সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

নির্বাচনে ভীতি সৃষ্টির চেষ্টা কেন

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রধান, দেশের অশীতিপর রাজনীতিকদের অন্যতম, ড. কামাল হোসেনের ওপর হামলার পর বিরোধী দলের জাতীয় নেতাদের মধ্যে আর কেউ কি হেনস্তা হতে বাকি থাকলেন? বিএনপির নেতা মির্জা ফখরুল, মওদুদ আহমদ, মঈন খান, মেজর হাফিজ, জাসদ নেতা আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের আবু সাইয়িদ প্রমুখের ওপর একের পর এক হামলার ঘটনায় এ ধরনের আশঙ্কাই তৈরি হচ্ছিল।
প্রার্থী বাছাই ও প্রতীক বরাদ্দের পর্ব শেষে প্রচারের পালার শুরুতেই দেশের সব প্রান্ত থেকে হাঙ্গামার খবর আসতে শুরু করে। এসব হামলার খবরে ধারণা হচ্ছিল যে ক্ষমতাসীন দল হয়তো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের কাউকে মাঠে নামতে না দেওয়ার একটা কৌশল নিচ্ছে। কিন্তু, ড. কামাল প্রার্থী নন। বয়সের ভার এবং শারীরিক সামর্থ্যের সীমাবদ্ধতার কারণে তাঁর পক্ষে সারা দেশে প্রচারাভিযানে অংশ নেওয়াও যে সম্ভব নয়, সে কথাও সবারই জানা। অথচ, তাঁর সীমিত রাজনৈতিক কার্যক্রমেও বাধা দেওয়া হয়েছে। যেখানে তাঁর ওপর হামলা হয়েছে, সেটি কোনো নির্বাচনী কার্যক্রম ছিল না, ছিল শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের আনুষ্ঠানিকতা। দেশের সব বিধিবদ্ধ রাজনৈতিক দল যেসব জাতীয় দিবস আনুষ্ঠানিকভাবে পালন করে থাকে, সে রকম একটি নিয়মিত রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার পরিবেশকেও কলুষিত করা হয়েছে। তবে, স্পষ্টতই এই হামলার উদ্দেশ্য হচ্ছে ঐক্যজোটের নির্বাচনী কার্যক্রমকে নিরুৎসাহিত করা।
নির্বাচনী প্রচারকাজ শুরু হওয়ার চার দিনের মধ্যেই দেশের অর্ধেকের বেশি জেলায় সহিংসতা হয়েছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে প্রথম দিনেই প্রাণহানি ঘটেছে দুজনের। তবে, প্রাণহানির শিকার দুজন ক্ষমতাসীন দলের সদস্য হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সহিংসতার লক্ষ্য হচ্ছে বিরোধী দল। এসব হামলার পাশাপাশি বিস্ময়করভাবে বাড়ছে হুমকি ও উসকানির ঘটনা। বরিশাল, কুষ্টিয়া, সুনামগঞ্জের দিরাই, ঝিনাইদহ ও কুমিল্লায় আওয়ামী লীগের নেতাদের বক্তৃতার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাওয়া যাচ্ছে। পত্রিকায় প্রকাশিত খবরেও এসব হুমকির বিবরণ ছাপা হয়েছে। ইত্তেফাক–এ পরিকল্পনামন্ত্রীর বক্তব্য ছাপা হয়েছে, যাতে তিনি বলেছেন, ২৭ তারিখের পর তাঁর এলাকায় বিরোধীদের কাউকে থাকতে দেওয়া হবে না। অন্য ভিডিওগুলোর একটিতে ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের প্রকাশ্যে ভোট দিতে বাধ্য করার নির্দেশনা দিতেও দেখা গেছে।
এসব হামলা এবং হুমকি দেশে একটা ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরির ইঙ্গিত দেয়। বিরোধীদের ওপর হামলা অব্যাহত থাকলে তারা যদি আত্মরক্ষার জন্যও তা প্রতিরোধের চেষ্টা করে, তাহলে যে রক্তপাত বাড়বে, তাতে সন্দেহ নেই। সম্ভবত এসব হামলার উদ্দেশ্য সেই উসকানি সৃষ্টি করা। উসকানিতে পা দিলে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও তাঁর সমর্থকদের বিরুদ্ধে নতুন করে মামলা দেওয়া এবং ধরপাকড় করা সহজ হয়ে যায়। আর, বিরোধীরা যদি ভয় পেয়ে মাঠ ছেড়ে যায়, তাহলে খেলায় ওয়াকওভার পাওয়ার মতো নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঝামেলা চুকে যায়। তবে, এসব পুরোনো কৌশলের অনুশীলন যে নির্বাচনকে ক্রমশই প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলছে, সেটি সরকার এবং নির্বাচন কমিশন আর কবে উপলব্ধি করবে?
প্রধান নির্বাচন কমিশনার দুজনের প্রাণহানির ঘটনায় কমিশনের বিব্রতবোধ করার কথা জানিয়ে সবার প্রতি নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু, প্রতিদ্বন্দ্বী এবং তাঁদের সমর্থকদের আচরণবিধি মানানোর আগে যে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ন্যায়নিষ্ঠ এবং আইনসম্মত আচরণ নিশ্চিত করা প্রয়োজন ছিল, সে কথা সম্ভবত তিনি ভুলে গেছেন। তা না হলে পুলিশ এখন কার কথায় চলছে? ‘বড় নির্বাচনে ছোট সহিংসতা হতেই পারে’ (ইত্তেফাক, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮) বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যে তো এ ধরনের হামলাগুলোকে প্রশ্রয় দেওয়ার আলামত মেলে। স্মরণ করা যেতে পারে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নিজের এলাকাতেই বাম জোটের প্রার্থী পরপর দ্বিতীয় দিনের মতো হামলার শিকার হয়েছেন।
প্রতিদিনই খবর বেরোচ্ছে, বিরোধী প্রার্থীরা নিজেদের নির্বাচনী এলাকায় যাওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে নিরাপত্তা চাইছেন। নিজেদের এলাকায় রিটার্নিং কর্মকর্তা ও পুলিশের কাছ থেকে যথেষ্ট সহায়তা না পাওয়ায় তাঁদের ঢাকার আগারগাঁওয়ে কমিশনের কার্যালয়ে ধরনা দিতে হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জে এসপি বদলের পরও সোনারগাঁ উপজেলার আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় ঢুকে প্রার্থীর ওপর হামলা পুলিশের ভূমিকা সম্পর্কে কী বার্তা দেয়?
নির্বাচন নিয়ে বিরোধীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ানোর কৌশলে শুধু যে ক্ষমতাসীনদের প্রতিদ্বন্দ্বীরাই ভয় পাচ্ছেন তা নয়। এই ভয় সমাজের অন্যান্য অংশেও ছড়িয়ে পড়ছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই একধরনের ভীতির কথা বলা হচ্ছে। আর, একটু ভিন্ন পটভূমিতে পার্বত্য চট্টগ্রামেও আতঙ্কের পরিবেশের কথা বলেছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল।
বিরোধীদের নির্বাচনী প্রচারে বাধাদান এবং হামলা-সহিংসতার পাশাপাশি কিছু বক্তব্যও দেশে নির্বাচন-ভীতি তৈরি ও ছড়ানোয় ভূমিকা রাখছে। এসব বক্তব্যের একটি হচ্ছে নির্বাচন ঘিরে ষড়যন্ত্রের আশঙ্কা। প্রথমে এই ষড়যন্ত্রের কথা বলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিশ্চিত পরাজয় জেনে বিএনপি নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে। (নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে বিএনপি: ওবায়দুল কাদের, ইত্তেফাক, ৫ ডিসেম্বর ২০১৮)। আর, তাঁর মন্তব্যের সপ্তাহখানেকের মাথায় বৃহস্পতিবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার ২০১৪–এর একতরফা নির্বাচনের সময় সংঘটিত সহিংসতার রেশ টেনে নির্বাচন নিয়ে তৃতীয় কোনো শক্তির ষড়যন্ত্র আছে কি না, তা খতিয়ে দেখার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তাগিদ দিয়েছেন। নির্বাচন নিয়ে অপশক্তির ষড়যন্ত্রের প্রমাণ থাকলে কমিশনের দায়িত্ব হচ্ছে তা নস্যাৎ করা, তা নিয়ে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করা নয়। অথচ, তারা সেটাই করছে।
সারা দেশে ভোটকে কেন্দ্র করে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরির পেছনে মূল কারণ সম্ভবত সরকারের মধ্যে অস্থিরতা। দীর্ঘ সময় ধরে কোণঠাসা হয়ে থাকা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ, বিএনপি, অপ্রত্যাশিতভাবে বৃহত্তর জোট গঠনের মাধ্যমে নবপ্রাণ ফিরে পাওয়ায় ক্ষমতাসীন দল কিছুটা অপ্রস্তুত বোধ করছে। ভীতিও তৈরি হয়েছে। যার আলামত হচ্ছে অস্থিরতাপূর্ণ ও অসংযত আচরণ। ভোট নিয়ে জনমনে ভীতি ছড়ালে নিঃসন্দেহে লাভবান হবে ক্ষমতাসীন দল। কেননা, তাতে ভোটাররা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভোটকেন্দ্রে যাবেন না। নির্বাচনটি হবে খুলনা বা সিটি করপোরেশন মডেলের নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন। যে দলটি দেশ-বিদেশের নানা জরিপ উদ্ধৃত করে তাদের পক্ষে জনজোয়ারের কথা বলছে, সেই দলের আচরণে নিরাপত্তাহীনতার বহিঃপ্রকাশ ঘটবে কেন, তার কোনো জবাব আমাদের কাছে নেই।
নির্বাচন কমিশন যে গ্রহণযোগ্য, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের অঙ্গীকার করেছে, তা পূরণ করতে তাদের যে দৃঢ়তা ও আন্তরিক ভূমিকার প্রয়োজন ছিল, সেটি পালনে তাদের দুঃখজনক ব্যর্থতা অত্যন্ত হতাশাজনক। মনে হচ্ছে তারা সরকারের কাছে আত্মসমর্পণ করে বসে আছে। তাদের এই অক্ষমতা অথবা নিষ্ক্রিয়তার পরিণতি দেশের জন্য মোটেও সুখকর হবে না।  
(১৫ ডিসেম্বর, ২০১৮‘র প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত লেখকের নিবন্ধ ।)

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে স্বৈরশাসকের ফেরা সহজ

  গণতন্ত্রে উত্তরণে ব্যর্থতা ও স্বৈরতন্ত্রের নিকৃষ্টতম রুপ প্রত্যক্ষ করার পর অর্ন্তবর্তী সরকারের মেয়াদকালে যে সব বিষয়ে সংস্কারের আলোপ চলছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থা। এরশাদের সামরিক স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনকে গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যম হিসাবে যেভাবে প্রতিষ্ঠার কথা ছিল, তা থেকে প্রধান দুই দলই বিচ্যূত হয়েছিল। পরিণতিতে নির্বাচন শুধু ক্ষমতা দখলের হিংসাত্মক খেলায় পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নির্বাচনকে নানা রকম প্রহসনে পরিণত করে।  এই সমস্যার এক অতি সরলীকৃত সমাধান হিসাবে বলা হচ্ছে, দ্বিদলীয় রাজনীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে দেশে সত্যিকার বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনব্যবস্থায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ধারণাকে একমাত্র বা চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে।  সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনে একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে তারা সংসদের আসন পাবে। এ আনুপাতিক পদ্ধতিতে প্রার্থীদের নাম দল আগাম ঘোষণা করতেও পারে, আবার না–ও পারে। নাম প্রকাশ করা হলে সেটা হব...

অরাজনৈতিক আন্দোলনের করুণ রাজনৈতিক মূল্য

কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ ছাত্র–ছাত্রীদের আন্দোলনে  কদিন ধরে যা ঘটে চলেছে, তা যেমন বেদনাদায়ক, তেমনই নিন্দনীয় ও ক্ষোভের কারণ। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিতে ক্ষমতাসীন সরকারের সমর্থক এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর হাতে একইদিনে দেশের তিন জায়গায় ছয়জনের প্রাণহানির ঘটনা স্বাধীন বাংলাদেশে বিরল।  এবার আরও যেসব ঘটনা আমাদের স্তম্ভিত করেছে, অভিভাবকদের চোখ অশ্রুসিক্ত করেছে, এসব মৃত্যুর পরও সরকারের রাজনৈতিক দম্ভ বজায় রাখার চেষ্টা, যা আরও প্রাণহানির কারণ হয়েছে। ছয়জন তরুণের প্রাণ বিসর্জনের পরও কোটা সংস্কারের দাবিতে সরকার ”নীতিগতভাবে একমত” – একথাটি বলে  আলোচনায় না ডেকে সময়ক্ষেপণ করেছে। আইনমন্ত্রী কথাটি যখন বললেন, তার আগেই আরও জীবন গেল, শত শত মানুষ আহত হলো, দেশের সম্পদ নষ্ট হলো। রাজনৈতিক গরিমা ছাড়া এর আর কোনো কারণ আছে কি? ছাত্রলীগ পরিচয়ে অন্ত্রধারীদের তান্ডব, পুলিশের চরম নিষ্ঠুরতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের গড়পরতা মারধর ও লাঞ্চিত করার যে দৃশ্যগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে, তা কোনো অভিভাবকের পক্ষেই ভোলা সম্ভব নয়। এসব ঘটনার বিবরণ উদ্ধৃত না করে শুধু নিষ্ঠুর ...

সংবিধান সংস্কারে জাতীয় সমঝোতা কি অসম্ভব কিছু

সংবিধান সংস্কার কমিশন সংবিধান নিয়ে যে জনমত সংগ্রহ ও জাতীয়ভিত্তিক সংলাপগুলো করছে, তাতে বেশ ভালোই সাড়া মিলছে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন নাগরিক গোষ্ঠী, রাজনৈতিক দল, বিদ্বজ্জনেরা কেমন সংবিধান দেখতে চান, তা নিয়ে বিতর্ক ও মতবিনিময় করছেন। দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যত নির্ধারণের মৌলিক ভিত্তি তথা রাষ্ট্রকাঠামো ও ক্ষমতার বিন্যাস সম্পর্কে নাগরিকদের এতটা উৎসাহ সম্ভবত: এর আগে আর দেখা যায়নি। সংস্কার কমিশনের সূত্র থেকে জেনেছি, অনলাইনে তাঁরা অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছেন এবং মতামত দেওয়ার জন্য সপ্তাহখানেক সময় বাকি থাকতেই ৩০ হাজারেরও বেশি পরামর্শ তাঁদের কাছে জমা পড়েছে। নাগরিকদের এ আগ্রহ থেকে যে বার্তাটি স্পষ্ট হয়, তা হচ্ছে তাঁরা চান তাঁদের মতামত যেন গুরুত্ব পায়। দীর্ঘ ১৫ বছরের স্বৈরশাসনে ক্ষমতাধরদের কিছু বলার বা তাঁদের প্রশ্ন করার কোনো অধিকার সাধারণ মানুষের ছিল না। প্রতি পাঁচ বছরে একবার ভোটের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচনের যে অধিকার, সেটুকুও তাঁরা হারিয়েছিলেন। এই পটভূমিতে নাগরিকদের প্রথম চাওয়া হচ্ছে, তাঁদের হারানো অধিকার ফিরে পাওয়া। ভোট দেওয়ার অধিকার, কথা বলার অধিকার, প্রশ্ন করার অধিকার, সংগঠন করার...