবিষয়ক উপদেষ্টার অংশগ্রহণ ও বক্তৃতায় বিষয়টির রাজনৈতিক রূপ স্পষ্ট হয়েছে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতিটি কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থেকে ঘটানো না হলেও এর প্রতিক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ কি আর অস্বীকার করা চলে?
একজন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক কাজী আব্দুল হান্নান ফেসবুকে লিখেছেন, সাংবাদিকের কাজ খবর সংগ্রহ করা, খবর তৈরি করা নয়। বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে যেসব সাংবাদিক গিয়েছিলেন, তাঁদের কাজ ছিল কারা সেখানে গেলেন এবং সেখানে কী কী ঘটল, তার বিবরণ সংগ্রহ করে রিপোর্ট করা। নির্বাচনে কোন দল কার সঙ্গে জোট করেছে, কেন করেছে, সেটা জানার জায়গা স্মৃতিসৌধ নয়। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, একটা খবর তৈরির উদ্দেশ্য থেকে সেখানে এই প্রশ্নের অবতারণা। এই যুক্তি নাকচ করে দেওয়া সহজ নয়; বিশেষ করে প্রশ্নটি যেখানে নতুন নয়। এই প্রশ্নের উত্তর তিনি আগেও দিয়েছেন, স্পষ্টতই তা অনেকের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। স্মৃতিসৌধ এ বিষয়ে আলোচনার জায়গা নয় বলে তিনি সেখানে ওই প্রশ্নের জবাব না দেওয়ার কারণটিও ব্যাখ্যা করেছেন।
স্মৃতিসৌধের অনাকাঙ্খিত ঘটনার দিনেই কয়েক ঘন্টার মধ্যেই বক্তব্য এসেছে খামোশ বলে দেশবাসীকে খামোশ রাখা যাবে না। এই বক্তব্যে কি রাজনীতির বিষয়টি স্পষ্ট হয় না?  যে দুই কিম্বা তিনজন সাংবাদিক ডঃ কামালকে একই প্রশ্ন নিকরে বিব্রত করার চেষ্টা করেছেন তিনি তাঁদেরকে খামোশ হতে বলেছেন, অন্য কেউ তাঁর বক্তব্যের লক্ষ্য ছিলোনা। ক্ষমতাধর রাজনীতিবিদ কিম্বা ক্ষমতাহীন কোনো সাধারণ মানুষ, বয়স্ক কিম্বা শিশু, উচ্চশিক্ষিত অথবা অশিক্ষিত যে কাউকে উপুর্য্যপুরি উত্যক্ত করা হলে তিনি উত্যক্তকারীকে খামোশঅর্থাৎ চুপ করতে বলবেন না এরকম মানবসন্তান বিরল তাতে সন্দেহ নেই। 

জামায়াতের সঙ্গে রাজনৈতিক সখ্যের প্রশ্ন একটি যৌক্তিক এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, সন্দেহ নেই। কিন্তু জামায়াতকে নির্বাচন কমিশন নিবন্ধন না দেওয়ার পরও দলটি যে সক্রিয় আছে, তার দায় তো সবার আগে সরকারের। দশম সংসদে তো ক্ষমতাসীন জোটের বাইরে আর কেউই ছিল না। তাহলে ওই দলটিকে তারা কেন নিষিদ্ধ করেনি—এ প্রশ্নটি কজন মন্ত্রীকে বা ক্ষমতাসীন দলের নেতাকে সাংবাদিকেরা করেছেন? একবার উত্তর না পেলে দ্বিতীয়বার করেছেন? তৃতীয়বার করেছেন? বারবার করেছেন? উত্তরটা আমাদের সবার জানা। ক্ষমতাধরদের কাছ থেকে জবাবদিহি আদায় করার সামর্থ্য বা নৈতিক অবস্থান গণমাধ্যমের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশই হারিয়ে ফেলেছে। জামায়াতিদের দলে আশ্রয় দেওয়া কিংবা হেফাজতের সঙ্গে সমঝোতা, এমনকি মুক্তিযুদ্ধের সময়ে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর হয়ে যুদ্ধ করা ব্যক্তির নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করার বিষয়ে ক্ষমতাসীনদের ব্যাখ্যা আদায়ে সেই অদম্য স্পৃহার ঘাটতিটা কিন্তু বড়ই প্রকট।
‘খামোশ’ শব্দের ব্যবহার নিয়ে যাঁরা সোচ্চার হয়েছেন, তাঁরা কি মাত্র ৪৮ ঘণ্টা আগে কোনো কারণ না দেখিয়েই ৫৪টি অনলাইন পোর্টাল বন্ধ করার প্রতিবাদে কোনো কর্মসূচি পালন করেছেন? এসব পোর্টাল বন্ধ হওয়ায় বুঝি কোনো সাংবাদিকের মতপ্রকাশের পথ বন্ধ হয়নি, স্বাধীনতা খর্ব হয়নি? শনিবার রাতে ঢাকা ও ঝিনাইদহে সাংবাদিকদের ওপর হামলার খবরে কি একই প্রতিক্রিয়া আছে? ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের হুমকির বিরুদ্ধে তাঁরা কতটা সোচ্চার? মাস চারেক আগে রাষ্ট্রের মেরামত চেয়ে যে ছাত্ররা আন্দোলন করেছিল, তাদের ওপর হামলার খবর সংগ্রহের সময় হেলমেট বাহিনী যেসব সাংবাদিকের ওপর হামলা চালিয়েছিল, সেই হামলাকারীদের পরিচয় প্রকাশের পরও যে কোনো বিচার হয়নি, তার প্রতিবাদ বন্ধ হয়েছে কেন?
ড. কামালের প্রতি ক্ষমতাসীন দলের রাজনৈতিক বৈরিতাকে যাঁরা শুধু বর্তমান রাজনৈতিক পটভূমির পরিসরে বিবেচনা করছেন, তাঁরা হয় ইচ্ছাকৃতভাবে, নয়তো অজ্ঞতাপ্রসূত হয়ে ইতিহাস বিস্মৃত হচ্ছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে তাঁর পাকিস্তানের বন্দিজীবনকে নিয়ে নানা ধরনের কাহিনির অবতারণা করে কেউ কেউ তাঁর মধ্যে কথিত পাকিস্তানপ্রীতির কথা প্রচার করছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাঁর রাজনৈতিক বিরোধ এবং তা কোন পর্যায়ের তিক্ততায় রূপ নিয়েছিল, সেই ইতিহাস তাঁরা আড়াল করছেন। অথচ ওই ইতিহাসেই সাক্ষ্য মেলে যে ড. কামালের প্রতি তাঁর ছেড়ে আসা দলটির বৈরিতা কখনোই কমেনি। ১৯৯১ সালের নির্বাচনের পর দলের লোকজন তাঁকে দৈহিকভাবে লাঞ্ছিত করার চেষ্টা করেছিলেন। আর ক্ষমতায় ফিরে আসার প্রথম মেয়াদের শেষ দিকে বস্তিবাসীদের পক্ষে আইনি সহায়তা দেওয়ার কারণে তাঁর বাড়ির সামনে বাস্তুহারা লীগের লোকজন পাঠিয়ে অস্থায়ী বস্তি বসানো হয়েছিল, তাঁর বাড়ির মূল ফটকে মানুষের বিষ্ঠা ঢেলে দেওয়া হয়েছিল। তাঁর ব্যক্তিগত জীবন, কন্যা ও তাঁর স্বামীর ব্যক্তিগত জীবন, ধর্মবিশ্বাস এবং পেশা নিয়ে বারবার কটাক্ষ করা হয়েছে। সুতরাং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লক্ষ্য নিয়ে একটি বৃহত্তর ঐক্য গঠনের সাফল্য যে তাঁর প্রতি বৈরিতা আরও বাড়াবে, সেটা অজানা কিছু নয়। কিন্তু সেই রাজনৈতিক বৈরিতায় সাংবাদিকদের একটি অংশও যে শরিক হবে, সেটা প্রত্যাশিত নয়।
নির্বাচনের সময় গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের কাছে সাধারণ মানুষের কিছু স্বাভাবিক প্রত্যাশা থাকে। তাঁরা আশা করেন বস্তুনিষ্ঠতা, পক্ষপাতমুক্ত খবর এবং ভারসাম্যপূর্ণ বিচার-বিশ্লেষণ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রসার যখন তুঙ্গে, তখন খবরের উৎস হিসেবে সংবাদমাধ্যমের একচেটিয়া প্রভাব বা মনোপলির অবসান ঘটেছে। সুতরাং বস্তুনিষ্ঠতা ও নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে না পারলে সেই ব্যর্থতা পাঠক-দর্শক-শ্রোতার কাছে ধরা পড়তে খুব একটা দেরি হয় না। এখানে একটা প্রাসঙ্গিক উদাহরণ টানা যায়। বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে কয়েকজন সাংবাদিকের প্রতি ড. কামালের কথিত বিতর্কিত আচরণের বিষয়ে দেশের একটি টিভি চ্যানেল তার ফেসবুক পেজে জনমত জরিপের জন্য একটি প্রশ্ন দেয়। সন্ধ্যা সাতটার আগে দেখা যায় যে ৩০ হাজারের বেশি ফেসবুক ব্যবহারকারী তাতে ভোট দিয়েছেন এবং তাঁদের ৮১ শতাংশ ড. কামালকে সমর্থন করেছেন। কিন্তু সন্ধ্যা সাতটায় সংবাদে প্রচারিত ফলাফলে দেখানো হয়েছে ড. কামালের বিরুদ্ধে মত দিয়েছেন ৫৬ শতাংশ আর পক্ষে ৪৪ শতাংশ। ফেসবুক ব্যবহারকারীরা অনেকেই ঘণ্টায় ঘণ্টায় ওই জনমত জরিপের স্ক্রিনশট রেখে দেওয়ায় টিভি চ্যানেলটির বিরুদ্ধে এখন তাঁরা প্রমাণসহ জালিয়াতির অভিযোগ তুলেছেন।
এ ঘটনায় গণমাধ্যমের জন্য অন্তত দুটো বিষয়ে আত্মজিজ্ঞাসা প্রয়োজন। প্রথমত, সাংবাদিকতায় আমরা কী ভুল করছি যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও যৌক্তিক প্রশ্ন তোলার অধিকারকেও জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশ সঠিক মনে করছে না। এর কারণ কি দলীয় পক্ষপাত? নাকি স্থান-কাল-পাত্রের ভেদাভেদ বিচারের অক্ষমতা? সামগ্রিকভাবে গণমাধ্যম কি তার বিশ্বাসযোগ্যতা হারাচ্ছে? দ্বিতীয় প্রশ্ন হচ্ছে, নিজেদের প্রচার-প্রসারের প্রয়োজনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে ব্যবহার করতে গিয়ে অসাধুতার আশ্রয় নিলে তার পরিণতিতে মূলধারার গণমাধ্যম কি নিজেদেরই সর্বনাশ ডেকে আনছে না?
নির্বাচনের মৌসুম হচ্ছে রাজনীতিকদের স্বপ্ন দেখানোর সময়। সুতরাং নানা ধরনের প্রতিশ্রুতি, যা হয়তো একেবারেই অবাস্তব অথবা অতীতের রেকর্ডের সঙ্গে মেলে না—এ রকম অনেক কিছুই নির্বাচনের সময়ে শোনা যায়। সেগুলো অসত্য হলেও কি আমরা গণমাধ্যমে প্রকাশ করব? সৎ সাংবাদিকতার নীতিতে তা হওয়ার কথা নয়। যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক নির্বাচনী প্রচারের একটি নজির এখানে খুবই প্রাসঙ্গিক। কংগ্রেস নির্বাচনের সপ্তাহখানেক আগে গত ৩০ অক্টোবর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বললেন যে তিনি বিদেশিদের জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব লাভের সুবিধা বাতিল করবেন। অভিবাসনবিরোধী ভোটের জন্য এটি একটি বড় রাজনৈতিক অঙ্গীকার। বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) প্রেসিডেন্টের বক্তব্য হিসেবে যথারীতি তা গুরুত্বের সঙ্গে প্রচার করল। কিন্তু আধা ঘণ্টার কম সময়ের মধ্যে তারা তা প্রত্যাহার করে নিয়ে টুইটে ঘোষণা করল প্রেসিডেন্টের এই দাবি সঠিক নয় বলে তারা সংবাদটি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের যে অধিকার দেওয়া আছে, তা বাতিলের ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের নেই। মিথ্যা অঙ্গীকার প্রচার সৎ সাংবাদিকতার পরিপন্থী বিবেচনায় তারা এই সিদ্ধান্ত নেয়।
বাংলাদেশে সাংবাদিকতা যেসব প্রতিকূলতার মুখোমুখি হচ্ছে, তাতে এমন নীতিনিষ্ঠ হওয়া কবে সম্ভব হবে, বলা মুশকিল। 
( ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৮‘র প্রথম আলো পত্রিকায় কিছুটা সংক্ষেপিত রুপে প্রকাশিত নিবন্ধ।)

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ঘৃণা চাষের উর্বর ভূমি ও রাজনৈতিক সংকট

  দেশে একের পর এক অস্থিরতা সৃষ্টির বেশ কয়েকটি ঘটনা আমরা প্রত্যক্ষ করলাম। এগুলোর কোনোটিই প্রত্যাশিত ছিল না। অনেকেই এগুলো নির্বাচন যাতে প্রধান উপদেষ্টার প্রতিশ্রুত সময়ে না হয়, তার জন্য পরিস্থিতি ঘোলাটে করার অপচেষ্টা হিসাবে বর্ণনা করেছেন। পরিকল্পিতভাবে অস্থিরতা সৃষ্টির পিছনে প্রধানত: দুটি শক্তিকে দায়ী করা হচ্ছে – একটি হচ্ছে পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের পলাতক নেতৃত্বের সাংগঠনিক উদ্যোগ; অপরটি হচ্ছে, বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার (সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম) সুবাদে সমাজে প্রভাব বিস্তারে দক্ষতা অর্জনকারী কিছু প্রভাবক ব্যক্তি বা গোষ্ঠী। এসব প্লাটফর্ম বিদ্বেষ ও ঘৃণা ছড়ানোর সবচেয়ে কার্যকর হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে।  আপনি যদি কাউকে অপদস্থ বা হেয় করতে চান, তাহলে তার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত স্থান সম্ভবত:  সোশ্যাল মিডিয়ার কোনো একটি প্লাটফর্ম – বাংলাদেশে এটি ফেসবুক এবং ইউটিউব। বৈশ্বিক পরিসরে অবশ্য এক্স (সাবেক টুইটার) এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে আছে। প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে গণহত্যার শিকার সংখ্যালঘু মুসলিম জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে জাতিগত বিদ্বেষ ছড়ানোয় এই সোশ্যাল মিডিয়া কী ভূমিকা রেখেছে, তা জাতিসংঘ তদন্...

How to Describe the Awami League Accurately?

In an article titled ‘How Not to Describe the Awami League’ , published in this paper, British journalist David Bergman rightly underscores the importance of accuracy in labeling a political party—particularly when such labels carry potential legal consequences. Those familiar with Bergman’s work over the years know that he has consistently taken on politically sensitive and controversial subjects, often at significant personal and professional cost. His courage and commitment to journalistic integrity deserve recognition. Bergman is correct in asserting that “while serious criticisms of the Awami League are both valid and necessary, they must be proportionate and grounded in fact.” His analysis focuses primarily on the legal validity and appropriateness of labeling the Awami League as “fascist” or “Nazi.” He argues that comparing the party to the Nazi regime trivialises the scale of Nazi atrocities and misrepresents the complexities of Bangladeshi politics. Indeed, any historical comp...

ভারতে ’বাংলাদেশি ভাষা’ বিতর্ক, পুশ–ইন ও প্রতিক্রিয়া

  দিল্লি পুলিশ একটি চিঠিতে বাংলা ভাষাকে 'বাংলাদেশি ভাষা' হিসেবে উল্লেখ করায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায় 'বাংলা ভাষাকে বাংলাদেশি ভাষা বলা কলঙ্কজনক, অপমানকর, দেশবিরোধী এবং অসাংবিধানিক কাজ। এটি ভারতের সব বাংলাভাষী মানুষকে অপমান করে। তারা আমাদেরকে হেয় করে (চিঠিতে) এমন ভাষা ব্যবহার করতে পারে না।'  দিল্লির পুলিশ যে চিঠিতে বাংলাকে বাংলাদেশি ভাষা বলেছে, সেটি বাংলাভাষী কয়েকজনকে জোর করে বাংলাদেশে পাঠানোর উদ্দেশ্যে একটি এফআইআর তদন্তের নথি অনুবাদ সম্পর্কিত। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের দিল্লিতে যে পান্থশালা আছে, সেখানকার কর্মকর্তাদের সাহায্য চাইতেই ওই চিঠি। চিঠিটি জুলাইয়ের ২৯ তারিখের। কিন্তু তার মাসখানেকের আগে থেকে মমতা বন্দোপাধ্যায় বাংলাভাষী ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশি তকমা দিয়ে জোর করে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন।  দিল্লিতে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার পশ্চিম বঙ্গ ও আসামের রাজ্য বিধানসভার আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে সংখ্যালঘু মুসলমান বাংলাভাষীদের অবৈধ অভিবাসী হিসাবে চিহ্নিত করে যে জোরপূর্বক ঠেলে দেওয়ার কাজ শুরু কর...